শিরোনাম :
Logo পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন Logo সিরাজগঞ্জে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারী নিহত, চারজন আহত Logo ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন কচুয়ায় ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি  Logo চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ Logo ইবিতে “ক্যারিয়ার গাইডলাইন ফর ফ্রেশার্স ২০২৫” অনুষ্ঠিত  Logo বেলকুচি আনন্দমেলায় টিকিট বাণিজ্য সময় বাড়ানোর আবেদন Logo বিনামূল্যে বাইসাইকেল পেয়ে উচ্ছ্বসিত চাঁদপুর সদরের ৫২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা  Logo বীরগঞ্জে ৪টি ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ ও ১টি ইউনিয়ন শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা Logo ৭৮ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে চাঁদপুর এলজিইডির অবহিতকরন সভা Logo পিয়াস আফ্রিদির উদ্যোগে চিত্রনায়ক ডিএ তায়েব অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাবের পথচলা

চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ২৯ হাজার কোটি টাকা

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:২৩:২৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৮১৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি দিন দিন বেড়েই চলছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-আগস্ট) বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ২৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৫ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে তিন হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমে গেলেও বিলাসজাত পণ্য আমদানি বেড়ে গেছে। এ কারণে আমদানি ব্যয় কমছে না। এর সামগ্রিক প্রভাব পড়ছে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল এক হাজার ৩৩৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরে আমদানি ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। বিপরীতে রফতানি ব্যয় বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রফতানি আয় হয়েছে এক হাজার ৭৯ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল এক হাজার ১৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাণিজ্য ঘাটতি দিন দিন বাড়ার অন্যতম কারণ হলো আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া। প্রতি বছর যে হারে আমদানি ব্যয় বাড়ছে, ওই হারে রফতানি আয় হচ্ছে না। ফলে এর সামগ্রিক প্রভাব পড়ছে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতিতে।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাণিজ্য ঘাটতির প্রভাব আপাতত দেশে পড়ছে না। কারণ বিনিয়োগ স্থবিরতার মাঝে ব্যাংকগুলো রফতানি আয়, রেমিট্যান্স ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জের মাধ্যমে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করছে তা কাজে লাগাতে পারছে না। ডলারের চাহিদা না থাকায় আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারেও ডলার বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাচ্ছে। এতে আপাতত বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতির প্রভাব পড়ছে না। কিন্তু দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ফিরে এলে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বেড়ে যাবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে। আমদানি ব্যয়ের তুলনায় রফতানি আয় না বাড়লে বাণিজ্য ঘাটতি আরো বেড়ে যাবে।
এদিকে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতিই বাড়ছে না, বাড়ছে সেবা বাণিজ্য ঘাটতির ব্যয়ও। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশের যেকোনো সময়ের তুলনায় এ বেতনভাতা ব্যয় বেড়ে গেছে। আর এই সুবাদে দেশের সেবামূল্য খাতে ব্যয় বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সেবা খাতে বিদেশী নাগরিকদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ১৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে মাত্র ৮৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবা খাতে ঘাটতি রয়েছে ৮৪ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ে সেবা খাতের ঘাটতি ছিল ৫৯ কোটি ডলার। পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি ও সেবা খাতের ঘাটতি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় চলতি হিসাবের ভারসাম্য ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে চলতি হিসাবের ভারসাম্য হয়েছে ঋণাত্মক ৫০ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল ১৬৬ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সেবা খাতে অস্বাভাবিক হারে ব্যয় বেড়ে গেছে। সেই সাথে রফতানি আয় কমছে। পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ না বাড়লেও হঠাৎ আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। এরই ফলে চলতি হিসাব ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে হঠাৎ করে বিদেশী নাগরিকদের কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। দেশের তৈরী পোশাক খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা চাকরিতে ঢুকে পড়ছে। এর ফলে বিদেশী নাগরিকদের বেতনভাতা ব্যয় বেড়েছে। আর এটাই উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা, প্রতি বছর দেশের শ্রমবাজারে নতুন ২০ থেকে ২৫ লাখ শ্রমিক আসছে। কিন্তু বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ অবকাঠামো সুবিধার অভাব ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মাঝে বর্ধিত হারে বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে কর্মক্ষম শ্রমিকের সংখ্যা বাড়লেও কর্মক্ষেত্রে সুযোগ বাড়ছে না। এ পরিস্থিতিতে বেড়ে যাচ্ছে বেকারত্বের হার। এ সময় দেশের কর্মক্ষেত্রে বিদেশী শ্রমিক ঢুকে পড়লে বেকারত্বের হার আরো বেড়ে যাবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য মোটেও সুখকর হবে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন

চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ২৯ হাজার কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০৫:২৩:২৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি দিন দিন বেড়েই চলছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-আগস্ট) বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ২৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৫ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে তিন হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমে গেলেও বিলাসজাত পণ্য আমদানি বেড়ে গেছে। এ কারণে আমদানি ব্যয় কমছে না। এর সামগ্রিক প্রভাব পড়ছে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল এক হাজার ৩৩৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরে আমদানি ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। বিপরীতে রফতানি ব্যয় বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রফতানি আয় হয়েছে এক হাজার ৭৯ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল এক হাজার ১৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাণিজ্য ঘাটতি দিন দিন বাড়ার অন্যতম কারণ হলো আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া। প্রতি বছর যে হারে আমদানি ব্যয় বাড়ছে, ওই হারে রফতানি আয় হচ্ছে না। ফলে এর সামগ্রিক প্রভাব পড়ছে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতিতে।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাণিজ্য ঘাটতির প্রভাব আপাতত দেশে পড়ছে না। কারণ বিনিয়োগ স্থবিরতার মাঝে ব্যাংকগুলো রফতানি আয়, রেমিট্যান্স ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জের মাধ্যমে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করছে তা কাজে লাগাতে পারছে না। ডলারের চাহিদা না থাকায় আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারেও ডলার বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাচ্ছে। এতে আপাতত বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতির প্রভাব পড়ছে না। কিন্তু দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ফিরে এলে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বেড়ে যাবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে। আমদানি ব্যয়ের তুলনায় রফতানি আয় না বাড়লে বাণিজ্য ঘাটতি আরো বেড়ে যাবে।
এদিকে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতিই বাড়ছে না, বাড়ছে সেবা বাণিজ্য ঘাটতির ব্যয়ও। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশের যেকোনো সময়ের তুলনায় এ বেতনভাতা ব্যয় বেড়ে গেছে। আর এই সুবাদে দেশের সেবামূল্য খাতে ব্যয় বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সেবা খাতে বিদেশী নাগরিকদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ১৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে মাত্র ৮৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবা খাতে ঘাটতি রয়েছে ৮৪ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ে সেবা খাতের ঘাটতি ছিল ৫৯ কোটি ডলার। পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি ও সেবা খাতের ঘাটতি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় চলতি হিসাবের ভারসাম্য ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে চলতি হিসাবের ভারসাম্য হয়েছে ঋণাত্মক ৫০ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল ১৬৬ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সেবা খাতে অস্বাভাবিক হারে ব্যয় বেড়ে গেছে। সেই সাথে রফতানি আয় কমছে। পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ না বাড়লেও হঠাৎ আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। এরই ফলে চলতি হিসাব ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে হঠাৎ করে বিদেশী নাগরিকদের কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। দেশের তৈরী পোশাক খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা চাকরিতে ঢুকে পড়ছে। এর ফলে বিদেশী নাগরিকদের বেতনভাতা ব্যয় বেড়েছে। আর এটাই উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা, প্রতি বছর দেশের শ্রমবাজারে নতুন ২০ থেকে ২৫ লাখ শ্রমিক আসছে। কিন্তু বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ অবকাঠামো সুবিধার অভাব ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মাঝে বর্ধিত হারে বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে কর্মক্ষম শ্রমিকের সংখ্যা বাড়লেও কর্মক্ষেত্রে সুযোগ বাড়ছে না। এ পরিস্থিতিতে বেড়ে যাচ্ছে বেকারত্বের হার। এ সময় দেশের কর্মক্ষেত্রে বিদেশী শ্রমিক ঢুকে পড়লে বেকারত্বের হার আরো বেড়ে যাবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য মোটেও সুখকর হবে না।