শিরোনাম :
Logo পলাশবাড়ীতে ভূয়া সমিতির নামে পৌনে এক কোটির টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ লুটপাট Logo কুবিতে এক সাংবাদিক সংগঠনের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন Logo সিরাজগঞ্জে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারী নিহত, চারজন আহত Logo ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন কচুয়ায় ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি  Logo চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ Logo ইবিতে “ক্যারিয়ার গাইডলাইন ফর ফ্রেশার্স ২০২৫” অনুষ্ঠিত  Logo বেলকুচি আনন্দমেলায় টিকিট বাণিজ্য সময় বাড়ানোর আবেদন Logo বিনামূল্যে বাইসাইকেল পেয়ে উচ্ছ্বসিত চাঁদপুর সদরের ৫২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা  Logo বীরগঞ্জে ৪টি ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ ও ১টি ইউনিয়ন শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা

ভয়ঙ্কর কুস্তিগীর গামা দৈনিক খেতেন ৬ মুরগি-১০ লিটার দুধ !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০১:৫৬:১১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  • ৭৮২ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

গুলাম মহম্মদ বা ‘দ্য গ্রেট গামা’ ভারতের মাটিতে অনেক পালোয়ানকে চোখের পলকেই পরাজিত করে ফেলতেন। দেশের মাটিতে তিনি অনেক পালোয়ানকে দৈহিক কসরত দেখিয়েছেন৷ একবারে কয়েক হাজার বুক ডন দেওয়া ছিল তার প্রতিদিনের শরীরচর্চার অঙ্গ৷ তার নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় ছিল ছটি দেশি মুরগি, দশ লিটার দুধ, হাফ লিটার ঘি ও আমন্ডের মিশ্রণ৷

ব্রিটিশের দখলে থাকা ভারতবর্ষে পাঞ্জাবের অমৃতসরে ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গুলাম মহম্মদ৷ ছোটো থেকেই শরীরচর্চার প্রতি ছিল তার গভীর টান৷ বিখ্যাত বডি বিল্ডার ব্রুশ লিকে নিজের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে মানতেন গুলাম মহম্মদ৷ প্রথমে নিজের বাবা মহম্মদ আজিজ বক্সের কাছেই অনুশীলন করতেন তিনি৷ দশবছর বয়সেই তিনি জয় করে নিয়েছিলেন বিভিন্ন স্থানীয় প্রতিযোগিতা৷ ফলে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার নাম৷ তবে ১৮৯৫ সালে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পরতে হয় তাকে৷ একটি প্রতিযোগিতায় তাকে লড়াতে হয় ‘রুস্তম-ই-হিন্দ’ নামে খ্যাত রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে৷ ৬ ফুট ৯ ইঞ্চির দৈত্যাকার রহিমের সঙ্গে ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির গুলামের লড়াই অমীমাংসিত রয়ে যায়৷

বেড়ে যায় গামার কদর৷ সর্বত্র জয় জয়কার পরে যায়৷ এরপরে একের পর এক প্রতিযোগিতার তৎকালীন ভারতের নাম করা পালোয়ানদের পরাজিত করতে থাকেন গামা৷ ১৮৯৮ সালে গুলাম মহিউদ্দিন, ১৯০২ সালে ভোপালের প্রতাপ সিং, ১৯০৪ সালে ইন্দোরের আলি বাবা সাইন ও ১৯০৭ সালে মুলতানের হাসান বক্স৷ এরপর আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার মুখোমুখি হয়েছিলেন গুলাম মহম্মদ কিন্তু এবারও প্রতিযোগিতা অমীমাংসিত থাকে৷

এরপরে ভারতে অপরাজিত থেকে গামা ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেন৷ কিন্তু উচ্চতা কম থাকার কারণে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে৷ থেমে যাননি তিনি৷ হুঁশিয়ারি দেন যে ইংল্যান্ডের যেকোনও ব্রিটিশ পালোয়ান ত্রিশ মিনিটে পরাজিত করতে পারেন তিনি৷ এমনকি সেই সময়ে ইংল্যান্ডের নামকরা পালোয়ান স্টেনিশলাস জোবিশকো ও ফ্রাঙ্ক গোটচকে৷ কিন্তু স্টেনিশলাস ছাড়া আর কেউ তার সঙ্গে লড়তে সাহস দেখাননি৷ ১৯১০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর স্টেনিশলাসের সঙ্গে রেশলিং রিংয়ে মুখোমুখি হন গামা৷ সবাইকে অবাক করে এক মিনিটেরও কম সময়ে স্টেনিশলাসকে কাবু করে ফেলেছিলেন গামা এবং পরবর্তী ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট একইভাবে স্টেনিশলাসকে কাবু করে রেখেছিলেন৷ প্রতিযোগিতা থেকে যায় অমিমাংসীত৷ সেই মাসেরই ১৯ তারিখ আবারও গামার মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল স্টেনিশলাসের৷ কিন্তু গামার সঙ্গে লড়াইয়ের ময়দানে আর নামতে চাননি তিনি৷ ফলে প্রথম ভারতীয় রেশলার হিসেবে ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট টাইটেলের বিজয়ী হন গুলাম মহম্মদ, পান রুস্তম-ই-জামানা ফেতাব৷

১৯১১ সালে আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে লড়াইয়ে নামেন গুলাম মহম্মদ৷ তবে এবার আর অমীমাংসিত রইল না খেলা জয়ী হন গুলাম মহম্মদ৷ ১৯২৯ সালে সুইডিশ পালোয়ান জিশেস পিটারশনের বিরুদ্ধে শেষবারের মত রেশলিংয়ের রিংয়ে নামেন তিনি৷ তারপরে ইতিটানেন নিজের পঞ্চাশ বছরের রেশলিং কেরিয়ারে৷ ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পরে পাকিস্তানে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি৷ তবে শেষ বয়সে অর্থারাইটিসে ভুগে ১৯৬৩ সালে মৃত্যু হয় গুলাম মহমম্দের৷ শেষ হয় ভারতের মাটিতে জন্মান এক বীর পালোয়ান ‘দ্য গ্রেট গামা’র জীবন৷

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পলাশবাড়ীতে ভূয়া সমিতির নামে পৌনে এক কোটির টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ লুটপাট

ভয়ঙ্কর কুস্তিগীর গামা দৈনিক খেতেন ৬ মুরগি-১০ লিটার দুধ !

