শিরোনাম :
Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিল Logo তালাকের ক্ষোভে জামাতার বিরুদ্ধে শাশুড়ির ধর্ষণ মামলা Logo জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫: কচুয়ায় শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া Logo ইবিতে জুলাই অভ্যুত্থান দিবসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা Logo সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ দুই চাঁদাবাজ আটক চুয়াডাঙ্গা শহরে Logo চুয়াডাঙ্গা জেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামে শহীদ মাসুদ এবং শহীদ শুভ উভয়ের কবরস্থানে পুষ্পমাল্য অর্পণ Logo অসুস্থ স্বামীকে বাঁচাতে সমাজের সহানুভূতি চান রানু বেগম Logo শহীদ মাহবুব আলমের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকীতে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও গুণীজন সম্মাননা অনুষ্ঠিত Logo আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা, আমি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামাব না : শামীমা ইয়াছমিন Logo বোমা হামলায় পৃথিবীতে যত লোক মারা যায় তারচেয়ে বেশি বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় -পঞ্চগড়ে তারিকুল ইসলাম

ঝিনাইদহে বিদ্যুত নেই, তালপাখায় আগুন !

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৮:৫০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০১৭
  • ৭৪২ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ  তোমার হাত পাখার বাতাসে প্রান জুড়িয়ে আসে আকবরের সেই বিখ্যাত গানটির কথা হয়ত সবার মনে আছে। ঝিনাইদহ জেলায় অসহনীয় লোডশেডিং এ গরমে মানুষের কাছে এখন তালপাতার হাতপাখা পরম সঙ্গী হিসাবে ধরা দিয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের জনজীবন গত তিন চার মাস যাবত ভয়াবহ লোডশেডিং এ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচেছ এ জেলায় ,গরমের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ এখন তালপাখা কিনতে ব্যাস্ত,ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলার প্রতিটি হাটের ফুটপাতে গিয়ে দেখা যায় এই তাল পাখার দোকানের পাশে উপচে পড়া ভিড়, ২০ টাকার হাতপাখা বিক্রি হচেছ ৩০ টাকা দরে। বিক্রেতা সানোয়ার হোসেন দিলু  জানান, এই তালপাখার বিক্রি এবার অনান্য বছরের তুললায় অনেক ভাল কারণ বিদ্যুৎ ঠিক মত না থাকার কারণে চাজার ফ্যানে গুলো একেবারে গরমে কাজে আসছে না, তাই মানুষ এই তালপাখার উপর ঝুকে পড়েছে।

ফুটপাতের আরেক বিক্রেতা আনন্দ দাস বলেন , আমার বাড়ি কালিগঞ্জ, আমি নিজে তালপাখা বানায়ে বিক্রি করি,বছরে ২/৩ মাস তাল পাখার বেশি চাহিদা থাকে। চৈত্র থেকে শুরু করে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যস্ত বিক্রির মৌসুম হলেও চৈত্র ও বৈশাখ মাসই পাখা বিক্রির উপযুক্ত সময়। প্রচন্ড তাপদাহ ও বিদ্যুতের লোডশেডিং এ সময়টাতে তালপাখার প্রয়োজন বেশি হয়ে থাকে। ফলে এ সময় আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বছরের অন্যান্য মাসে তালপাখার তৈরির কাজ ও বিক্রি চললেও শীত আসলে বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর তাল পাখা অন্য বছরের চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ।তিনি আরও জানান, পরিবারের ছোটরাও পড়াশোনার পাশাপাশি বাবা-মায়েদের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে।

গত বছর গুলোর চেয়ে এ বছর একটি পাখাতে দাম বেড়েছে প্রায় ৫টাকা। কিন্তু লাভ হচ্ছে কম। কারণ প্রতিটি জিনিসেরই দাম বেশি।তিনি আরও জানান, প্রতিটি পাখায় তৈরি পর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা খরচ হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১২ থেকে ১৫ টাকা টাকা। অবশ্য পাইকার ব্যবসায়ীরা উপরোক্ত দামে পাখাগুলি তাদের কাছ থেকে নিয়ে যায়। তারা একটি পাখা ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করে। অবশ্য খুব গরমে হাত পাখার চাহিদা বেশি হওয়ায় একটি পাখা তারা ২৫ থেকে ৩০ টাকায়ও বিক্রি হয়।

তিনি আরও পাখা তৈরি করতে রং,সুতা, বাঁশ, কুঞ্চি, তালের পাতার প্রয়োজন হয়। একটি তালের পাতা ৫ টাকা দরে তারা কিনে থাকেন। আর যারা পাখা সেলাইয়ের কাজ করেন তারা পাখা প্রতি ১ টাকা করে পান। যারা ১০০ জাড়াসোলার কাজ করে তারা ১০ টাকা পান। সব মিলিয়ে একটি পাখা তৈরি করতে ৮ টাকার বেশি খরচ হয়। বিক্রি করা হয় ১০ থেকে ১২ টাকায়। একজন কারিগর প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি তালপাখা তৈরি করতে পারেন। ফলে প্রতিটি কারিগর বিক্রির মৌসুমে দিনে যাবতীয় খরচ বাদে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করতে পারেন। পাইকাররা এখন বাড়ি থেকেই পাখা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানিয় জৈনিক ক্রেতা দিলু মিয়া বলেন, গরমে বিদ্যুতের যে অবস্থা তাতে জীবন বাঁচাতে হাত পাথার কোন বিকল্প নেই আমি চার টা পাখা কিনেছি ১০০ টাকা দিয়ে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিল

ঝিনাইদহে বিদ্যুত নেই, তালপাখায় আগুন !

