শুক্রবার | ২৮ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo রাবিতে ইলা মিত্রকে নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির সঙ্গে তুরস্কের রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর Logo নোবিপ্রবিতে গবেষণা, বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের করণীয় শীর্ষক প্রশিক্ষণ Logo রাবি ময়মনসিংহ জেলা সমিতির নতুন কমিটি ঘোষণা Logo “কণিকা”সংগঠনের সচেতনতা সেমিনার ও কুইজ এমইএস কলেজে অনুষ্ঠিত Logo গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী Logo প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থায়ী মর্গ, জীর্ণ-ভবনে ময়নাতদন্ত Logo চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে তারুণ্যের আলো সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প Logo ফের ভূমিকম্প Logo কচুয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে ৩০টি প্রদর্শনী

যে গ্রামে ৪০ বছর ধরে বসেনি কোনো বিয়ের আসর !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১১:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭
  • ৭৯৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

দেশে পুত্রসন্তানের অনুপাতে কন্যাসন্তানের সংখ্যা যথাযথ রাখার জন্য সরকার আইন করে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বন্ধ করেছে বেশ কয়েক বছর আগেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও চোরাগোপ্তা গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ এবং কন্যাভ্রূণ হত্যা হয়েই চলেছে। এতে কন্যাভ্রূণ হত্যা এবং কন্যাসন্তানের প্রতি বিরূপ আচরণের পরিণাম যে কী মারাত্মক হতে পারে তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হিসেবে সম্প্রতি সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের গুমারা গ্রাম। এই গ্রামে চল্লিশ বছর পরে কোনো বিয়ের আসর বসছে ২০১৭-র ডিসেম্বরে।

গুমারা গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরেই মেয়েদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করে আসা হচ্ছে। মেয়ে বয়স্ক হলে তার বিয়ে দিতে হবে। আর বিয়ে মানেই মোটা অঙ্কের যৌতুক। সেই কারণে কন্যাসন্তানকে বোঝা বলেই মনে করে গ্রামের অধিকাংশ পরিবার। কোনো নারী গর্ভবতী হলেই আইন ভেঙে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করানো হয়।

যদি দেখা যায়, গর্ভের ভ্রূণ কন্যাসন্তানের, তা হলে হয় গর্ভেই তাকে মেরে ফেলা হয়, নতুবা জন্মের পরে তাকে হত্যা করা হয়। এটাই এই অঞ্চলের রীতি। ফলে এই নৃশংসতা নিয়ে কখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কেউ কোনো অভিযোগও জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি।

কন্যাসন্তানের জন্মের পরে তামাক ও দুধ দিয়ে তাকে হত্যা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে গ্রামে। এ ছাড়াও নানা অদ্ভুত কৌশলে কন্যাসন্তানদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলা হয়ে থাকে।

এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে গ্রামের এক মহিলা জানান, ‘আমি কুড়ি বছর আগে কন্যাসন্তানের জননী হয়েছিলাম। আমার সন্তানকে কেউ হত্যা করার সাহস দেখায়নি ঠিকই, কিন্তু পরিবারের লোকের চাপে আমি আমার বাচ্চাকে ঠিকমতো লালন-পালন করতে পারিনি। পরিণামে ক্ষুধার তাড়নায় মেয়েটি শৈশবেই মারা যায়। ’

দীর্ঘ চল্লিশ বছরে গ্রামের কোনো মেয়ে বিয়ের বয়সে পৌঁছায়নি। গ্রামের ছেলেরা পাত্রীর গ্রামে গিয়ে বিয়ে করেছে। ফলে প্রায় চল্লিশ বছর হয়ে গেল, গুমারায় বসেনি কোনো বিয়ের আসর। কিন্তু এ বার গ্রামের মেয়ে ১৮ বছর বয়সি আরতি গুজার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছে আগামী ডিসেম্বর মাসে। ওই সময়েই গ্রামের আর এক কন্যা, রচনা গুজারেরও বিয়ে স্থির হয়ে রয়েছে।

আরতির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এই বছরের মার্চ মাসেই। কিন্তু বোর্ডের পরীক্ষার কারণে সেই বিয়ে পিছিয়ে যায়। আরতির বিয়ে নিয়ে গ্রামের কচিকাঁচা এবং নারীরা রীতিমতো উত্তেজিত। এক দল প্রবীণ অবশ্য বিয়ে নিয়ে ততটা উৎসাহিত নন, যতটা এই বিয়ের খবর সংবাদমাধ্যমের চোখের আড়ালে রাখতে।

তাদের বক্তব্য, গ্রামের বদনাম করার লক্ষ্যেই তাদের গ্রামের ‘গুপ্ত’ খবর কেউ বা কারা সংবাদমাধ্যমের কানে তুলেছে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

রাবিতে ইলা মিত্রকে নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

যে গ্রামে ৪০ বছর ধরে বসেনি কোনো বিয়ের আসর !

