শিরোনাম :
Logo দূর্গা পূজা উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা পুলিশের মতবিনিময় সভা Logo জাকসু প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘন  বাগছাসের জিএস প্রার্থীর Logo শ্রমিক দলের প্রধান উপদেষ্টার সুস্থতা ও ঝালকাঠি প্রেসক্লাব সভাপতির রুহের মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত Logo লস্কর সিনেমার গানে জীবন ওয়াসিফ ও শেরপুরের কলি সাহা Logo সিরাজগঞ্জে এতিমদের জমি দখলে প্রভাবশালীদের টানাটানি Logo চাঁদপুর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ব্র্যাকের উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন Logo সাংবাদিক কবির হোসেন মিজি সম্পাদিত ছোট কাগজ জানালা’র মোড়ক উন্মোচন Logo একসময়ের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী সফিউল্লাহ এখন রিক্সা–সাইকেল মেকানিক Logo শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ক্ষমতায় ছিল নির্বাচনগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে: বদরুদ্দীন উমরের জবানবন্দি Logo ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে ‘মনিটরিং’ জোরদার করবে সরকার, নেবে কঠোর ব্যবস্থা : প্রেস সচিব

বাচ্চার মিথ্যা কথা বলা !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৭:২১:১১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২ মে ২০১৭
  • ৭৭২ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

মেঘলা তার ৬ বছরের ছেলে জয়কে নিয়ে কিছুদিন ধরে খুব সমস্যায় পড়েছে। খাওয়া-দাওয়া নিয়ে দুষ্টুমি ছাড়া এমনিতে জয় মায়ের কথার বেশ বাধ্য।

খেতে চায় না দেখে প্রতিদিনই মেঘলা জয়ের স্কুলের টিফিনের জন্য নতুন নতুন কিছু না কিছু বানিয়ে দেয়। জয়ও রোজ টিফিন শেষ করে বাসায় ফেরে। মাকে এসে বলে আজ যে নুডুলসটা বানিয়েছিলে সেটা খেতে খুব মজা কিংবা আজকের পুডিং খুব ভালো লেগেছে।

সেদিন মেঘলা জয়কে স্কুল থেকে আনতে গেলো। জয়ের বন্ধুর মায়েদের সঙ্গে আলাপের সময় হঠাৎ জয়ের এক বন্ধুর মা জানালো, জয় নাকি প্রতিদিন তার টিফিন স্কুলের জানালা দিয়ে ফেলে দেয়। ভদ্রমহিলার ছেলে নাকি তাকে বলেছে একথা।

বাসায় এসে জয়ের কাছে ব্যাপারটা জানতে চাইলো মেঘলা। প্রথমে কিছুতেই স্বীকার করবে না। শেষে মা রেগে গেছে দেখে বললো, টিফিন খেতে ওর ভালো লাগে না তাই ফেলে দেয়। শুধু টিফিন ফেলে দেওয়া নয়, এইটুকু ছেলে বানিয়ে বানিয়ে কত মিথ্যা বলতে শিখে গেছে দেখে মেঘলার ভয়ে বুক শুকিয়ে গেলো। এই বয়সে যদি এরকম মিথ্যা বলে বড় হয়ে না জানি কী হবে?

অথচ মূলত বড়দের দেখাদেখি বাচ্চারা কারণে-অকারণে মিথ্যা কথা বলা শেখে। কারো ফোন এলে যদি কথা বলতে ইচ্ছা না করে, আমরা নির্দ্বিধায় বাসার ছোট সদস্যকে শিখিয়ে দিই ‘বাসায় নেই’ বলে দিতে। কোথাও বেড়াতে গিয়ে স্কুল কামাই হলে অ্যাবসেন্ট নোটে আমরাই লিখে দিই বাচ্চা অসুস্থ ছিল।

ওদের ধারণাই হয়ে যায় এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু ছোট্ট মিথ্যা যে কখন বড় আকার ধারণ করে, তা বাচ্চারা বুঝে উঠতে পারে না। আর সমস্যাটা এখানেই। বাবা-মায়েরাও ভেবে পান না কী করে মিথ্যা কথা বলার স্বভাবটা ছাড়াবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক বাচ্চার মিথ্যা বলা দূর করতে বাবা-মা হিসেবে আপনার কিছু দায়িত্ব।

