আমিনুর রহমান নয়ন:
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশী দুই নারী ও এক শিশুকে ভারতে পাচারের সময় ভারতীয় এক মানবপাচারকারী বিজিবির হাতে আটক হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে মহেশপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ব্রিজের উপর হতে দুই নারী ও শিশুসহ তাকে আটক করা হয়।
আটক শংকর অধিকারী (৩৯) ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা থানার পূর্বহুদা গ্রামের নুকুল অধিকারীর ছেলে। বৃহস্পতিবার রাতে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের (৫৮ বিজিবি) সহকারী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, মহেশপুর ব্যাটালিয়নের (৫৮ বিজিবি) অধীন বাঘাডাঙ্গা বিওপির বিজিবি সদস্যরা বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার সময় নায়েক আবু হানিফের নেতৃত্বে সীমান্ত পিলার ৬০/৩৩-আর হতে আনুমানিক ১ কি. মি. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কাঞ্চনপুর গ্রামরর ব্রিজের উপর অভিযান চালিয়ে দুই নারী ও এক শিশুকে বাংলাদেশ হতে ভারতে পাচারের প্রাক্কালে ভারতীয় মানবপাচারকারী শংকর অধিকারীকে আটক করে।
উক্ত ভারতীয় মানব পাচারকারী ৬ মাসের ভিসা নেয়ার মাধ্যমে গত ৩ মাস আগে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার বড়খোলা গ্রামের তার পূর্বের বংশীয় চাচার বাড়িতে বেড়াতে এসে জয় বালাকে (১৩) বিয়ে করে পূনরায় ভারতে চলে যায়। পরবর্তীতে গত ১৭ এপ্রিল ভারতীয় হরিদাসপুর এলআইসিপি হয়ে বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বেড়ানোর কথা বলে সে তার স্ত্রী জয়া বালা এবং পাশের বাড়ির যুথিকা হালদার (২৯) ও তার ছেলে বাধন বৈদাকে (১০) পাচারের উদ্দেশ্যে বাঘাডাঙ্গা সীমান্তে নিয়ে আসেন। তার স্ত্রী এবং যুথিকা হালদার এর ভাষ্যমতে তাদেরকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। ভারতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তারা অবগত নয়। তাদের পরিবার জানিয়েছেন, তাদেরকে বেড়ানোর কথা বলে উক্ত ভারতীয় মানব পাচারকারী বাড়ি থেকে কৌশলে নিয়ে আসেন।
ভারতীয় মানব পাচারকারীর ভাষ্যমতে উক্ত দুজন মহিলা এবং শিশুকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশী দালাল আনোয়ারের সাথে ৪৭ হাজার টাকার চুক্তি হয় যা এখনো সে প্রদান করেনি। বর্ণিত মানব পাচারকারীর কাছে নগদ ৫০ হাজার ১১০ টাকা, ৮৫০ ভারতীয় রুপী এবং ৭ ওমানি রিয়েল পাওয়া যায়। এখান থেকে ৪৭ হাজার টাকা বাংলাদেশী দালাল আনোয়ারকে সীমান্ত অতিক্রম করার পর প্রদান করার পরিকল্পনা ছিল।
উল্লেখ্য যে, উক্ত দুই মহিলা ভারতীয় পাচারকারীকে কোনো টাকা দেয়নি এবং পাচারকারী নিজের পকেটের টাকা খরচ করে তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ থেকে অনুমেয় যে, ভারতে পাচারের পর উক্ত মহিলাদ্বয় এবং শিশুকে বিক্রির পর উক্ত টাকা উসুল করার পরিকল্পনা ছিল।
আটক ভারতীয় মানব পাচারকারীকে মহেশপুর থানায় এবং মহিলাদ্বয় ও শিশুকে যশোরের জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার সেন্টারের প্রতিনিধির নিকট সোপর্দ করা হয়েছে।