নিউজ ডেস্ক:
মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগকারীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের পর সারাবিশ্বে বিলুপ্ত প্রায় মাতৃভাষা সুরক্ষায় জাতিসংঘকে অধিক মনোযাযোগী হবার আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’র উদযাপিত হচ্ছে।
স্থানীয় সময় বেলা ১টা এক মিনিট তথা বাংলাদেশে একুশের প্রথম প্রহরে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে এক কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ইলাহি চৌধুরী বীরবিক্রম ছিলেন প্রধান অতিথি।
তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পরিণত করার জন্য প্রবাসীদের অবিস্মরণীয় ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তৌফিক ইলাহি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা আমাদের নতুন প্রজন্ম, একুশ ফেব্রুয়ারি দেখেনি, বায়ান্ন দেখেনি, সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা এখানে এসে পৌঁছেছি। আজ আমরা যে নতুন স্বপ্ন দেখছি, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করার, বাঙালি সংস্কৃতিকে চিরজাগ্রত রাখার, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্যেই শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংকল্প গ্রহণ করলাম। ’
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, কন্সাল জেনারেল শামীম আহসানও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন একুশে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
গত ২৬ বছর যাবত মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এবং বাঙালি চেতনামঞ্চের উদ্যোগে জাতিসংঘের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হলেও বাংলাদেশের একুশের প্রথম প্রহরের সাথে সঙ্গতি রেখে গত বছর থেকে ভর দুপুরে এ আয়োজন করা হচ্ছে। যদিও নিউইয়র্কের অন্যসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রাত ১২টা এক মিনিটেই শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের কর্মসূচি নেয়া হয়।
মুক্তধারার এ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে নেতৃবৃন্দ ছিলেন। প্রবাসের বিশিষ্টজন তথা লেখক-সাংবাদিক-মুক্তিযোদ্ধা-সমাজকর্মীরাও এসেছিলেন জাতিসংঘের সামনে।
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কসে আরো ১০টি স্থানে শহীদ মিনার স্থাপন করে রাত ১২টা ০১ মিনিটে প্রবাসীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সাথে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শন করেন। শিকাগোতে বাংলাদেশের অনররারী কন্সাল জেনারেল মনিরুল ইসলামের সমন্বয়ে সর্বস্তরের প্রবাসীরা শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে মহান ভাষা দিবস পালন করেন।
নিউজার্সি, বস্টন, পেনসিলভেনিয়া, আটলান্টা, লসএঞ্জেলেস, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, মিশিগান, ওয়াশিংটন মেট্র, কানেকটিকাট, মিনেসোটা প্রভৃতি স্থানেও যথাযথ মর্যাদায় একুশে উদযাপনের সংবাদ পাওয়া গেছে।