সূর্যোদয়ের পর রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪৩২-এর অনুষ্ঠান। ভোরের আলো ফুটতেই সুরের মূর্ছনায় শুরু হয় এই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। চিরায়িত আয়োজনে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নতুন বছরকে।
সোমবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে আহির ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে শুরু হয়েছে বর্ষবরণের এবারের আয়োজন।
এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। আলো, প্রকৃতি, মানুষ ও দেশপ্রেমের গান দিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো এবারও রমনার বটমূলে অর্ধবৃত্তাকার একটি মঞ্চে (৭২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থ) হয়েছে এই আয়োজন। মঞ্চসজ্জা, শিল্পীদের পোশাক এবং পরিবেশনার রঙে ছিল মেরুনের আধিপত্য।
পুরুষ শিল্পীরা পরেছিলেন মেরুন পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা, আর নারী শিল্পীরা ছিলেন মেরুন পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়িতে। মঞ্চের রঙেও রাখা হয়েছে এই পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য। উল্লেখ্য, গতবার মঞ্চের রঙ ছিল হালকা সবুজ।
ছায়ানটের ৫৮তম এই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসার গান ও আত্মবোধনের জাগরণের সুরবাণী দিয়ে।
ছায়ানটের পক্ষে আগেই সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়েছিল, এবার মোট ২৪টি পরিবেশনা হবে। এর মধ্যে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক কণ্ঠের গান ও ৩টি পাঠ থাকবে। নববর্ষের কথন পাঠ করবেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। শেষ হবে জাতীয় সংগীত দিয়ে।
এবারের পয়লা বৈশাখের আবহ অন্যবারের চেয়ে একটু আলাদা। গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পালাবদলের পর এটাই প্রথম বাংলা নববর্ষ উদযাপন। নতুন চেতনায় বর্ষবরণ আয়োজনের প্রচেষ্টা চলছে দেশজুড়ে। বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম আয়োজন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামটি বদলে নতুন নাম হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংস্থা ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার এই বটমূলে পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। এবার ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে গত তিন মাস ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে চলে গানের মহড়া। আর ৮ এপ্রিল রমনার বটমূলে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়।