বাংলাদেশের গ্রামীণ চিত্রে বর্ষাকালের ভেজা জমি বা ধানক্ষেতের পাশে ছোট সবুজ পাতায় ভরা এক জলজ উদ্ভিদ প্রায়ই চোখে পড়ে— সেটিই হেলেঞ্চা শাক (Enhydra fluctuans)। দেখতে সাধারণ হলেও এই শাকের গুণাগুণ অসাধারণ।
চিকিৎসা ও পুষ্টিবিদদের মতে, হেলেঞ্চা শাকে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও প্রচুর আঁশ, যা শরীরকে পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, হেলেঞ্চা শাক রক্ত পরিশোধক হিসেবে কাজ করে, যকৃতের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করতে সহায়তা করে। নিয়মিত এই শাক খেলে রক্তশূন্যতা, অরুচি, গ্যাস ও জ্বরের প্রবণতা কমে।
এছাড়া এর ঠান্ডা প্রকৃতি শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং চর্মরোগ ও ফুসকুড়ি নিরাময়ে কার্যকর। অনেক গ্রামীণ মানুষ এখনো ঐতিহ্যগত চিকিৎসায় হেলেঞ্চা শাকের রস ব্যবহার করেন লিভারের সমস্যা বা রক্ত পরিষ্কারের ওষুধ হিসেবে।
খাবারে হেলেঞ্চার ব্যবহারও বহুমাত্রিক— চিংড়ির সঙ্গে হেলেঞ্চা শাকের ঝাল রান্না, অথবা সামান্য লবণ-মরিচ দিয়ে ভর্তা— সবভাবেই এটি রসনাতৃপ্ত এক খাবার।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, হেলেঞ্চা যেহেতু জলজ পরিবেশে জন্মায়, তাই এটি ভালোভাবে ধুয়ে ও সিদ্ধ করে খাওয়া জরুরি। এতে জীবাণু বা রাসায়নিক দূষণের ঝুঁকি থাকে না।
হেলেঞ্চা শাক শুধু একটি সাধারণ দেশি সবজি নয়— এটি এক প্রাকৃতিক ওষুধ, এক স্বাস্থ্যরক্ষক সবুজ আশীর্বাদ। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এই শাকের উপস্থিতি বাড়ালে শরীর যেমন সুস্থ থাকবে, তেমনি প্রকৃতির কাছাকাছি থাকাও হবে সহজ।























































