বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ের বাইরে নির্বাচন হলে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা করছে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে দেন-দরবার চালাচ্ছে দলটি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খানের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যদি নির্বাচন ২০২৬ পর্যন্ত গড়ায়, তাহলে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে বলে বিএনপি সতর্ক করেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর আন্দোলনকারীদের সমর্থনে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। ১৭৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার দক্ষিণ এশীয় দেশ বাংলাদেশ গত বছরের আগস্ট থেকে এই সরকারের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। শুরু থেকেই ছাত্র-জনতা সকল খাতে সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে, যার প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও সংস্কার কার্যক্রমে মনোযোগী হয়েছে।
সম্প্রতি ড. ইউনূস এক বক্তৃতায় বলেছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে।
মার্চ মাসের শুরুতে ছাত্রনেতা ও সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুলিশিং এবং আইনশৃঙ্খলা এখনও পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা যায়নি। তাই এই বছর নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হবে।
কিন্তু বিএনপি চলতি বছরই গণতন্ত্রে ফিরে আসতে চায়। দলের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটির সদস্য এবং সাবেক বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী আব্দুল মঈন খান শনিবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বলেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করব যে তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দেওয়া এবং সম্মানজনকভাবে পদত্যাগ করা।
মঈন বলেন, সাধারণত ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণার বিষয়টি সবাই মেনে নিয়েছে। ডিসেম্বরের পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে। ওয়াশিংটন ডিসিতে কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, সেখানে তিনি বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করার জন্য মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করতে চাইছেন।
মঈন খানই হলেন প্রথম সিনিয়র বিএনপি নেতা যিনি এই বছর নির্বাচন না হলে কঠিন পরিণতির হুঁশিয়ারি দিলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ থাকবে। এর অর্থ হলো কিছু অস্থিরতা হতে পারে… সময়ই সিদ্ধান্ত নেবে।’
তিনি আরও বলেন, এখনও কোনো জোটের অংশ হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা বিএনপির নেই। তবে নির্বাচিত হয়ে গেলে তারা ছাত্র নেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ অন্যান্য দলের সাথে কাজ করার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মঈন খান বলেন, নির্বাচনের পরে গণতন্ত্রের পক্ষে যারা আছেন তাদের সকলকে নিয়ে আমরা সরকার গঠন করতে পারলে খুশি হব।