নিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দেশটির সেনাদের অমানবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় নেত্রী অং সান সু চি’র নোবেল পুরস্কার বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের আইনজীবীরা।
মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে ‘ফেয়ার লইয়ারস অ্যাসোসিয়েশন’। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তরা এসব দাবি জানান।
একইসঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশে বাধা না দিয়ে আশ্রয়ের দাবি জানিয়েছেন তারা।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনা-পুলিশ সহিংস অভিযান চালাচ্ছে। এই অভিযানে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের হতাহতের খবর আসছে। অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের জন্য রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি বেড়েছে। অনুপ্রবেশের সময় বিজিবি রোহিঙ্গাদের আটক করে ফেরত পাঠাচ্ছে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আইনজীবীরা বলেন, অং সান সু চি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু তার দেশের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি নীরব ভূমিকা পালন করছেন। তার নোবেল পুরস্কার বাতিল করা হোক।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন, চলতি বছরের ৯ অক্টোবরের পর থেকে নতুন করে মিয়ানমারে সংঘাত শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে।
মংডু শহরতলির পাঁচটি গ্রামের ১২ শতাধিক বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ এবং নির্বিচার গ্রেফতাতারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ আক্রান্ত এলাকায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকেও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, চলমান এই সংঘাতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এসব নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অনেকেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে হেঁটে বা নদীপথে বাংলাদেশের দিকে আসছে আশ্রয়ের জন্য।
এই পরিস্থিতিতে মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান আইনজীবীরা।
সংগঠনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমান সুমন ছাড়াও মানববন্ধনে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের, মো. মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট বাদশা, অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ মোল্লা, অ্যাডভোকেট শাহ আলম ও অ্যাডভোকেট ফারহানা বেগম প্রমুখ।