নিউজ ডেস্ক:
বিয়ের মেকআপ হতে হবে দীর্ঘস্থায়ী। তাই মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ভালোমানের এবং ত্বকের জন্য মানানসই প্রাইমার লাগাতে হবে। এরপর মূল মেকআপে যেতে হবে। কখনও স্বাভাবিক গায়ের রঙের তুলনায় বেশি হালকা ফাউন্ডেশন বেছে নেয়া ঠিক নয়। এতে দেখতে অস্বাভাবিক লাগতে পারে। ত্বকের টোন অনুযায়ী কনসিলার দিয়ে চোখের কালো দাগ ঢেকে বিয়ের মেকআপের বেজটা ত্বকের রঙ অনুযায়ী করে নিতে হয়। সেক্ষেত্রে অনুজ্জ্বল ত্বকে আভা আনবে বেগুনি রঙের পাউডার। আর সবুজ ও নীল রঙের পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে ধবধবে ফর্সা ত্বকের জন্য। প্রাণহীন ত্বকে প্রাণের পরশ দিতে গোলাপি রঙ ব্যবহার করা হয়। যাদের গায়ের রঙ শ্যামবর্ণ তাদের ত্বকে কমলা রঙের পাউডার লাগালে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখায়। ফাউন্ডেশন ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে ত্বকে মিশিয়ে নিতে হবে যেন ভেসে না থাকে। মেকআপের আগে ত্বকে ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিলে মেকআপ বেইস সুন্দরভাবে বসে। শীতে ত্বক মলিন হয়ে যায়। বিয়ের আগে ত্বকের বাড়তি যত্ন নিয়ে সবাই বেশ তোড়জোড় শুরু করে দেয়। তবে সুন্দর ত্বক পেতে যত্নের মাত্রা বেড়ে গেলে তা আবার হিতে বিপরীত হতে পারে। বিয়ের অন্তত ছয় সপ্তাহ আগে ত্বকের উপযোগী ট্রিটমেন্ট করানো যেতে পারে। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় অনেকের ত্বকই স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কালচে হয়ে যায়। এ ধরনের পরিস্থিতি ত্বকের পরিবর্তীত রঙের সঙ্গে মানিয়ে ফাউন্ডেশন বাছাই করতে হবে। ত্বকের উজ্জ্বলভাব ফিরে পেতে নিতে হবে মেকআপের সাহায্য। ত্বকের উঁচু অংশগুলোতে হাইলাইটার বুলিয়ে নিন। বিয়ের কনেদের সোনালি বা হালাকা গোলাপি শেডের হাইলাইটারে বেশি ভালো লাগবে। নাকের উপরে, গালের উঁচু অংশে, ঠোঁটের উপরে, থুতনিতে এবং কপালে হালকা করে হাইলাইটার বুলিয়ে নিতে হবে। দিনের অনুষ্ঠানে হালকা মেকআপই উপযোগী। কারণ দিনের অনুষ্ঠানে সাজের ক্ষেত্রে ‘ন্যাচারাল লুক’ ধরে রাখা খুবেই জরুরি। রাতের আয়োজনে ভারী মেকআপ করা যেতে পারে। শীতে ঠোঁটের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে ঠোঁট ফাটা বা চামড়া ওঠার সমস্যা দেখা দেয়। এ রকম ঠোঁটে কোনো লিপস্টিকই ভালো লাগবে না। তাই নিয়মিত ঠোঁট স্ক্রাব করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। আর যখনই ঠোঁট শুষ্ক মনে হবে তখনই লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে।
চোখের জন্য শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে আইশ্যাডোর প্রয়োজন হয়। লাল শাড়ির সঙ্গে নীল আইশ্যাডো ভালো মানায়। দিনের সাজে চোখের মেকআপের জন্য
প্যাস্টেল শেড যেমন হালকা নীল, হালকা সবুজ, হালকা বেগুনি ইত্যাদি রঙ বেছে নেয়া যেতে পারে। সোনালি শিমারের বদলে ব্রঞ্জ বা ম্যাট সিলভার রং বেছে নিতে পারেন। তা ছাড়া সোনালি রঙের ছোঁয়া তো অবশ্যই থাকবে। ভ্রুর ঠিক নিচে সিলভার হোয়াইট কালারের আইশ্যাডো দিয়ে হাইলাইট করাটা অনেকের পছন্দ। অনেকে আইল্যাশ কালার ব্যবহার করে চোখের পাপড়িকে ওয়েভি করে নিতেও বেশ পছন্দ করেন। কেউ কেউ চোখে ফলস আইল্যাশও লাগান। রাতে বিয়ে হলে যে কোনো রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করা যায়। চোখের পাতায় ঘন করে ওয়াটারপ্রুফ মাশকারাও লাগিয়ে নিতে পারেন। এ সবই এখনকার কনেদের পছন্দের বিয়ের সাজ।
আফরোজা পারভিন বলেন, বিয়ের সাজে কনের কাপড়ের ধরনটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই শাড়ি দেখেই কনের বিয়ের সাজের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। আবার কনের পেশা বা পছন্দের ওপর নির্ভর করে স্পেশাল লুক আনা সম্ভব হয়। বিয়ের সাজের তিনটি অনুষ্ঠানকে মাথায় রেখেই সাজে পরিবর্তন আসে। গায়েহলুদ, বিয়ে ও বউভাতের সাজকে তিনটি ট্রেন্ডি, ফিউশন ও ট্র্যাডিশনে ভাগ করা হয়েছে। কনের একেক অনুষ্ঠানে একেক লুক দিতেই সাজে এই ভিন্নতা। তিনটি লুকের মধ্যে ট্র্যাডিশন লুকে চোখের ওপর বেশি কাজ করা হয়। ঠোঁট গাঢ় লাল করা হয়। চুল ফুলিয়ে ট্র্যাডিশনাল করা হয়। আর মডার্ন লুকে কনের সাজে স্মোকি ভাব ফুটিয়ে তোলা হয়। যা এ সময়ের কনেদের বেশ পছন্দের।
খেঁয়াল রাখতে হবে নিজের রুচি এবং ব্যক্তিত্যের ক্ষেত্রে। পোশাকের ফেব্রিক, রঙ ও গহনা নির্বাচনে সচেতন থাকুন। অন্য কাউকে এই রঙ বা ধরনের পোশাক ভালো লেগেছে বলেই যে আপনাকেও ভালো লাগবে এমন কোনো কথা নেই। তাই চেষ্টা করুন আপনাকে মানায় এমন ফেব্রিকের ও রঙের পোশাক ও গহনা পরতে। নিজের সৌন্দর্য পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলতে ব্যক্তিত্ব, পরিবেশ-পরিস্থিতি ও নিজের বা প্রিয়জনের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে পারেন। তবে সাজের ক্ষেত্রে ত্বকের স্কিনটোনের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সাজে নিজস্ব কোনো পছন্দ থাকলে তা বিউটিশিয়ানকে ভালো করেই বুঝিয়ে দিতে হবে।