শিরোনাম :
Logo তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইনসাফভিত্তিক মানবতাবাদী বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারঃ মোশাররফ হোসেন মিয়াজী Logo পলাশবাড়ীতে বিএনপির বিশাল বিজয় র‌্যালি Logo জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিতে ইবিতে সংগ্রহশালা উদ্বোধন Logo ৫ ই আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কয়রা থানা বিএনপি’র বিজয় মিছিল Logo জুলাই শহীদদের রক্ত শুধু অতীত নয়, পথচলার অঙ্গীকার : জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন Logo গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন নতুন বাংলাদেশে নব্য ফ্যাসিবাদের ঠাঁই হবে না : হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান Logo জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে কচুয়ায় জামায়াতের গণমিছিল ও সমাবেশ Logo লস্কর সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তরুণ ও মেধাবী অভিনেতা জাহাঙ্গীর রাজু Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিল Logo তালাকের ক্ষোভে জামাতার বিরুদ্ধে শাশুড়ির ধর্ষণ মামলা

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট, ক্রেতার ভোগান্তি বাড়ছে

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৫:২০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৭৪১ বার পড়া হয়েছে

বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট বেড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজারে হাতে গোনা দু-তিনটি ব্র্যান্ডের তেল মিললেও চাহিদার তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ একেবারেই কম বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।

তবে বাজারে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সরবরাহ ঠিক আছে, পণ্য দুটির দামও কিছুটা কমেছে। বাজারে প্রায় এক মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট চলছে। সরকার ভোজ্য তেল আমদানিতে ভ্যাট কমালে সরবরাহ কিছুটা বাড়ে। তবে এক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ আবার কমিয়ে দিয়েছে কম্পানিগুলো।

তবে বাজারে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সরবরাহ ঠিক আছে, পণ্য দুটির দামও কিছুটা কমেছে।

গতকাল রবিবার রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাড্ডার মুদি বিক্রেতা মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আগে নিয়মিত পাঁচ থেকে ছয়টি কম্পানি তেল দিত, দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে মাত্র দুটি কম্পানি তেল দিচ্ছে, যা দিয়ে আমাদের চাহিদার ১০ শতাংশও পূরণ হচ্ছে না। বাকি কম্পানিগুলোর ডিলাররা জানাচ্ছেন, তারা নাকি কম্পানি থেকে তেল পাচ্ছেন না। আগে সপ্তাহে আমাকে তিনটি কম্পানি প্রায় ২০ কার্টন করে তেল দিত। এখন সেই তিন কম্পানি একটাও তেল দিচ্ছে না।’ তিনি বলেন, এখন ক্রেতারা দোকানে এসেই আগে তেল খোঁজেন। যদি তেল দিতে না পারি, পণ্য কিনতে চান না তারা। বাজারে নতুন করে তেলের দাম বাড়াতেই কম্পানিগুলো এমন টালবাহানা করছে বলেও এই বিক্রেতা জানান।

কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানের বিক্রয় সহকারী বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে চাহিদার অর্ধেকও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছি না।

কম্পানিগুলো ডিলারদের ঠিকমতো তেল না দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দাম বাড়াতেই এমন কারসাজি হচ্ছে।’
জোয়ারসাহারা বাজারে কথা হয় পারভীন আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারের বেশ কয়েকটি মুদি দোকান ঘুরেও এক লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পাইনি। দু-একটি দোকানে পাঁচ লিটারের বোতল মিলছে। তাই রোববার (১ ডিসেম্বর) বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনলাম।’

ভোজ্য তেল সরবরাহকারী বড় এক প্রতিষ্ঠানের বিতরণ শাখার প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা এলসি খুলতে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি না; বরং একাধিকবার এলসি বাতিল করা হয়েছে। যার কারণে বাজারে আমাদের তেল সরবরাহ কমে গেছে।’

বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভোজ্য তেলের ওপর বর্তমানে প্রযোজ্য আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে ১৬ অক্টোবর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপনীয় ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়। ফলে বর্তমানে শুধু আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট চালু রয়েছে।

টিসিবির হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে দুই টাকা ও পাম তেলের দাম এক টাকা কমেছে। বর্তমানে এক লিটার খোলা সয়াবিন ১৬৫ থেকে ১৬৮ টাকা এবং এক লিটার খোলা পাম তেল ১৫৭ থেকে ১৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৭ থেকে ১৭০ টাকায়।

ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজল বলেন, ‘ভ্যাট কমানোসহ নানা সুবিধা দেওয়ার পরও ভোজ্য তেল সরবরাহকারী কম্পানিগুলো তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। রমজান মাস আসছে। এখনি যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এবারের রমজান অস্বস্তিকর হতে পারে। আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে এখন থেকেই ব্যবস্থা নেবে। রমজানের এক মাস বা ১৫ দিন আগে ব্যবস্থা নিলে এর সুফল ভোক্তারা পাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাজারে খোলা তেল পাওয়া গেলেও ভেজালের ভয়ে অনেক ভোক্তা খেতে চায় না। আবার অনেকে এটি খেতে অভ্যস্ত না হওয়ায় খোলা তেল কিনতে আগ্রহী না।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইনসাফভিত্তিক মানবতাবাদী বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারঃ মোশাররফ হোসেন মিয়াজী

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট, ক্রেতার ভোগান্তি বাড়ছে

আপডেট সময় : ০৯:৩৫:২০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট বেড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজারে হাতে গোনা দু-তিনটি ব্র্যান্ডের তেল মিললেও চাহিদার তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ একেবারেই কম বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।

তবে বাজারে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সরবরাহ ঠিক আছে, পণ্য দুটির দামও কিছুটা কমেছে। বাজারে প্রায় এক মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট চলছে। সরকার ভোজ্য তেল আমদানিতে ভ্যাট কমালে সরবরাহ কিছুটা বাড়ে। তবে এক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ আবার কমিয়ে দিয়েছে কম্পানিগুলো।

তবে বাজারে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সরবরাহ ঠিক আছে, পণ্য দুটির দামও কিছুটা কমেছে।

গতকাল রবিবার রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাড্ডার মুদি বিক্রেতা মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আগে নিয়মিত পাঁচ থেকে ছয়টি কম্পানি তেল দিত, দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে মাত্র দুটি কম্পানি তেল দিচ্ছে, যা দিয়ে আমাদের চাহিদার ১০ শতাংশও পূরণ হচ্ছে না। বাকি কম্পানিগুলোর ডিলাররা জানাচ্ছেন, তারা নাকি কম্পানি থেকে তেল পাচ্ছেন না। আগে সপ্তাহে আমাকে তিনটি কম্পানি প্রায় ২০ কার্টন করে তেল দিত। এখন সেই তিন কম্পানি একটাও তেল দিচ্ছে না।’ তিনি বলেন, এখন ক্রেতারা দোকানে এসেই আগে তেল খোঁজেন। যদি তেল দিতে না পারি, পণ্য কিনতে চান না তারা। বাজারে নতুন করে তেলের দাম বাড়াতেই কম্পানিগুলো এমন টালবাহানা করছে বলেও এই বিক্রেতা জানান।

কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানের বিক্রয় সহকারী বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে চাহিদার অর্ধেকও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছি না।

কম্পানিগুলো ডিলারদের ঠিকমতো তেল না দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দাম বাড়াতেই এমন কারসাজি হচ্ছে।’
জোয়ারসাহারা বাজারে কথা হয় পারভীন আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারের বেশ কয়েকটি মুদি দোকান ঘুরেও এক লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পাইনি। দু-একটি দোকানে পাঁচ লিটারের বোতল মিলছে। তাই রোববার (১ ডিসেম্বর) বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনলাম।’

ভোজ্য তেল সরবরাহকারী বড় এক প্রতিষ্ঠানের বিতরণ শাখার প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা এলসি খুলতে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি না; বরং একাধিকবার এলসি বাতিল করা হয়েছে। যার কারণে বাজারে আমাদের তেল সরবরাহ কমে গেছে।’

বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভোজ্য তেলের ওপর বর্তমানে প্রযোজ্য আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে ১৬ অক্টোবর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপনীয় ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়। ফলে বর্তমানে শুধু আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট চালু রয়েছে।

টিসিবির হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে দুই টাকা ও পাম তেলের দাম এক টাকা কমেছে। বর্তমানে এক লিটার খোলা সয়াবিন ১৬৫ থেকে ১৬৮ টাকা এবং এক লিটার খোলা পাম তেল ১৫৭ থেকে ১৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৭ থেকে ১৭০ টাকায়।

ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজল বলেন, ‘ভ্যাট কমানোসহ নানা সুবিধা দেওয়ার পরও ভোজ্য তেল সরবরাহকারী কম্পানিগুলো তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। রমজান মাস আসছে। এখনি যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এবারের রমজান অস্বস্তিকর হতে পারে। আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে এখন থেকেই ব্যবস্থা নেবে। রমজানের এক মাস বা ১৫ দিন আগে ব্যবস্থা নিলে এর সুফল ভোক্তারা পাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাজারে খোলা তেল পাওয়া গেলেও ভেজালের ভয়ে অনেক ভোক্তা খেতে চায় না। আবার অনেকে এটি খেতে অভ্যস্ত না হওয়ায় খোলা তেল কিনতে আগ্রহী না।’