আপডেট সময় : ০১:৫৬:১১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

গুলাম মহম্মদ বা ‘দ্য গ্রেট গামা’ ভারতের মাটিতে অনেক পালোয়ানকে চোখের পলকেই পরাজিত করে ফেলতেন। দেশের মাটিতে তিনি অনেক পালোয়ানকে দৈহিক কসরত দেখিয়েছেন৷ একবারে কয়েক হাজার বুক ডন দেওয়া ছিল তার প্রতিদিনের শরীরচর্চার অঙ্গ৷ তার নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় ছিল ছটি দেশি মুরগি, দশ লিটার দুধ, হাফ লিটার ঘি ও আমন্ডের মিশ্রণ৷

ব্রিটিশের দখলে থাকা ভারতবর্ষে পাঞ্জাবের অমৃতসরে ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গুলাম মহম্মদ৷ ছোটো থেকেই শরীরচর্চার প্রতি ছিল তার গভীর টান৷ বিখ্যাত বডি বিল্ডার ব্রুশ লিকে নিজের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে মানতেন গুলাম মহম্মদ৷ প্রথমে নিজের বাবা মহম্মদ আজিজ বক্সের কাছেই অনুশীলন করতেন তিনি৷ দশবছর বয়সেই তিনি জয় করে নিয়েছিলেন বিভিন্ন স্থানীয় প্রতিযোগিতা৷ ফলে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার নাম৷ তবে ১৮৯৫ সালে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পরতে হয় তাকে৷ একটি প্রতিযোগিতায় তাকে লড়াতে হয় ‘রুস্তম-ই-হিন্দ’ নামে খ্যাত রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে৷ ৬ ফুট ৯ ইঞ্চির দৈত্যাকার রহিমের সঙ্গে ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির গুলামের লড়াই অমীমাংসিত রয়ে যায়৷

বেড়ে যায় গামার কদর৷ সর্বত্র জয় জয়কার পরে যায়৷ এরপরে একের পর এক প্রতিযোগিতার তৎকালীন ভারতের নাম করা পালোয়ানদের পরাজিত করতে থাকেন গামা৷ ১৮৯৮ সালে গুলাম মহিউদ্দিন, ১৯০২ সালে ভোপালের প্রতাপ সিং, ১৯০৪ সালে ইন্দোরের আলি বাবা সাইন ও ১৯০৭ সালে মুলতানের হাসান বক্স৷ এরপর আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার মুখোমুখি হয়েছিলেন গুলাম মহম্মদ কিন্তু এবারও প্রতিযোগিতা অমীমাংসিত থাকে৷

এরপরে ভারতে অপরাজিত থেকে গামা ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেন৷ কিন্তু উচ্চতা কম থাকার কারণে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে৷ থেমে যাননি তিনি৷ হুঁশিয়ারি দেন যে ইংল্যান্ডের যেকোনও ব্রিটিশ পালোয়ান ত্রিশ মিনিটে পরাজিত করতে পারেন তিনি৷ এমনকি সেই সময়ে ইংল্যান্ডের নামকরা পালোয়ান স্টেনিশলাস জোবিশকো ও ফ্রাঙ্ক গোটচকে৷ কিন্তু স্টেনিশলাস ছাড়া আর কেউ তার সঙ্গে লড়তে সাহস দেখাননি৷ ১৯১০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর স্টেনিশলাসের সঙ্গে রেশলিং রিংয়ে মুখোমুখি হন গামা৷ সবাইকে অবাক করে এক মিনিটেরও কম সময়ে স্টেনিশলাসকে কাবু করে ফেলেছিলেন গামা এবং পরবর্তী ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট একইভাবে স্টেনিশলাসকে কাবু করে রেখেছিলেন৷ প্রতিযোগিতা থেকে যায় অমিমাংসীত৷ সেই মাসেরই ১৯ তারিখ আবারও গামার মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল স্টেনিশলাসের৷ কিন্তু গামার সঙ্গে লড়াইয়ের ময়দানে আর নামতে চাননি তিনি৷ ফলে প্রথম ভারতীয় রেশলার হিসেবে ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট টাইটেলের বিজয়ী হন গুলাম মহম্মদ, পান রুস্তম-ই-জামানা ফেতাব৷

১৯১১ সালে আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে লড়াইয়ে নামেন গুলাম মহম্মদ৷ তবে এবার আর অমীমাংসিত রইল না খেলা জয়ী হন গুলাম মহম্মদ৷ ১৯২৯ সালে সুইডিশ পালোয়ান জিশেস পিটারশনের বিরুদ্ধে শেষবারের মত রেশলিংয়ের রিংয়ে নামেন তিনি৷ তারপরে ইতিটানেন নিজের পঞ্চাশ বছরের রেশলিং কেরিয়ারে৷ ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পরে পাকিস্তানে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি৷ তবে শেষ বয়সে অর্থারাইটিসে ভুগে ১৯৬৩ সালে মৃত্যু হয় গুলাম মহমম্দের৷ শেষ হয় ভারতের মাটিতে জন্মান এক বীর পালোয়ান ‘দ্য গ্রেট গামা’র জীবন৷