ছোটবেলায় আমরা সবাই সত্য কথা বলার শিক্ষা পেয়েছি, কিন্তু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে তা আর খাটে না।

* আপনার বাচ্চা মিথ্যা বলছে এটা যখনই টের পাবেন, প্রথমেই চেষ্টা করবেন এর কারণটা খোঁজার। কোনো অসুবিধা থেকে নিজেকে বাঁচাতে কি সে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে? সত্য কথা বললে তার শাস্তি হবে ভেবে মিথ্যা বলছে? নাকি এটা ওর অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে? কারণ খুঁজে বের করতে পারলে সংশোধন করাও সহজ হবে।

* বাচ্চারা অনেকসময় বাড়িয়ে বাড়িয়ে কথা বলে। ছুটিতে হয়তো বাড়িতে ছিল, কিন্তু বন্ধুদের বলছে বান্দরবন গিয়েছিল ছুটি কাটাতে। এগুলো কিন্তু মিথ্যা নয়। নিজেকে জাহির করার জন্য বলছে এসব। বন্ধুদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য ওরা চেষ্টা করে বলেই এমন বানিয়ে গল্প ফাঁদে। তবে ওকে এজন্য বকাবকি না করে ওর এই কল্পনাশক্তিকে পজেটিভভাবে পরিচালনা করুন।

* মেরেধরে বা জোর করে কখনো সত্য বলানোর চেষ্টা করবেন না। তাতে বরং ওর জিদ আরও বেড়ে যাবে। যখন মিথ্যা বলবে তখন তা পাত্তা দেবেন না। তারপর যখন ব্যাপারটা থিতিয়ে যাবে তখন তাকে কাছে ডাকুন। তারপর নরমভাবে ঘটনা জানতে চান। ওকে ভরসা দিন যে ওকে কেউ বকবে না। সত্যি কথা না বললে আপনার খুব কষ্ট হবে সেটা বোঝান ওকে। সত্য কথা বলার জন্য পুরস্কারও দিতে পারেন।

* প্রথমে চেষ্টা করা দরকার ওর মধ্যে ভালো অভ্যাসগুলো গড়ে তোলার। ওকে যখন কোনো গল্প শোনাবেন তখন জানতে চাইবেন গল্পটা থেকে সে কী শিখল। বিভিন্ন কার্টুন এঁকে তার সঙ্গে একটা করে মরাল শেখান।

* সবচেয়ে জরুরি নিজেদের ব্যবহার পরিবর্তন করা। বাচ্চার সামনে মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকুন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দূর্গা পূজা উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা পুলিশের মতবিনিময় সভা

বাচ্চার মিথ্যা কথা বলা !

আপডেট সময় : ০৭:২১:১১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২ মে ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

মেঘলা তার ৬ বছরের ছেলে জয়কে নিয়ে কিছুদিন ধরে খুব সমস্যায় পড়েছে। খাওয়া-দাওয়া নিয়ে দুষ্টুমি ছাড়া এমনিতে জয় মায়ের কথার বেশ বাধ্য।

খেতে চায় না দেখে প্রতিদিনই মেঘলা জয়ের স্কুলের টিফিনের জন্য নতুন নতুন কিছু না কিছু বানিয়ে দেয়। জয়ও রোজ টিফিন শেষ করে বাসায় ফেরে। মাকে এসে বলে আজ যে নুডুলসটা বানিয়েছিলে সেটা খেতে খুব মজা কিংবা আজকের পুডিং খুব ভালো লেগেছে।

সেদিন মেঘলা জয়কে স্কুল থেকে আনতে গেলো। জয়ের বন্ধুর মায়েদের সঙ্গে আলাপের সময় হঠাৎ জয়ের এক বন্ধুর মা জানালো, জয় নাকি প্রতিদিন তার টিফিন স্কুলের জানালা দিয়ে ফেলে দেয়। ভদ্রমহিলার ছেলে নাকি তাকে বলেছে একথা।

বাসায় এসে জয়ের কাছে ব্যাপারটা জানতে চাইলো মেঘলা। প্রথমে কিছুতেই স্বীকার করবে না। শেষে মা রেগে গেছে দেখে বললো, টিফিন খেতে ওর ভালো লাগে না তাই ফেলে দেয়। শুধু টিফিন ফেলে দেওয়া নয়, এইটুকু ছেলে বানিয়ে বানিয়ে কত মিথ্যা বলতে শিখে গেছে দেখে মেঘলার ভয়ে বুক শুকিয়ে গেলো। এই বয়সে যদি এরকম মিথ্যা বলে বড় হয়ে না জানি কী হবে?