আপডেট সময় : ১১:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

দেশে পুত্রসন্তানের অনুপাতে কন্যাসন্তানের সংখ্যা যথাযথ রাখার জন্য সরকার আইন করে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বন্ধ করেছে বেশ কয়েক বছর আগেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও চোরাগোপ্তা গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ এবং কন্যাভ্রূণ হত্যা হয়েই চলেছে। এতে কন্যাভ্রূণ হত্যা এবং কন্যাসন্তানের প্রতি বিরূপ আচরণের পরিণাম যে কী মারাত্মক হতে পারে তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হিসেবে সম্প্রতি সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের গুমারা গ্রাম। এই গ্রামে চল্লিশ বছর পরে কোনো বিয়ের আসর বসছে ২০১৭-র ডিসেম্বরে।

গুমারা গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরেই মেয়েদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করে আসা হচ্ছে। মেয়ে বয়স্ক হলে তার বিয়ে দিতে হবে। আর বিয়ে মানেই মোটা অঙ্কের যৌতুক। সেই কারণে কন্যাসন্তানকে বোঝা বলেই মনে করে গ্রামের অধিকাংশ পরিবার। কোনো নারী গর্ভবতী হলেই আইন ভেঙে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করানো হয়।

যদি দেখা যায়, গর্ভের ভ্রূণ কন্যাসন্তানের, তা হলে হয় গর্ভেই তাকে মেরে ফেলা হয়, নতুবা জন্মের পরে তাকে হত্যা করা হয়। এটাই এই অঞ্চলের রীতি। ফলে এই নৃশংসতা নিয়ে কখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কেউ কোনো অভিযোগও জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি।

কন্যাসন্তানের জন্মের পরে তামাক ও দুধ দিয়ে তাকে হত্যা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে গ্রামে। এ ছাড়াও নানা অদ্ভুত কৌশলে কন্যাসন্তানদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলা হয়ে থাকে।

এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে গ্রামের এক মহিলা জানান, ‘আমি কুড়ি বছর আগে কন্যাসন্তানের জননী হয়েছিলাম। আমার সন্তানকে কেউ হত্যা করার সাহস দেখায়নি ঠিকই, কিন্তু পরিবারের লোকের চাপে আমি আমার বাচ্চাকে ঠিকমতো লালন-পালন করতে পারিনি। পরিণামে ক্ষুধার তাড়নায় মেয়েটি শৈশবেই মারা যায়। ’

দীর্ঘ চল্লিশ বছরে গ্রামের কোনো মেয়ে বিয়ের বয়সে পৌঁছায়নি। গ্রামের ছেলেরা পাত্রীর গ্রামে গিয়ে বিয়ে করেছে। ফলে প্রায় চল্লিশ বছর হয়ে গেল, গুমারায় বসেনি কোনো বিয়ের আসর। কিন্তু এ বার গ্রামের মেয়ে ১৮ বছর বয়সি আরতি গুজার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছে আগামী ডিসেম্বর মাসে। ওই সময়েই গ্রামের আর এক কন্যা, রচনা গুজারেরও বিয়ে স্থির হয়ে রয়েছে।

আরতির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এই বছরের মার্চ মাসেই। কিন্তু বোর্ডের পরীক্ষার কারণে সেই বিয়ে পিছিয়ে যায়। আরতির বিয়ে নিয়ে গ্রামের কচিকাঁচা এবং নারীরা রীতিমতো উত্তেজিত। এক দল প্রবীণ অবশ্য বিয়ে নিয়ে ততটা উৎসাহিত নন, যতটা এই বিয়ের খবর সংবাদমাধ্যমের চোখের আড়ালে রাখতে।

তাদের বক্তব্য, গ্রামের বদনাম করার লক্ষ্যেই তাদের গ্রামের ‘গুপ্ত’ খবর কেউ বা কারা সংবাদমাধ্যমের কানে তুলেছে।