আপডেট সময় : ০৯:৩৮:৫০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ  তোমার হাত পাখার বাতাসে প্রান জুড়িয়ে আসে আকবরের সেই বিখ্যাত গানটির কথা হয়ত সবার মনে আছে। ঝিনাইদহ জেলায় অসহনীয় লোডশেডিং এ গরমে মানুষের কাছে এখন তালপাতার হাতপাখা পরম সঙ্গী হিসাবে ধরা দিয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের জনজীবন গত তিন চার মাস যাবত ভয়াবহ লোডশেডিং এ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচেছ এ জেলায় ,গরমের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ এখন তালপাখা কিনতে ব্যাস্ত,ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলার প্রতিটি হাটের ফুটপাতে গিয়ে দেখা যায় এই তাল পাখার দোকানের পাশে উপচে পড়া ভিড়, ২০ টাকার হাতপাখা বিক্রি হচেছ ৩০ টাকা দরে। বিক্রেতা সানোয়ার হোসেন দিলু  জানান, এই তালপাখার বিক্রি এবার অনান্য বছরের তুললায় অনেক ভাল কারণ বিদ্যুৎ ঠিক মত না থাকার কারণে চাজার ফ্যানে গুলো একেবারে গরমে কাজে আসছে না, তাই মানুষ এই তালপাখার উপর ঝুকে পড়েছে।

ফুটপাতের আরেক বিক্রেতা আনন্দ দাস বলেন , আমার বাড়ি কালিগঞ্জ, আমি নিজে তালপাখা বানায়ে বিক্রি করি,বছরে ২/৩ মাস তাল পাখার বেশি চাহিদা থাকে। চৈত্র থেকে শুরু করে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যস্ত বিক্রির মৌসুম হলেও চৈত্র ও বৈশাখ মাসই পাখা বিক্রির উপযুক্ত সময়। প্রচন্ড তাপদাহ ও বিদ্যুতের লোডশেডিং এ সময়টাতে তালপাখার প্রয়োজন বেশি হয়ে থাকে। ফলে এ সময় আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বছরের অন্যান্য মাসে তালপাখার তৈরির কাজ ও বিক্রি চললেও শীত আসলে বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর তাল পাখা অন্য বছরের চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ।তিনি আরও জানান, পরিবারের ছোটরাও পড়াশোনার পাশাপাশি বাবা-মায়েদের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে।

গত বছর গুলোর চেয়ে এ বছর একটি পাখাতে দাম বেড়েছে প্রায় ৫টাকা। কিন্তু লাভ হচ্ছে কম। কারণ প্রতিটি জিনিসেরই দাম বেশি।তিনি আরও জানান, প্রতিটি পাখায় তৈরি পর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা খরচ হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১২ থেকে ১৫ টাকা টাকা। অবশ্য পাইকার ব্যবসায়ীরা উপরোক্ত দামে পাখাগুলি তাদের কাছ থেকে নিয়ে যায়। তারা একটি পাখা ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করে। অবশ্য খুব গরমে হাত পাখার চাহিদা বেশি হওয়ায় একটি পাখা তারা ২৫ থেকে ৩০ টাকায়ও বিক্রি হয়।

তিনি আরও পাখা তৈরি করতে রং,সুতা, বাঁশ, কুঞ্চি, তালের পাতার প্রয়োজন হয়। একটি তালের পাতা ৫ টাকা দরে তারা কিনে থাকেন। আর যারা পাখা সেলাইয়ের কাজ করেন তারা পাখা প্রতি ১ টাকা করে পান। যারা ১০০ জাড়াসোলার কাজ করে তারা ১০ টাকা পান। সব মিলিয়ে একটি পাখা তৈরি করতে ৮ টাকার বেশি খরচ হয়। বিক্রি করা হয় ১০ থেকে ১২ টাকায়। একজন কারিগর প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি তালপাখা তৈরি করতে পারেন। ফলে প্রতিটি কারিগর বিক্রির মৌসুমে দিনে যাবতীয় খরচ বাদে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করতে পারেন। পাইকাররা এখন বাড়ি থেকেই পাখা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানিয় জৈনিক ক্রেতা দিলু মিয়া বলেন, গরমে বিদ্যুতের যে অবস্থা তাতে জীবন বাঁচাতে হাত পাথার কোন বিকল্প নেই আমি চার টা পাখা কিনেছি ১০০ টাকা দিয়ে।