নিউজ ডেস্ক:
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ‘জাতিগত নিধন’-এর শিকার হয়ে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বুধবার উখিয়া উপজেলার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যম্প পরিদর্শন শেষেসাংবাদিকদের বলেন,‘জাতিগত নিধনের হাত থেকে নিজেদের জীবন বাঁচাতে তারা বাধ্য হয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে’।
বিনালি ইলদিরিম রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো এবং নিরাপদে বসবাসের জন্য আর্ন্তজাতিক মহলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান ।
বিনালি ইলদিরিম বুধবার বেলা ১১ টার দিকে বিমান যোগে কক্সবাজার পৌঁছেন। ওখান থেকে তিনি সারাসরি যান উখিয়ার বালুখালী হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখানে তিনি একটি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন এবং ২টি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করেন। ওই ক্যাম্পে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ করেন। ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের মধ্যে খাবার বিতরণও করেন।
এই সময়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। এ জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, তুরস্ক রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান বিনালি ইলদিরিম।
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী এরপর যান বালুখালীর ময়নারঘোনা ক্যাম্পে। সেখানেও তিনি নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন। তাঁদের খোঁজ-খবর নেন। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম দুই দিনের সরকারি সফরে সোমবার রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেন।
মঙ্গলবার সকালে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিনি পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর করেন এবং স্মারক হিসেবে একটি চারা গাছ রোপন করেন। এছাড়াও তিনি ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাদুঘরের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন এবং বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম রোহিঙ্গাসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
তাঁর সফরকালে দু’দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে আজ দু’টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
তুরস্কের প্রথানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আঙ্কারার সমর্থন অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।