মু.ওয়াছীঊদ্দিন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ- লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে আবারও ধস দেখা দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমেও বাঁধে ধস দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটারে বাঁধে ধস নামে। এর আগে শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাত থেকে ধস দেখা দেয়। গত দেড় বছরে ওই বাঁধে অন্তত ৮বার ধস নেমেছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু না হওয়ায় বাঁধের দুই পাশের এলাকায় অব্যাহতভাবে ভাঙছে। আশপাশের এলাকায় ভাঙনের কারণে বাঁধ ধসে পড়েছে।
অনিয়মের মধ্য দিয়ে নিন্মমানের কাজ করায় বার-বার বাঁধে ধস নামছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
কমলনগর রক্ষায় আরো ৮ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের দাবি তাদের।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রকল্প ইনচার্জ মো. আফছার বলেন, ধস ঠেকাতে জিও ব্যাগ (বালু ভর্তি বিশেষ ব্যাগ) ডাম্পিং করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মূসা বলেন, পানি কমতে শুরু করায় নদীর ভাঙন বেড়েছে। এর প্রভাব তীর রক্ষা বাঁধেও পড়েছে।
বাঁধ ধসের পরপরই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। কতৃপক্ষকে জানানোর পর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল এসে পরির্দশন করেছেন। এখানে ভাঙন প্রতিরোধে এক কিলোমিটার বাঁধ যথেষ্ট নয়। আরো সাড়ে ১৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে এটি অনুমোদন হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের জন্য ১৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। বরাদ্দকৃত টাকায় কমলনগরে এক কিলোমিটার, রামগতির আলেকজান্ডারে সাড়ে তিন কিলোমিটার ও রামগতিরহাট মাছঘাট এলাকায় এক কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ হওয়ার কথা। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন আলেকজান্ডার এলাকায় ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে সাড়ে তিন কিলোমিটার সফলভাবে বাস্তবায়ন করে। এদিকে ওই বরাদ্দের ৪৮ কোটি টাকায় কমলনগরে এক কিলোমিটার কাজ পায় নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ। অর্থ বরাদ্দের দুই বছর পর ২০১৬ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংকে দিয়ে কাজ শুরু করে। ওই বছর নিম্মমানের বালু ও জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ শুরু করায় স্থানীয়দের চাপের মুখে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অনিয়মের প্রতিবাদে ও যথাযথভাবে কাজ করার দাবীতে ওই সময় মানববন্ধন করে স্থানীয় এলাকাবাসী।