অথচ মূলত বড়দের দেখাদেখি বাচ্চারা কারণে-অকারণে মিথ্যা কথা বলা শেখে। কারো ফোন এলে যদি কথা বলতে ইচ্ছা না করে, আমরা নির্দ্বিধায় বাসার ছোট সদস্যকে শিখিয়ে দিই ‘বাসায় নেই’ বলে দিতে। কোথাও বেড়াতে গিয়ে স্কুল কামাই হলে অ্যাবসেন্ট নোটে আমরাই লিখে দিই বাচ্চা অসুস্থ ছিল।

ওদের ধারণাই হয়ে যায় এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু ছোট্ট মিথ্যা যে কখন বড় আকার ধারণ করে, তা বাচ্চারা বুঝে উঠতে পারে না। আর সমস্যাটা এখানেই। বাবা-মায়েরাও ভেবে পান না কী করে মিথ্যা কথা বলার স্বভাবটা ছাড়াবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক বাচ্চার মিথ্যা বলা দূর করতে বাবা-মা হিসেবে আপনার কিছু দায়িত্ব।

ছোটবেলায় আমরা সবাই সত্য কথা বলার শিক্ষা পেয়েছি, কিন্তু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে তা আর খাটে না।

* আপনার বাচ্চা মিথ্যা বলছে এটা যখনই টের পাবেন, প্রথমেই চেষ্টা করবেন এর কারণটা খোঁজার। কোনো অসুবিধা থেকে নিজেকে বাঁচাতে কি সে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে? সত্য কথা বললে তার শাস্তি হবে ভেবে মিথ্যা বলছে? নাকি এটা ওর অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে? কারণ খুঁজে বের করতে পারলে সংশোধন করাও সহজ হবে।

* বাচ্চারা অনেকসময় বাড়িয়ে বাড়িয়ে কথা বলে। ছুটিতে হয়তো বাড়িতে ছিল, কিন্তু বন্ধুদের বলছে বান্দরবন গিয়েছিল ছুটি কাটাতে। এগুলো কিন্তু মিথ্যা নয়। নিজেকে জাহির করার জন্য বলছে এসব। বন্ধুদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য ওরা চেষ্টা করে বলেই এমন বানিয়ে গল্প ফাঁদে। তবে ওকে এজন্য বকাবকি না করে ওর এই কল্পনাশক্তিকে পজেটিভভাবে পরিচালনা করুন।

* মেরেধরে বা জোর করে কখনো সত্য বলানোর চেষ্টা করবেন না। তাতে বরং ওর জিদ আরও বেড়ে যাবে। যখন মিথ্যা বলবে তখন তা পাত্তা দেবেন না। তারপর যখন ব্যাপারটা থিতিয়ে যাবে তখন তাকে কাছে ডাকুন। তারপর নরমভাবে ঘটনা জানতে চান। ওকে ভরসা দিন যে ওকে কেউ বকবে না। সত্যি কথা না বললে আপনার খুব কষ্ট হবে সেটা বোঝান ওকে। সত্য কথা বলার জন্য পুরস্কারও দিতে পারেন।

* প্রথমে চেষ্টা করা দরকার ওর মধ্যে ভালো অভ্যাসগুলো গড়ে তোলার। ওকে যখন কোনো গল্প শোনাবেন তখন জানতে চাইবেন গল্পটা থেকে সে কী শিখল। বিভিন্ন কার্টুন এঁকে তার সঙ্গে একটা করে মরাল শেখান।

* সবচেয়ে জরুরি নিজেদের ব্যবহার পরিবর্তন করা। বাচ্চার সামনে মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকুন।