বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারের কনডেম সেলে নেওয়া হয়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বলেন, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আসামি র্যাবের সাবেক ক্যাম্প কমান্ডার বরখাস্ত মেজর আরিফ হোসেন এবং লে. কমান্ডার (বরখাস্ত) মাসুদ রানাকে এ কারাগারে আনা হয়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, তার কারাগার থেকেও ওই মামলার তিন আসামি র্যাব-১১এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (বরখাস্ত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সিদ্দিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেনকে একই সময়ে আনা হয়। রাতেই তাদের ফাঁসির কনডেম সেলে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার সকাল ৭টার দিকে দুটি প্রিজন ভ্যানে কড়া প্রহরায় তাদের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এবং কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়।
আলোচিত সাত খুনের মামলায় গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন ওই পাঁচজনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় ওই পাঁচজনসহ ২৩ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ মামলার ১২ আসামি পলাতক।
রায়ে ৩৫ আসামির বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। নৃশংস, রোমহর্ষক ওই ঘটনার ২ বছর ৮ মাস ১৯ দিন পর এ রায় ঘোষিত হয়। রায় ঘোষণার সময় ৩৫ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা ২৩ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৭ জনই র্যাবের সাবেক সদস্য। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত র্যাব-১১-এর সাবেক সদস্যরা হলেন চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকিরা হলেন সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, তার সহযোগী মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী, আলী মোহাম্মদ, আবুল বাশার, মোর্তুজা জামান (চার্চিল), সেলিম, সানাউল্লাহ ছানা, ম্যানেজার শাহজাহান ও ম্যানেজার জামাল উদ্দিন। এর মধ্যে সেলিম, সানাউল্লাহ ও শাহজাহান পলাতক। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া ৯ জনও র্যাবের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা ও সদস্য। তাদের মধ্যে কনস্টেবল হাবিবুর রহমানকে ১৭ বছর; এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল বাবুল হাসান, করপোরাল মোখলেসুর রহমান, ল্যান্স করপোরাল রুহুল আমিন ও সিপাহি নুরুজ্জামানকে ১০ বছর এবং এএসআই বজলুর রহমান ও হাবিলদার নাসির উদ্দিনকে ৭ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।দণ্ডপ্রাপ্ত ৩৫ আসামির মধ্যে নূর হোসেনসহ ২৩ জন আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে রায় শোনেন। বাকি ১২ আসামি পলাতক।