শিরোনাম :
Logo কুবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ; পরীক্ষা স্থগিত Logo কচুয়ায় ভূমি দস্যু আওয়ামীলীগ নেতার গ্রেফতারের দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন Logo যবিপ্রবিতে অগ্নি প্রতিরোধ, নির্বাপণ, উদ্ধার ও জরুরী বর্হিগমন বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত Logo শেরপুরে গাছে পেরেক অপসারণ কর্মসূচি পালন Logo কাজ ছাড়াই বেরোবির ১১ কর্মকর্তা- কর্মচারী বেতনভাতা উত্তোলন করতেছেন: দুদক Logo পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ফার্মেসি ব্যাবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে এনআইডি সেবা Logo কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চিকিৎসকদের মহাসমাবেশ চলছে Logo ফারজানা সিঁথিকে ধর্ষণের হুমকি, কনটেন্ট ক্রিয়েটরের নামে মামলা Logo এনসিপি গোলমাল করে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে: ফারুক

শহীদুলের বাড়ি কানাডা জার্মানি

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১০:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • ৭১২ বার পড়া হয়েছে
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে এম শহীদুল হকের শত কোটি টাকার সম্পদের দলিলসহ বিভিন্ন নথি খুঁজে পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার এক আত্মীয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে নথিগুলো জব্দ করা হয়। ওই সব নথির মধ্যে জার্মানির বন শহরে থাকা বাড়ির মূল দলিল এবং কানাডার টরন্টোতে থাকা আরেক বাড়ির মূল দলিল পাওয়া গেছে। ওসব বাড়ি বিলাসবহুল বলে জানা গেছে। দুদক কর্মকর্তাদের দাবি, জব্দ হওয়া নথিপত্রে কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য রয়েছে। শহীদুল হক তার সম্পদের গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো আত্মীয়দের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে গোপন করার চেষ্টা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, শহীদুল হককে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বিভিন্ন থানার হত্যা মামলায়। গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে কয়েক দফায় রিমান্ডেও নেওয়া হয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বরে একটি বাসায় অভিযান চালায়। জানা যায়, দুদক, এনবিআর ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিতে গুরুত্বপূর্ণ এসব নথি আত্মীয়ের বাসায় লুকিয়ে রাখেন শহীদুল হক। মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের সি-ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের একটি বাসায় এ অভিযান চালানো হয়। সেখানে শহীদুল হকের ছোট বোনের ননদ সম্পর্কীয় নীগার সুলতানার বাসা থেকে এসব দলিল জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, তল্লাশিকালে দুটি বস্তায় ৩৮ ধরনের ৪৮টি আলামত পাওয়া গেছে। এসবের মধ্যে বিভিন্ন মূল্যবান সম্পত্তির দলিল, গোপনীয় চুক্তিপত্র, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, বন্ড, এফডিআর, সংঘ স্মারক, অফার লেটার, ব্যাংক হিসাব বিবরণীসহ নানান গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, নথিগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, এসবের মধ্যে রয়েছে শহীদুল হকের বাবা ও মায়ের নামে গড়া মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকার স্থায়ী আমানত ও এফডিআরের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। এ ছাড়া ফারমার্স ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ সঞ্চিত রয়েছে। এ ছাড়া তার রাজধানীর গুলশান, ভাটারা, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে, সোনারগাঁয়, সদর, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, পূর্বাচল এবং গাজীপুরে বিপুল পরিমাণ সম্পদের দলিল রয়েছে। মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের তিনটি শাখায় ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর, ফারমার্স ব্যাংকের ৮টি হিসাবে ৪ কোটি ৭০ লাখ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চারটি হিসাবে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকাসহ মোট ১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার এফডিআরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে এ ফাউন্ডেশনের নামে প্রায় অর্ধশতাধিক সঞ্চয়ী হিসাব ও এফডিআরের নথিপত্র পেয়েছে দুদক।

