ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪৪৭ হিজরী উদযাপন উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য মুবারক র্যালির আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলাদুন্নবী উদযাপন পরিষদ।
আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শিক্ষার্থীরা জমায়েত হন। সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় মসজিদে গিয়ে শেষ হয়। র্যালি শেষে সেখানে এক দোয়া মাহফিল ও জিলাপি বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মিলাদুন্নবী উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কাজী আহবাব দস্তগীর, সদস্য সচিব মোঃ মাহদী, এবং সদস্য সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, মোঃ জাকারিয়া, সৈয়দ মুহাম্মদ আলী, ও রেজাউল ইসলাম রাকিব।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবু ইউসুফ আলী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শাখা সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত, জমিয়াতে তোলাবায়ে আ্যারাবিয়া শাখার সেক্রেটারি আব্দুর রউফসহ ধর্মপ্রাণ শতাধিক শিক্ষার্থী।
এসময় সাজ্জাতুল্লাহ শেখ সঞ্চালনায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শাখা সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, “আজকের এই দিনে এমন এক মহামানবের আগমন ঘটেছিলো, যিনি না আসলে আসমান, জমিন, এমনকি এই বিশ্বজগতের কিছুই সৃষ্টি হতো না। তাঁর কারণেই আমাদের সৃষ্টি হয়েছে, এই পৃথিবীর অস্তিত্ব হয়েছে। সেই মহান নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন উপলক্ষে যে র্যালি আয়োজন করা হয়েছে, তা খুবই ছোট একটি উদ্যোগ হলেও আমরা তাঁকে স্মরণ করার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, রাসূল (সা.) যেভাবে তৎকালীন অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবীকে আলোর পথ দেখিয়েছেন, তিনি যে দিশা ও গাইডলাইন দিয়ে গেছেন, তা আমাদের অনুসরণ করতে হবে। তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আজকের দিনে তাঁর আগমনের মাহাত্ম্য স্মরণ করে আমরা যেন তাঁর রেখে যাওয়া পথনির্দেশনা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, তিনি রাজনীতি, সমাজ সংস্কার ও নেতৃত্বেও ছিলেন অনন্য। বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা তাঁর আদর্শ থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। তাই আজ আমাদের সবারই উচিত — মহানবীর রেখে যাওয়া পূর্ণাঙ্গ আদর্শ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করা।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবু ইউসুফ আলী বলেন, “যখন পৃথিবী ছিল চরম অস্থির ও অন্ধকারাচ্ছন্ন, তখন আরব সমাজ ছিল অশান্ত, অন্যায়-অবিচারে পূর্ণ। মানুষের অধিকার ছিল পদদলিত, নারীরা ছিল নিরাপত্তাহীন। সেই ভয়ংকর সময়ে আলোর প্রতীক হয়ে আবির্ভূত হন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি এমন একটি সমাজ উপহার দেন যেখানে ছিল না কোনো জুলুম, অন্যায় বা অবিচার; মা-বোনেরা ছিলেন নিরাপদ।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের র্যালির মধ্যেই যদি আমাদের ভালোবাসা সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে তা যথেষ্ট নয়। যেমন একজন ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর শুধু তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে তার পরিবার ও সন্তানদের যত্ন না নিলে তাতে কোনো প্রকৃত উপকার হয় না — তেমনি, আমাদের নবী (সা.) যে আদর্শ, শিক্ষা ও গাইডলাইন রেখে গেছেন, আমরা যদি তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ না করি, তাহলে তা হবে তার প্রকৃত মর্যাদা দেওয়া নয়। আমাদের উচিত, সেই আদর্শকে বাস্তবায়ন করে জাতির কল্যাণে কাজ করা।”