সোহারাফ হোসেন সৌরভ সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে বেতনা-মরিচ্চাপ নদীসহ ৭১টি খাল খননে ব্যয় করা হয়েছে ৪৭৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে না হতেই নদী ও খালগুলো আবারও পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। শত শত কোটি টাকা খরচের পরও দৃশ্যমান কোনো সুফল না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুলাই মাসে সদর, কলারোয়া, তালা, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলাকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে এই বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র,
গোবিন্দপুর এলাকার ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধঘাটা খালের মাত্র ২ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে। ফলে খালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
অধিকাংশ খাল খননের এক বছরের মধ্যেই আবারও পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে।
সাড়ে চারশ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে খনন কাজ চললেও সাতক্ষীরার মানুষের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর হয়নি। বরং নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে বোরো চাষ ও মাছের ঘেরে পানির তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে। পরিকল্পিত ও টেকসই খনন ব্যবস্থার অভাবকেই এই জনদুর্ভোগের প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা।
বিনেরপোতা এলাকার ঘেরচাষি ইউসুফ আলী বলেন, খননের সময় ভেবেছিলাম পানির কষ্ট কমবে, এখন দেখছি আগের চেয়েও সংকট বেড়েছে।
সদর উপজেলার এল্লারচর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বারি বলেন, দুই বছর আগে কাটা খাল আবার ভরাট হয়ে গেছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা এভাবেই নষ্ট হলো।
জলবায়ু পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাধব দত্তের মতে, ঠিকাদারদের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অপরিকল্পিতভাবে খনন করার কারণেই ৪৭৫ কোটি টাকার এই বিশাল প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে জেলার কৃষি ও মৎস্য খাত চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
ব্যর্থতার দায় পুরোপুরি নিতে রাজি নয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাযকিয়া জানান, উপকূলীয় এলাকায় পলি প্রবাহ বেশি হওয়া এবং নদী-খালের সংযোগস্থলে অবৈধ মাছের ঘের থাকায় পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, এ বছর জলাবদ্ধতা আগের চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে।






















































