নির্মমভাবে মেছো বিড়াল হত্যা, ভিডিও ভাইরাল গ্রেফতার-১

চয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামে নির্মমভাবে মেছো বিড়াল হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে বাকি দুইজন এখনো পলাতক রয়েছে

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখ যায়, তিন যুবক মিলে টেটা (ভালা) দিয়ে আঘাত করে বন্যপ্রাণীটি হত্যা করে। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এ বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মার্চ ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) বিকাল আনুমানিক ৫:৩০ ঘটিকার সময় দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামে মানিকদোয়া রাস্তার পাশে ঐ গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে মোঃ আলমগীর হোসেন (৩০), হারুণ কাল্টার ছেলে মিন্টু এবং ইমান আলীর ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম মিলে একটি মেছো বিড়ালকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

বন্যপ্রাণীটিকে হত্যা করা এবং সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই নির্মম ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।

তারা আশা করছেন, দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ যেন আর না ঘটে, সে জন্য প্রশাসন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ০৪নং কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ০৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ্ মোঃ ফরহাদ হোসেন ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা বন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।

এরপর শনিবার (২২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), উপজেলা বন কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বিড়ালটি মাটিচাপা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র বলেন, “বন্যপ্রাণী হত্যা একটি গুরুতর অপরাধ। এই ধরনের নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” মেছো বিড়ালটি মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এখনো পলাতক রয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।”

এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, অভিযুক্ত মোঃ আলমগীর হোসেন (৩০) কে গ্রেপ্তার করে। তবে বাকি দুই আসামি মিন্টু ও সাইফুল ইসলাম এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ অনুযায়ী, কোনো বন্যপ্রাণী হত্যা বা ক্ষতি করলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

আইন অনুযায়ী, পুলিশ ইতোমধ্যে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। এদিকে, পরিবেশবাদী ও প্রাণীপ্রেমীরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্মমভাবে মেছো বিড়াল হত্যা, ভিডিও ভাইরাল গ্রেফতার-১

আপডেট সময় : ০৩:৩৪:৫০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

চয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামে নির্মমভাবে মেছো বিড়াল হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে বাকি দুইজন এখনো পলাতক রয়েছে

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখ যায়, তিন যুবক মিলে টেটা (ভালা) দিয়ে আঘাত করে বন্যপ্রাণীটি হত্যা করে। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এ বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মার্চ ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) বিকাল আনুমানিক ৫:৩০ ঘটিকার সময় দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামে মানিকদোয়া রাস্তার পাশে ঐ গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে মোঃ আলমগীর হোসেন (৩০), হারুণ কাল্টার ছেলে মিন্টু এবং ইমান আলীর ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম মিলে একটি মেছো বিড়ালকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

বন্যপ্রাণীটিকে হত্যা করা এবং সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই নির্মম ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।

তারা আশা করছেন, দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ যেন আর না ঘটে, সে জন্য প্রশাসন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ০৪নং কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ০৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ্ মোঃ ফরহাদ হোসেন ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা বন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।

এরপর শনিবার (২২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), উপজেলা বন কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বিড়ালটি মাটিচাপা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র বলেন, “বন্যপ্রাণী হত্যা একটি গুরুতর অপরাধ। এই ধরনের নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” মেছো বিড়ালটি মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এখনো পলাতক রয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।”

এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, অভিযুক্ত মোঃ আলমগীর হোসেন (৩০) কে গ্রেপ্তার করে। তবে বাকি দুই আসামি মিন্টু ও সাইফুল ইসলাম এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ অনুযায়ী, কোনো বন্যপ্রাণী হত্যা বা ক্ষতি করলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

আইন অনুযায়ী, পুলিশ ইতোমধ্যে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। এদিকে, পরিবেশবাদী ও প্রাণীপ্রেমীরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।