প্রায় সাড়ে ১৩ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেধাবী দুই শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ ও আল-মুকাদ্দাস। তাদের নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তাদের কোনও খোঁজ মেলেনি। তাদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে শাখা ছাত্রশিবির গত শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথ্য অনুসন্ধানে পূর্বে গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি পুনর্গঠন করেছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পুনর্গঠিত ৬ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান শেখ এবং সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আ হ ম তরীকুল ইসলাম, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ও ছাত্র উপদেষ্টা ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম এবং কুষ্টিয়া জেলা দায়রা জজ আদালতের এ্যাডভোকেট এস এম শাতিল মাহমুদ।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে মানববন্ধনের প্রেক্ষিতে গত ৬ জানুয়ারি তথ্য অনুসন্ধানে তিন সদস্যের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পরে রোববার উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ কমিটি পুনর্গঠন করে ৬ সদস্যের করেছে।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান শেখ বলেন, “আমি বর্তমানে ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসে ফিরে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখবো।”
উল্লেখ্য, ওয়ালিউল্লাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থী ও তৎকালীন শাখা ছাত্রশিবিরের অর্থ সম্পাদক ছিলেন। আল-মুকাদ্দাস ছিলেন আল ফিকহ বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রশিবিরের সাংস্কৃতিক সম্পাদক। ২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-কুষ্টিয়া গামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের ৩৭৫০ নম্বর গাড়িতে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে আশুলিয়ার নবীনগর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তাদের তুলে নেয়া হয়। পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে। এরপর থেকে তাদের ফিরে পেতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অনেকেই ধর্মঘট ও মানববন্ধন করেছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।