পবিত্র মুহররম মাস ও ১৪৪৭ হিজরির নতুন বছরের সূচনার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুসলিম ইউনিয়নের উদ্যোগে ‘নবীর হিজরত সপ্তাহ’-এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে। এই উপলক্ষে তারা একটি বার্ষিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে , যার মূল প্রতিপাদ্য :’হিজরত ও আশুরার বার্ষিকীতে… গাজার আহ্বান পুনর্নবীকরণ হোক।’ এটি একটি অনন্য সুযোগ, যেখানে মুসলিম উম্মাহ ইতিহাসের দুটি মহান ঘটনা¬¬—নবী মুহাম্মদ (সা.) এর হিজরত এবং আশুরার দিন—স্মরণ করে।
হিজরত ছিল ইসলামী দাওয়াত ও রাষ্ট্রগঠনের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং আশুরা ছিল সেই দিন, যেদিন আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.) ও তাঁর সম্প্রদায়কে ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। এই বার্ষিক উদ্যোগের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ অবিচার, ধৈর্য, ত্যাগ ও বিজয়ের মূল শিক্ষা থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করে। এ অনুপ্রেরণাই জাতিকে পূর্নজাগরণ করতে পারে এবং গাজা, ফিলিস্তিনসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্বের নির্যাতিত জনগণের পক্ষে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করতে পারে।
বিশেষ করে গাজা আজ অবরোধ, আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের মধ্যে থেকেও যে দৃঢ়তা ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে তা বর্তমান মুসলিম বিশ্বে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
হিজরি সপ্তাহের মূল আহ্বান হচ্ছে হিজরতের শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত করা, ঈমান আকিদায় অটল থাকা, মজলুমদের সাহায্য-সমর্থন করা, জাতি গঠন ও ঐক্যের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া ও স্বাধীনতা ও সর্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়া।
এই সপ্তাহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিম পণ্ডিত, আইনজীবী, দাঈ, চিন্তাবিদ ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানসমূহ সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। তারা বিভিন্ন সভা, আলোচনা ও মিডিয়া কার্যক্রমের মাধ্যমে হিজরত ও আশুরার শিক্ষা আজকের বাস্তবতার সঙ্গে বিশেষত গাজা, ফিলিস্তিন ও মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য সংকটাপন্ন অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত করছেন।
ইউনিয়ন সব মুসলমানকে আহ্বান জানিয়েছে : আসুন, আমরা আল্লাহর সঙ্গে আমাদের চুক্তি নবায়ন করি। আসুন, আমাদের আত্মা ও জাতির মধ্যে হিজরতের চেতনা জাগিয়ে তুলি। আসুন, গাজাকে আমাদের যুগের ‘মদিনা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করি যে মদিনা ছিল বিজয় ও মুক্তির আলোকবর্তিকা।