নিউজ ডেস্ক:
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে আরো যে দুটি শিরোপা জেতার সুযোগের দরজা খুলে যায়, সেগুলো হচ্ছে উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ। সেভিয়াকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপটা আগেই জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ, ক্লাব বিশ্বকাপটা জিতলে হবে অন্য রকম ট্রেবল।
প্রতিপক্ষ কাশিমা অ্যান্টলার্স অবশ্য হুমকি দিয়েই রেখেছে, তাদের সঙ্গে জাপানে এসে জেতা আর জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করা নাকি একই কথা! এসব শুনে মাদ্রিদিস্তারা নিশ্চয়ই জোর গলায় বলবেন, ‘আমাদের রামোস আছে। ’ প্রতিপক্ষ কুমির হোক আর যা-ই হোক, শেষ বেলায় মাথার খেল দেখিয়ে ঠিকই উতরে দেবেন ‘কাপিতান ফান্তাসতিকো’! ফাইনালের আগে তাই বড় খবর হচ্ছে সের্হিয়ো রামোস খেলছেন।ফাইনালকে সামনে রেখে নিজেদের সর্বশেষ অনুশীলনটা সেরে ফেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ইয়োকোহামার মিত্সুজাওয়া স্টেডিয়ামে সেই অনুশীলনে যোগ দিয়েছিলেন রামোস, কিছুটা চোট এবং ভ্রমণক্লান্তির কারণে সেমিফাইনালে ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে খেলেননি রিয়াল সেনাপতি। বল সার্কুলেশন, শর্ট স্প্রিন্টে গা গরমের পর বল পায়ে মাঠে অনুশীলন করিয়েছেন জিদান। পেপে অবশ্য কাজ করেছেন ইনডোরে। ২০১৪ সালে সান লোরেনজোর বিপক্ষে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালটা ২-০ গোলে জিতেছিল রিয়াল, সেদিনের এক গোলদাতা রামোস থাকলেও গ্যারেথ বেল নেই। ওয়েলসের এই তারকার অনুপস্থিতিতে সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন লুকাস ভাসকুয়েজ। বছর দুই আগে, মরক্কোতে রিয়াল যখন ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে আসে, ভাসকুয়েজ তখন ধারে খেলছেন এসপানিওলে। এবারে জাপানের ফ্লাইটে তো ছিলেনই, আজ জিদানের প্রথম একাদশেও নিশ্চিতভাবে থাকবেন এই উইঙ্গার। এখনো ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ না পেলেও চ্যাম্পিয়নস লিগ ও সুপার কাপের স্বাদ পাওয়া ভাসকুয়েজ চাইছেন আরো, ‘অবশ্যই আমরা আরো চাই। আর তাতে আমি যদি একটা গোল বা অ্যাসিস্ট যেকোনোভাবে অবদান রাখতে পারি, সেটা হবে আরো ভালো। ’
আয়ের দিক থেকে রিয়াল ও কাশিমা অ্যান্টলার্সের যে ফারাক, মানের তফাতটা তার চেয়েও বেশি। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া তারকাখচিত দলের বিপক্ষে জাপানের ঘরোয়া চ্যাম্পিয়ন, এ তো কোনো পাল্লাতেই মাপা যায় না! তবে ভাসকুয়েজ একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি নন, ‘আমরা সেমিফাইনালে কাশিমার খেলা দেখে বুঝেছি তারা সহজ প্রতিপক্ষ হবে না। নিজেদের ওপর খারাপ সময় টেনে আনতে না চাইলে আমাদের ভালো পারফর্ম করতে হবে এবং হারাতে হবে। ’ কাশিমার বিপক্ষেও শেষ মুহূর্তে গোল করে ম্যাচ জেতার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না—এমন প্রশ্নে হাসতে হাসতেই ভাসকুয়েজের উত্তর, ‘মনে তো হচ্ছে আমাদের সেরকম একটা অভ্যাসই গড়ে উঠেছে, তাই নয় কি?’
চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল, উয়েফা সুপার কাপ; দুটি ম্যাচেই গোল করেছেন রামোস। করেছেন আগের ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালেও। সেমিফাইনালে বিশ্রাম পাওয়া রামোসই কি হবেন ফাইনালেরও নায়ক। নাকি ক্লাব ফুটবলে ৫০০ গোলের মাইলফলক ছোঁয়া ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। অথবা তাঁদের ছাপিয়ে যাবেন অন্য কেউ? কল্পনার ঘোড়াকে অনেক দূর ছোটালে ম্যাচের নায়ক হিসেবে আসতে পারে সুমো ইয়ামামোতো, শোমা দোই, গেন শোজির নামও। ইয়ামামোতোর বয়স ৩১, বাকি দুজনের ২৪। সঙ্গে ক্লাব ফুটবলে অভিজ্ঞ ও জাতীয় দলেও খেলা প্লেমেকার গোকু শিবাসাকিও আছেন। সবাই মিলেই দেখছেন একটাই স্বপ্ন, রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপটা জিতে নেওয়ার! আথলেতিকো ন্যাসিওনালের বিপক্ষে সেমিফাইনালে গোল করা দোই যেমন চাইছেন, ‘আমি তো মনে করি, আমরা ফাইনালে খেলেছিলাম; রেকর্ডটা যেন এত সরলীকৃত কোনো কিছু না হয়। আমি চাই কাশিমা মনে রাখার মতো একটা কিছু করে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নিক। ’ আর জিদানের এই অজেয় রিয়ালকে হারিয়ে দেওয়াটা যে মনে রাখার মতো একটা কাজই হবে, সেটা না বলে দিলেও বোধহয় চলবে!
নামে ক্লাব বিশ্বকাপ হলেও কার্যকারিতায় এই আসরের ফাইনালে শেষ পর্যন্ত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে লাতিন অঞ্চলের চ্যাম্পিয়নের দেখা হওয়াটাই অলিখিত নিয়ম। সেখানে ন্যাসিওনালকে বিদায় করে দিয়ে কাশিমা যে ফাইনাল খেলছে, সেটাও কিন্তু কম ‘ঐতিহাসিক’ নয়! ফিফা, রিয়াল