ইলিশের উপকারিতা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৮:১৭ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • ৭১০ বার পড়া হয়েছে

ইলিশ বাঙালির আবেগ আর ঐতিহ্যের নাম। বিভিন্ন উৎসবে বাঙালির পাতে ইলিশের উপস্থিতি থাকে। ইলিশ মাছ খেতে যেমন মজাদার, তেমনি এর পুষ্টিগুণও অনেক। এ জন্যই বলা হয় মাছের রাজা হলো ইলিশ।

ইলিশে পুষ্টি

প্রতি ১০০ গ্রাম ইলিশ মাছে আছে— ক্যালরি ১৬৫ গ্রাম; প্রোটিন ২০-২৪ গ্রাম; ফ্যাট ৯-১০ গ্রাম

খাদ্য আঁশ ৩-৪ গ্রাম; ভিটামিন এ ৭৬ মাইক্রোগ্রামভিটামিন সি ১৪ মাইক্রোগ্রাম; ক্যালসিয়াম ৩৭০ মিলিগ্রাম; আয়রন ১৫ মিলিগ্রাম

ম্যাগনেশিয়াম ৪৫ মিলিগ্রাম থাকে। এ ছাড়া থাকে ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও জিংক। এই পরিমাণ মাছের বয়স এবং ওজনভেদে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।

ইলিশের স্বাদ আর সুগন্ধের কারণ

ইলিশ মাছের স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্য এর উচ্চ পরিমাণে পলিআন-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (পিইউএফএ) দায়ী। ইলিশ প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন পিইউএফএতে সমৃদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে স্টিয়ারিক অ্যাসিড, অলিক অ্যাসিড, লিনোলিক অ্যাসিড, লিনোলেনিক অ্যাসিড, অ্যারাকিডোনিক অ্যাসিড, ইকোসাপেন্টানোয়িক অ্যাসিড, ডেকাহেক্সানোয়িক অ্যাসিড। এগুলো উপকারী চর্বি।ইলিশে থাকা গ্লুটামিক অ্যাসিড, অ্যালানিন এবং অ্যাসপার্টিক অ্যাসিডের মতো অ্যামিনো অ্যাসিড ইলিশের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।

উপকারিতা

ইলিশ মাছের প্রোটিন ফার্স্টক্লাস প্রোটিন। শরীর গঠনের সব এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড এখানে পাওয়া যায়। এল-আরজিনিন অ্যামিনো অ্যাসিড শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এল-লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড শিশুর পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ক্ষুধামান্দ্য দূর করে।

ইলিশের প্রোটিন কোলাজেনসমৃদ্ধ। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে কোলাজেন।ইলিশ মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়; যা শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়। এটি উপকারী চর্বি হিসেবে বিবেচিত। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে এবং ধমনির অভ্যন্তরে ব্লক তৈরি করতে বাধা দেয়।

ইলিশ মাছে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস হাড় এবং দাঁতের গঠন মজবুত করে।

ইলিশ মাছের আয়রন রক্তস্বল্পতা রোধ করে এবং ভিটামিন সি আয়রনের শোষণকে ত্বরান্বিত করে।

ইলিশের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন রাখবেন যেভাবেইলিশ মাছ অতিরিক্ত ভেজে রান্না করলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অপচয় হতে পারে। তাই মাছ না ভেজে বা হালকা ভেজে রান্না করতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে ভিটামিন সি, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নষ্ট হতে পারে।

ইলিশে স্বাস্থ্যঝুঁকি

অনেকের ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছে অ্যালার্জি থাকে। কারণ, সামুদ্রিক মাছে হিস্টিডিন নামক এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। এল-হিস্টিডিন ডিকার্বোক্সিলেজ নামক এনজাইমের প্রভাবে হিস্টিডিন থেকে হিস্টামিন তৈরি হয়ে থাকে, যা অ্যালার্জি তৈরি করে। তাই সঠিক নিয়মে ইলিশ মাছ সংরক্ষণ করতে পারলে হিস্টামিন তৈরি হতে পারে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইলিশের উপকারিতা

