মোঃনিয়াজ শফিক জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ শিক্ষক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) ৩ নেতার ওপর ছাত্রদল কর্তৃক হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অছাত্রদের প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৩ জুলাই) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এই সময় শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ছাত্রদের আজীবনের জন্য বহিষ্কারের দাবি জানান। এছাড়া রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অছাত্রদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ ও হামলায় জড়িত অছাত্রদের আিনের আওতায় আনার দাবি জানান। অন্যতায় আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
এই সময় শিক্ষার্থীরা “যেই হাত শিক্ষক মারে, সেই হাত ভেঙে দাও”, “ছাত্রদলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও”, ” সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও”, “এক দুই তিন চার, অছাত্ররা ক্যাম্পাস ছাড়”, ” এ্যাকশন এ্যাকশন, ডাইরেক্ট এ্যাকশন”, “ম্যানেজমেন্টের এ্যাকশন, ডাইরেক্ট এ্যাকশন”, “জবি প্রশাসন, লজ্জা লজ্জা”, “অছাত্রদের গুণ্ডামি চলবে না, চলবে না”, “ছাত্র পরিচয়ে সন্ত্রাস, লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা” এসব স্লোগান দেন।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মারুফ বলেন, এই ক্যাম্পাসে কোনদিন শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার সাহস কেউ করেনি। ৫ আগস্টের আগেও আমাদের শিক্ষকের গায়ে কেউ হাত দেয়নি। ৫ আগস্টের পরে এসে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার সাহস তারা কোথায় পেল?
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তোফায়েল ইসলাম বলেন, আগে শিক্ষার্থীদের ট্যাগ দিয়ে ক্যাম্পাসে আসতে দিতো না। ট্যাগের রাজনীতি আবার শুরু হয়েছে। আগে দেয়া হত শিবির ট্যাগ। এখন ছাত্রলীগ ট্যাগ দেয়া হচ্ছে। যারা জুলাইয়ে আহত হয়েছে, তাদের ট্যাগ দিয়ে ক্যাম্পাসে আসতে দেয়া হচ্ছে না।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইরফান বলেন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা জুলাইয়ে আহত হন এবং বিগত সময়েও ছাত্রদল করেছে তাদেরকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে হামলা করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বডিতে থাকা ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলামের উপরও হামলা করে তারা।
তিনি আরও বলেন, যেখানে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের নিরাপত্তা নেই। সেখানে এসব সন্ত্রাসীদের থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিরাপদ থাকবে? কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিন্দাটুকু জানায় নি। এছাড়া নিরব ভূমিকায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরাও।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম রক্ষা করতে গেলে তাদেরকে গালিগালাজ ও হামলা করে ছাত্রদলের নেতকর্মীরা। একই সাথে শাখা বাগছাস সভাপতি, মুখ্য সংগঠক ও যুগ্ম-আহ্বায়ক যথাক্রমে মো. ফয়সাল মুরাদ, ফেরদৌস হাসান এবং ফারুককে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে তাদের উপরও হামলা ও মারধর শুরু করে তারা।