শিরোনাম :
Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা Logo চাঁদপুরে কবরস্থ করতে দেওয়া শিশু মৃত নয়, জীবিত! Logo “শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা” – ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান Logo সিরাজগঞ্জে বসতবাড়ির জমি দখলের হুমকির অভিযোগে জিডি Logo  ইবির পাঁচ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার Logo ইবিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ Logo সুন্দরবনে বন বিভাগের পৃথক অভিযানে ৫ জেলে আটক  ৩টা নৌকা, জাল, বিষের বোতল সহ মাছ জব্দ 

‘১৬ জুন বিতর্কিত বাকশাল সরকার সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল’

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৯:১৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
  • ৭৪৫ বার পড়া হয়েছে

আগামীকাল ১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস। ১৯৭৫ সালের এইদিনে তৎকালীন বাকশাল সরকার সরকারি প্রচারপত্র হিসেবে চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয়। এতে সাংবাদিকসহ কয়েক হাজার সংবাদকর্মী রাতারাতি বেকার হয়ে দুঃসহ জীবনে পতিত হন।

বাকশাল সরকারের ন্যাক্কারজনক হস্তক্ষেপের ফলে রুদ্ধ হয়ে যায় গণমাধ্যম, রাজনৈতিক, গোষ্ঠীগত ও বাক-ব্যক্তির স্বাধীনতা। সংবাদমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতা হরনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত। সরকারের এহেন নিবর্তনমূলক অধ্যাদেশ জারির দিনটিকে ১৯৭৬ সাল থেকে সাংবাদিক সমাজ সংবাদপত্রের কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র উদ্যোগে সোমবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে (দ্বিতীয় তলায়) আয়োজিত আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীরা অংশগ্রহণ করবেন।

এদিকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম রোববার (১৫ জুন) এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন বছর পর সংসদে আনা হয়েছিল সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এই সংশোধনীর ফলে জাতির ঘাড়ে চেপে বসে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশালের জগদ্দল পাথর। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছর ১৬ জুন বিতর্কিত বাকশাল সরকার সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। সরকারি প্রচারপত্র হিসেবে চারটি পত্রিকা সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ করা হয়। এতে সাংবাদিকসহ কয়েক হাজার সংবাদকর্মী বেকার হয়ে দুঃসহ জীবন-যাপনে বাধ্য হন। সংবাদমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতা হরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত। জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক দিন এটি। এ জন্য সাংবাদিক সমাজ প্রতি বছর এ দিনটিকে ঘৃণা ও ধিক্কারের সাথে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে।’

তারা বলেন, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ’৭৫ সালের নভেম্বরে সিপাহী-জনতার বিপ্লবে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সংবিধানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করে বাকশাল সরকারের সব প্রকার অগণতান্ত্রিক কালো ধারা বাতিল এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই প্রথম টার্গেট করে সংবাদমাধ্যমকে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেও একই পথ অনুসরণ করে দলটি। বিগত ১৬ বছরে জনপ্রিয় অসংখ্য সংবাদপত্র, বেসরকারি টেলিভিশন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে কয়েক হাজার সাংবাদিককে বেকারত্বের মুখে ঠেলে দেয়। অগণতান্ত্রিক সরকারের কালো থাবায় সংবাদমাধ্যম ছিল পুরোপুরি শৃঙ্খলিত। সরকারের রক্তচক্ষুর সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে। বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। অকল্পনীয় হুমকির মুখে পড়ে সাংবাদিকদের জীবন ও জীবিকা।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বিগত বছরের জুলাই-আগষ্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বাধীন গণমাধ্যমবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বহাল তবিয়তে থেকে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।’ এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দল, মত, পথ নির্বিশেষে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান

‘১৬ জুন বিতর্কিত বাকশাল সরকার সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল’

আপডেট সময় : ০৫:৩৯:১৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

আগামীকাল ১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস। ১৯৭৫ সালের এইদিনে তৎকালীন বাকশাল সরকার সরকারি প্রচারপত্র হিসেবে চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয়। এতে সাংবাদিকসহ কয়েক হাজার সংবাদকর্মী রাতারাতি বেকার হয়ে দুঃসহ জীবনে পতিত হন।

বাকশাল সরকারের ন্যাক্কারজনক হস্তক্ষেপের ফলে রুদ্ধ হয়ে যায় গণমাধ্যম, রাজনৈতিক, গোষ্ঠীগত ও বাক-ব্যক্তির স্বাধীনতা। সংবাদমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতা হরনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত। সরকারের এহেন নিবর্তনমূলক অধ্যাদেশ জারির দিনটিকে ১৯৭৬ সাল থেকে সাংবাদিক সমাজ সংবাদপত্রের কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র উদ্যোগে সোমবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে (দ্বিতীয় তলায়) আয়োজিত আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীরা অংশগ্রহণ করবেন।

এদিকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম রোববার (১৫ জুন) এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন বছর পর সংসদে আনা হয়েছিল সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এই সংশোধনীর ফলে জাতির ঘাড়ে চেপে বসে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশালের জগদ্দল পাথর। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছর ১৬ জুন বিতর্কিত বাকশাল সরকার সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। সরকারি প্রচারপত্র হিসেবে চারটি পত্রিকা সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ করা হয়। এতে সাংবাদিকসহ কয়েক হাজার সংবাদকর্মী বেকার হয়ে দুঃসহ জীবন-যাপনে বাধ্য হন। সংবাদমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতা হরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত। জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক দিন এটি। এ জন্য সাংবাদিক সমাজ প্রতি বছর এ দিনটিকে ঘৃণা ও ধিক্কারের সাথে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে।’

তারা বলেন, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ’৭৫ সালের নভেম্বরে সিপাহী-জনতার বিপ্লবে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সংবিধানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করে বাকশাল সরকারের সব প্রকার অগণতান্ত্রিক কালো ধারা বাতিল এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই প্রথম টার্গেট করে সংবাদমাধ্যমকে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেও একই পথ অনুসরণ করে দলটি। বিগত ১৬ বছরে জনপ্রিয় অসংখ্য সংবাদপত্র, বেসরকারি টেলিভিশন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে কয়েক হাজার সাংবাদিককে বেকারত্বের মুখে ঠেলে দেয়। অগণতান্ত্রিক সরকারের কালো থাবায় সংবাদমাধ্যম ছিল পুরোপুরি শৃঙ্খলিত। সরকারের রক্তচক্ষুর সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে। বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। অকল্পনীয় হুমকির মুখে পড়ে সাংবাদিকদের জীবন ও জীবিকা।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বিগত বছরের জুলাই-আগষ্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বাধীন গণমাধ্যমবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বহাল তবিয়তে থেকে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।’ এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দল, মত, পথ নির্বিশেষে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।