আপডেট সময় : ০৬:৫৮:১৭ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

ইলিশ বাঙালির আবেগ আর ঐতিহ্যের নাম। বিভিন্ন উৎসবে বাঙালির পাতে ইলিশের উপস্থিতি থাকে। ইলিশ মাছ খেতে যেমন মজাদার, তেমনি এর পুষ্টিগুণও অনেক। এ জন্যই বলা হয় মাছের রাজা হলো ইলিশ।

ইলিশে পুষ্টি

প্রতি ১০০ গ্রাম ইলিশ মাছে আছে— ক্যালরি ১৬৫ গ্রাম; প্রোটিন ২০-২৪ গ্রাম; ফ্যাট ৯-১০ গ্রাম

খাদ্য আঁশ ৩-৪ গ্রাম; ভিটামিন এ ৭৬ মাইক্রোগ্রামভিটামিন সি ১৪ মাইক্রোগ্রাম; ক্যালসিয়াম ৩৭০ মিলিগ্রাম; আয়রন ১৫ মিলিগ্রাম

ম্যাগনেশিয়াম ৪৫ মিলিগ্রাম থাকে। এ ছাড়া থাকে ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও জিংক। এই পরিমাণ মাছের বয়স এবং ওজনভেদে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।

ইলিশের স্বাদ আর সুগন্ধের কারণ

ইলিশ মাছের স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্য এর উচ্চ পরিমাণে পলিআন-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (পিইউএফএ) দায়ী। ইলিশ প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন পিইউএফএতে সমৃদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে স্টিয়ারিক অ্যাসিড, অলিক অ্যাসিড, লিনোলিক অ্যাসিড, লিনোলেনিক অ্যাসিড, অ্যারাকিডোনিক অ্যাসিড, ইকোসাপেন্টানোয়িক অ্যাসিড, ডেকাহেক্সানোয়িক অ্যাসিড। এগুলো উপকারী চর্বি।ইলিশে থাকা গ্লুটামিক অ্যাসিড, অ্যালানিন এবং অ্যাসপার্টিক অ্যাসিডের মতো অ্যামিনো অ্যাসিড ইলিশের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।

উপকারিতা

ইলিশ মাছের প্রোটিন ফার্স্টক্লাস প্রোটিন। শরীর গঠনের সব এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড এখানে পাওয়া যায়। এল-আরজিনিন অ্যামিনো অ্যাসিড শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এল-লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড শিশুর পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ক্ষুধামান্দ্য দূর করে।

ইলিশের প্রোটিন কোলাজেনসমৃদ্ধ। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে কোলাজেন।ইলিশ মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়; যা শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়। এটি উপকারী চর্বি হিসেবে বিবেচিত। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে এবং ধমনির অভ্যন্তরে ব্লক তৈরি করতে বাধা দেয়।

ইলিশ মাছে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস হাড় এবং দাঁতের গঠন মজবুত করে।

ইলিশ মাছের আয়রন রক্তস্বল্পতা রোধ করে এবং ভিটামিন সি আয়রনের শোষণকে ত্বরান্বিত করে।

ইলিশের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন রাখবেন যেভাবেইলিশ মাছ অতিরিক্ত ভেজে রান্না করলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অপচয় হতে পারে। তাই মাছ না ভেজে বা হালকা ভেজে রান্না করতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে ভিটামিন সি, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নষ্ট হতে পারে।

ইলিশে স্বাস্থ্যঝুঁকি

অনেকের ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছে অ্যালার্জি থাকে। কারণ, সামুদ্রিক মাছে হিস্টিডিন নামক এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। এল-হিস্টিডিন ডিকার্বোক্সিলেজ নামক এনজাইমের প্রভাবে হিস্টিডিন থেকে হিস্টামিন তৈরি হয়ে থাকে, যা অ্যালার্জি তৈরি করে। তাই সঠিক নিয়মে ইলিশ মাছ সংরক্ষণ করতে পারলে হিস্টামিন তৈরি হতে পারে না।