নিউজ ডেস্ক:
মেঘ-পাহাড়ের রাজ্যের নাম সাজেক ভ্যালী। অনেকে সাজেক ভ্যালীকে বাংলাদেশের ভূস্বর্গ বলে থাকেন। আকাশের নীল যেন এখানে এসে দিগন্ত ছুঁয়েছে। চারপাশে যতদূর দৃষ্টি যায়, ছোট-বড় সবুজ পাহাড়। উপর থেকে দৃষ্টি মেললে যেন সবুজ সমুদ্রের ঢেউ। একটি থেকে আরেকটি পাহাড়ের মাঝে যেন আটকে আছে সাদা মেঘের ভেলা। সাজেকের চারপাশটা যেন এক সজীব ছবি।
দেশের বৃহত্তম ইউনিয়ন সাজেক। পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় এ ইউনিয়ন। তবে সাজেকে যেতে হয় খাগড়াছড়ি সদর থেকে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা এবং বিকেল ৩টায় বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করার পর সকল গাড়ি একযোগে সাজেকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে গেছে আঁকা-বাঁকা পিচঢালা সড়ক। যাওয়ার পথে কখনো গাড়িগুলো আকাশের দিকে, কখনো পাহাড়ের গহীনের দিকে চলতে থাকে। সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে পাহাড়ি শিশুরা হাত নেড়ে অতিথিদের অভিবাদন জানায়।
খাগড়াছড়ি থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথের শেষে সাজেক। সমুদ্রপিষ্ট থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ ফুট উচ্চতায় পাকা সড়কের দুপাশে পায়ে হেটে চলার জন্য রয়েছে পরিচ্ছন্ন ফুটপাত। পাহাড়িদের এবং পর্যটকদের জন্য রয়েছে রঙ্গিন সব কটেজ। পাহাড়ের উপত্যকায় সাজানো-গোছানো শহরের নাম সাজেক। যা পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে। সাজেকে রুইলুই ও কংলাক নামে দুটি পাড়া রয়েছে। পর্যটকরা অবস্থান করেন রুইলুই পাড়ায়। সেনাবাহিনী পরিচালিত সাজেক ও রুনময় নামে দুটি রিসোর্ট রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু রিসোর্ট রয়েছে পাহাড়ের ঢালে। এসব রিসোর্টের বারান্দায় বসেই মেঘ-পাহাড়ের মিতালী দেখার সুযোগ মেলে।
কংলাক পাড়ায় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এজন্য পায়ে হেটে পাহাড় বয়ে উঠতে হয়। সাজেকে এটাই সবচেয়ে উঁচুস্থান। কংলাক পাড়া থেকে এক নজরে সাজেক দেখার সুযোগ মেলে। তবে সাজেকে হ্যালিপ্যাডে পর্যটকরা গোধূলী বরণ করেন। এখানে বসেই দল বেধে গান ধরেন পর্যটকরা। সন্ধ্যা নামার পরে অনেকে ফানুস উঁড়িয়ে দেন। তবে অন্ধকারটা ঘনিভূত হবার সাথে সাথেই সবাই ফিরে আসেন রুইলুই পাড়ায়। এখানে সড়কের পাশে পাহাড়িরা কমলা, আনারস, কলা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল বিক্রি করেন। পাহাড়ের এসব ফল খুব সুস্বাদু। বাসস।