সূত্র জানায়, ওই দুই বস্তায় বিপুল পরিমাণ সম্পদের দলিল ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কাগজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকার গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সাতটি পৃথক দলিল, সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ঢাকার পাঁচটি, উত্তরার দুটি, কেরানীগঞ্জের দুটি, মোহাম্মদপুরে দুটি, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও ফতুল্লার ১০টি দলিল রয়েছে।

উল্লেখ্য, এ কে এম শহীদুল হক ১৯৮৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। ডিআইজি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, রাজশাহী রেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জে ছিলেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ; পরীক্ষা স্থগিত

শহীদুলের বাড়ি কানাডা জার্মানি

আপডেট সময় : ১০:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে এম শহীদুল হকের শত কোটি টাকার সম্পদের দলিলসহ বিভিন্ন নথি খুঁজে পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার এক আত্মীয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে নথিগুলো জব্দ করা হয়। ওই সব নথির মধ্যে জার্মানির বন শহরে থাকা বাড়ির মূল দলিল এবং কানাডার টরন্টোতে থাকা আরেক বাড়ির মূল দলিল পাওয়া গেছে। ওসব বাড়ি বিলাসবহুল বলে জানা গেছে। দুদক কর্মকর্তাদের দাবি, জব্দ হওয়া নথিপত্রে কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য রয়েছে। শহীদুল হক তার সম্পদের গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো আত্মীয়দের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে গোপন করার চেষ্টা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, শহীদুল হককে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বিভিন্ন থানার হত্যা মামলায়। গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে কয়েক দফায় রিমান্ডেও নেওয়া হয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বরে একটি বাসায় অভিযান চালায়। জানা যায়, দুদক, এনবিআর ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিতে গুরুত্বপূর্ণ এসব নথি আত্মীয়ের বাসায় লুকিয়ে রাখেন শহীদুল হক। মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের সি-ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের একটি বাসায় এ অভিযান চালানো হয়। সেখানে শহীদুল হকের ছোট বোনের ননদ সম্পর্কীয় নীগার সুলতানার বাসা থেকে এসব দলিল জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, তল্লাশিকালে দুটি বস্তায় ৩৮ ধরনের ৪৮টি আলামত পাওয়া গেছে। এসবের মধ্যে বিভিন্ন মূল্যবান সম্পত্তির দলিল, গোপনীয় চুক্তিপত্র, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, বন্ড, এফডিআর, সংঘ স্মারক, অফার লেটার, ব্যাংক হিসাব বিবরণীসহ নানান গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, নথিগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, এসবের মধ্যে রয়েছে শহীদুল হকের বাবা ও মায়ের নামে গড়া মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকার স্থায়ী আমানত ও এফডিআরের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। এ ছাড়া ফারমার্স ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ সঞ্চিত রয়েছে। এ ছাড়া তার রাজধানীর গুলশান, ভাটারা, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে, সোনারগাঁয়, সদর, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, পূর্বাচল এবং গাজীপুরে বিপুল পরিমাণ সম্পদের দলিল রয়েছে। মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের তিনটি শাখায় ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর, ফারমার্স ব্যাংকের ৮টি হিসাবে ৪ কোটি ৭০ লাখ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চারটি হিসাবে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকাসহ মোট ১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার এফডিআরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে এ ফাউন্ডেশনের নামে প্রায় অর্ধশতাধিক সঞ্চয়ী হিসাব ও এফডিআরের নথিপত্র পেয়েছে দুদক।

সূত্র জানায়, ওই দুই বস্তায় বিপুল পরিমাণ সম্পদের দলিল ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কাগজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকার গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সাতটি পৃথক দলিল, সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ঢাকার পাঁচটি, উত্তরার দুটি, কেরানীগঞ্জের দুটি, মোহাম্মদপুরে দুটি, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও ফতুল্লার ১০টি দলিল রয়েছে।

উল্লেখ্য, এ কে এম শহীদুল হক ১৯৮৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। ডিআইজি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, রাজশাহী রেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জে ছিলেন।