শুক্রবার | ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo নোবিপ্রবির মেগা প্রকল্প সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চায় ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী Logo খুবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৯৭ পরিক্ষার্থী  Logo টেকনাফে ইঞ্জিন বিকল হওয়া যাত্রীবাহী বোটসহ ৪৫ জন যাত্রী উদ্ধার Logo খুবিতে ইউনেস্কো ও ইউজিসির উদ্যোগে পিয়ার-টু-পিয়ার ওরিয়েন্টেশন Logo সাতক্ষীরা–কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযান পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল জব্দ Logo আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক Logo খুবিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা: নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা Logo প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির ‘হেমন্তসন্ধ্যা ও হাঁস পার্টি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে

নোবিপ্রবির মেগা প্রকল্প সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চায় ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৮:০৪ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৭০৫ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) একাডেমিক ভবন ৩ এর অবশিষ্ট অংশ নির্মাণ প্রকল্পসহ ৩৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করার দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির দুইদিনব্যাপী এক অনলাইন জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। জরিপে ২৭৭৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

জরিপে দেখা যায়, ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী চায় নোবিপ্রবির মেগা প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে। শিক্ষার্থীরা মনে করছে, সেনাবাহিনী কে হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে শেষ হবে এবং কাজও মান সম্পূর্ণ হবে।  এর আগে গত ১ ডিসেম্বর নোবিপ্রবির অসম্পূর্ণ একাডেমিক ভবন সম্পূর্ণ করাসহ মোট ১১টি প্রকল্পে ৩৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের বাজেট অনুমোদন দেয় একনেক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিডি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বরাদ্দকৃত ৩৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ ব্যয় হবে একাডেমিক ভবন-৩ নির্মাণে, যার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এছাড়া স্কুল ও কলেজ নির্মাণে ৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, মসজিদের দ্বিতীয় তলা নির্মাণে ৩ কোটি ৩ লাখ টাকা, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি আধুনিকায়নে ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা, ১০০ কেভি সাব-স্টেশন স্থাপনে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, শিক্ষক ও কর্মচারী ভবনে লিফট স্থাপনে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ১৫০ কেভি জেনারেটর ক্রয়ে ৬২ লাখ টাকা, পুরো ক্যাম্পাসে এলইডি লাইট স্থাপনে ৭২ লাখ টাকা, ক্যাম্পাসের আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ সংযোগে ৬ কোটি টাকা, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ১১৭ কোটি টাকা এবং অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম ক্রয়ে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের এপ্রিলে নোবিপ্রবির ১০ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ৩ এর নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে জি কে শামীমের সুপারিশে কাজটি নেয় জি কে স্বপনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজটি সম্পন্ন করার জন্য শুরুতে ৩০ মাস সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু নিদিষ্ট সময় পার হলেও তিন তলা পর্যন্ত আংশিকভাবে কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে তৎকালীন সরকার দুর্নীতি বিরোধী অভিযান পরিচালনা করলে প্রকল্প থেকে জি কে স্বপনের প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়া হয়। ফলশ্রতিতে দীর্ঘ মেয়াদিভাবে একাডেমিক ভবন ৩ এর নির্মাণকাজ আটকে যায়। এতে তীব্র ক্লাসরুমসহ অবকাঠামোগত সংকটে পড়ে নোবিপ্রবি।

দীর্ঘদিন পর প্রকল্পের বাজেট পাশ হওয়ার সংবাদে নোবিপ্রবিতে আনন্দর জোয়ার দেখা যায়। তবে এই মেগা প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে দিতে দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। জিহাদুল ইসলাম রাফি নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, নোবিপ্রবির একাডেমিক ভবন-৩ এর নির্মাণ প্রকল্পে ৩৩৪ কোটি টাকা পাশ হলো। কিন্তু এই পাশ হওয়ার মাধ্যমেই রক্তচোষা ধান্দাবাজদের কূটবুদ্ধি আর দুর্নীতির পথ যেনো সুগম না হয়। বিগ বাজেটের একটি প্রকল্প হওয়ায় প্রশাসন এবং কর্তৃপক্ষের আশপাশে ঘুরঘুর করতে থাকা আবর্জনাগুলো যেনো বিন্দুমাত্র নয়ছয় করার সাহস না দেখায়। সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং একটি দাবিতে আমাদের সোচ্চার হতে হবে এবং আর্মির হাতে কাজ দিতে হবে। এতে করে কাজ যেমন দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হবে, তেমনি দুর্নীতি, ধান্দাবাজি, বাটপারি এসব সর্বোচ্চ মাত্রায় কমানো যাবে বলে মনে করি।

নিশাদ আহমেদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কাজ শেষে আমরা এই ভবনের সুফল নাও পেতে পারি, কিন্তু আমরা চাই, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনসহ আর কোনো কিছুর বলি যেন এই প্রকল্প না হয়। অতএব, কাজটি সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হোক এবং সঠিক পরিদর্শনের মাধ্যমে যথাসময়ে কাজটি শেষ করা হোক।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ রেজওয়ানুল হক বলেন, আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে, এই জন্য যা করার প্রয়োজন আমরা তাই করবো। সেনাবাহিনীকে কাজ দেওয়ার বিষয়ে আমরাও একমত।

সেনাবাহিনীকে কাজ দেওয়ার প্রসঙ্গে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, তার আগে এখনো কিছু প্রক্রিয়া বাকি। যখন ঠিকাদারের বিষয় আসবে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কাজটি কিভাব করা হবে। আমরা চাচ্ছি কাজটি দ্রুত শুরু করতে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের দাবি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নোবিপ্রবির মেগা প্রকল্প সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চায় ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী

নোবিপ্রবির মেগা প্রকল্প সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চায় ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী

আপডেট সময় : ০৩:৫৮:০৪ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) একাডেমিক ভবন ৩ এর অবশিষ্ট অংশ নির্মাণ প্রকল্পসহ ৩৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করার দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির দুইদিনব্যাপী এক অনলাইন জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। জরিপে ২৭৭৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

জরিপে দেখা যায়, ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী চায় নোবিপ্রবির মেগা প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে। শিক্ষার্থীরা মনে করছে, সেনাবাহিনী কে হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে শেষ হবে এবং কাজও মান সম্পূর্ণ হবে।  এর আগে গত ১ ডিসেম্বর নোবিপ্রবির অসম্পূর্ণ একাডেমিক ভবন সম্পূর্ণ করাসহ মোট ১১টি প্রকল্পে ৩৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের বাজেট অনুমোদন দেয় একনেক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিডি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বরাদ্দকৃত ৩৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ ব্যয় হবে একাডেমিক ভবন-৩ নির্মাণে, যার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এছাড়া স্কুল ও কলেজ নির্মাণে ৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, মসজিদের দ্বিতীয় তলা নির্মাণে ৩ কোটি ৩ লাখ টাকা, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি আধুনিকায়নে ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা, ১০০ কেভি সাব-স্টেশন স্থাপনে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, শিক্ষক ও কর্মচারী ভবনে লিফট স্থাপনে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ১৫০ কেভি জেনারেটর ক্রয়ে ৬২ লাখ টাকা, পুরো ক্যাম্পাসে এলইডি লাইট স্থাপনে ৭২ লাখ টাকা, ক্যাম্পাসের আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ সংযোগে ৬ কোটি টাকা, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ১১৭ কোটি টাকা এবং অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম ক্রয়ে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের এপ্রিলে নোবিপ্রবির ১০ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ৩ এর নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে জি কে শামীমের সুপারিশে কাজটি নেয় জি কে স্বপনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজটি সম্পন্ন করার জন্য শুরুতে ৩০ মাস সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু নিদিষ্ট সময় পার হলেও তিন তলা পর্যন্ত আংশিকভাবে কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে তৎকালীন সরকার দুর্নীতি বিরোধী অভিযান পরিচালনা করলে প্রকল্প থেকে জি কে স্বপনের প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়া হয়। ফলশ্রতিতে দীর্ঘ মেয়াদিভাবে একাডেমিক ভবন ৩ এর নির্মাণকাজ আটকে যায়। এতে তীব্র ক্লাসরুমসহ অবকাঠামোগত সংকটে পড়ে নোবিপ্রবি।

দীর্ঘদিন পর প্রকল্পের বাজেট পাশ হওয়ার সংবাদে নোবিপ্রবিতে আনন্দর জোয়ার দেখা যায়। তবে এই মেগা প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে দিতে দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। জিহাদুল ইসলাম রাফি নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, নোবিপ্রবির একাডেমিক ভবন-৩ এর নির্মাণ প্রকল্পে ৩৩৪ কোটি টাকা পাশ হলো। কিন্তু এই পাশ হওয়ার মাধ্যমেই রক্তচোষা ধান্দাবাজদের কূটবুদ্ধি আর দুর্নীতির পথ যেনো সুগম না হয়। বিগ বাজেটের একটি প্রকল্প হওয়ায় প্রশাসন এবং কর্তৃপক্ষের আশপাশে ঘুরঘুর করতে থাকা আবর্জনাগুলো যেনো বিন্দুমাত্র নয়ছয় করার সাহস না দেখায়। সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং একটি দাবিতে আমাদের সোচ্চার হতে হবে এবং আর্মির হাতে কাজ দিতে হবে। এতে করে কাজ যেমন দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হবে, তেমনি দুর্নীতি, ধান্দাবাজি, বাটপারি এসব সর্বোচ্চ মাত্রায় কমানো যাবে বলে মনে করি।

নিশাদ আহমেদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কাজ শেষে আমরা এই ভবনের সুফল নাও পেতে পারি, কিন্তু আমরা চাই, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনসহ আর কোনো কিছুর বলি যেন এই প্রকল্প না হয়। অতএব, কাজটি সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হোক এবং সঠিক পরিদর্শনের মাধ্যমে যথাসময়ে কাজটি শেষ করা হোক।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ রেজওয়ানুল হক বলেন, আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে, এই জন্য যা করার প্রয়োজন আমরা তাই করবো। সেনাবাহিনীকে কাজ দেওয়ার বিষয়ে আমরাও একমত।

সেনাবাহিনীকে কাজ দেওয়ার প্রসঙ্গে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, তার আগে এখনো কিছু প্রক্রিয়া বাকি। যখন ঠিকাদারের বিষয় আসবে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কাজটি কিভাব করা হবে। আমরা চাচ্ছি কাজটি দ্রুত শুরু করতে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের দাবি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