নিউজ ডেস্ক:
প্রকৃতি আমাদের চারপাশে নানা রকম রহস্যময় উপাদান সাজিয়ে রেখেছে। এই রহস্যময়তার এক অন্যতম উপাদান ড্রাগন ফুল। মাথার খুলির মতো দেখতে শুকিয়ে যাওয়া এই ফুলটির দিকে তাকালে বিশ্বাস করা কঠিন যে, এই ফুলটি ফোটার সময় কত সুন্দর ছিল।
ইউরোপ কিংবা উত্তর আমেরিকার শৌখিন মানুষদের বাগানের অতি পরিচিত একটি ফুলের নাম ড্রাগন ফুল। বাহারি বর্ণের, আকারে বেশ বড় এই ফুলটি ফুটে থাকার সময় দেখতে অতি চমৎকার হলেও যখন এর পাপড়ি শুকিয়ে মরে যায় তখন তা ভয়ংকর মাথার খুলির আকৃতি ধারণ করে। আর এই কারণেই ফুলটির নাম রাখা হয়েছে ড্রাগন ফুল।
শত শত বছর ধরে ড্রাগন ফুল নিয়ে প্রচুর গল্পের প্রচলন হয়েছে। প্রাচীনকালে বিশ্বাস করা হতো, যে মহিলা শুকনো মাথার খুলি সদৃশ ড্রাগন ফুল খাবে সে আবার তার হারানো রূপ ফিরে পাবে। এছাড়া তারা বিশ্বাস করত, এই ফুল বাড়িতে ছড়িয়ে রাখলে কোনো যাদু বা অভিশাপ ওই বাড়িতে স্পর্শ করবে না।
রানি ভিক্টোরিয়ার শাসনামলে অদ্ভুত রূপের জন্য ড্রাগন ফুলকে বঞ্চনা, সন্দেহ ও রহস্যময়তার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। পাশাপাশি একে করুণার প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করা হতো।
পৃথিবীর অধিকাংশ ফুল ফোটার সময় যে রূপ নিয়ে ফোটে, শুকিয়ে মরে যাবার সময়ও তার ওই একই রূপ থাকে। কিন্তু ড্রাগনই একমাত্র ফুল যার পাপড়িগুলো শুকিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে তা ভয়ংকর মাথার খুলির রূপ ধারণ করে। কিন্তু কেন এমন হয়?
এ বিষয়ে বায়োকেমিস্ট জোনা এল রোজ বলেন, ড্রাগন ফুলের দ্বিমুখী গঠনের কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। মাথার খুলিগুলো হচ্ছে অঙ্কুরিত ফুলের ডিম্বাশয়। পরাগায়নের পর ফুলের পাপড়িগুলো যখন পূর্ণতা পায় তখন এই ডিম্বাশয়গুলোকে ছোট দেখায়। এরপর ফুলগুলো যখন শুকিয়ে যায় তখন এই ডিম্বাশয়গুলো চোখ ও মুখের আকৃতি ধারণ করে যা মাথার খুলির মতো দেখায়।
তিনি আরো বলেন, কেউ যদি এই ফুলগুলো ফোটার সময়কার আকৃতি না দেখে তবে তার জন্য এটা বিশ্বাস করা কঠিন হবে যে আসলেই এর পূর্বের রূপ কেমন ছিল। আবার কেউ যদি এটাকে ছবিতে দেখে তবে তার মনে হবে এটি নিশ্চয় ফটোশপের কারসাজি।