মার্কিন নির্বাচনে ঐতিহ্যগতভাবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভোটারদের ভোট পান ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভোটারদের ভোটার পাচ্ছেন না—অন্তত জরিপে এই চিত্রই দেখা যাচ্ছে। কমলা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রথম একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে যেখানে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ।
কিন্তু কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের এক জরিপে উঠে এসেছে, ২০২০ সালে জো বাইডেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের যে পরিমাণ ভোট পেয়েছেন কমলার এর চেয়ে কম পাবেন। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ৬৫ শতাংশ ভারতীয় বংশোদ্ভূত জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার ৬১ ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা ভোট দেওয়ার কথা বলছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে কম নয়। ৫২ লাখের বেশি তাঁরা। মেক্সিকো বংশোদ্ভূত মার্কিনির পরই তারাই সবচেয়ে বেশি। তাঁদেরই একজন অর্জুন শেটি। পেশায় আইনজীবী এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলেন, ‘একজন সন্তান নেবেন কি না সেই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা যেমন সচেতন, তেমনি দক্ষিণ এশীয় নারীরাও সচেতন। তাই নারীদের সমর্থন কমলা হ্যারিস পাচ্ছেন। তবে ছেলেদের ক্ষেত্রে পার্থক্য তৈরি হচ্ছে ভিন্ন জায়গায়। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানরত দক্ষিণ এশীয় পুরুষেরা চান, সীমান্ত নীতি আরও কঠোর হোক এবং কর বিষয়ক বিভিন্ন বিধিও সংশোধন হোক। আর এটা ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে যায়।’
কমলাকে বেছে না নেওয়ার আরেকটি কারণ হলো তাঁকে আফ্রিকান আমেরিকান হিসেবে বিবেচনা করা। তিনিও নিজেকে এই হিসেবেই তুলে ধরেছেন। ফলে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা তাঁকে তাকে ততটা আপন ভাবতে পারছেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ভারতীয়দের সমর্থন টানতে চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দুদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দিওয়ালি উপলক্ষেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
কমলার চেয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে এসব কারণে এগিয়ে ট্রাম্প। এর বাইরে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো গাজা যুদ্ধ। অনেকেই এই যুদ্ধের হতাহতের জন্য জো বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করেছে। আর এই প্রশাসনের অংশ কমলা। তিনি তাই ভারতীয়দের সমর্থন পাচ্ছেন না।
সূত্র: আলজাজিরা