জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বললেন, পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলের মতো কিছু প্রকল্পকে সামনে রেখে দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচার করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশে একাধিক রাজনৈতিক দল আসবে।
আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে জাতীয় নাগরিক কমিটি পঞ্চগড়ের আয়োজনে এক মতবিনিময়সভায় এই মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত ১৬ বছরে উন্নয়ন দেখিয়েছে মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলের মতো কিছু অবকাঠামো দিয়ে।
কিন্তু একটা দেশের উন্নতি কেবল কিছু অবকাঠামো দিয়ে হতে পারে না। এই অবকাঠামোগুলো মানুষের চোখের সামনে দিয়ে ভেতরে ভেতরে দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচার করা হয়েছে। কেউ যখন কোনো অবকাঠামোকে উছিলা করে লুটপাটের সাম্রাজ্য চালায় তখন তা বৃহৎ অর্থে দেশের জন্য সমস্যা।’
তিনি আরো বলেন, ‘যেই প্রকল্প ২০ হাজার কোটি টাকায় হয়ে যেত সেই প্রকল্প চুরি-বাটপারি, সিন্ডিকেট-লুটপাট, স্বজনপ্রীতি করে যখন ৩৫ হাজার কোটি টাকায় ঠেকায় সেটি দেশের জন্য সমস্যা।
পদ্মা সেতু করার পরে পদ্মাসেতু রেলওয়ে প্রকল্পে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। যেই সময়ে দেশে হাজারটা জিনিস ছিল তা তার আগে করা উচিত ছিল। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ১ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। চীন এই প্রকল্পে যখন সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসে তখন ভারতের দিকে তাকিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যখন এই প্রকল্প আর সামনের দিকে আগায় না তখন তা বাংলাদেশের জন্য সমস্যা।
’আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশে একাধিক রাজনৈতিক দল আসবে উল্লেখ করে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তবে জাতীয় নাগরিক কমিটি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দল হবে না। জাতীয় নাগরিক কমিটি আগামীর বাংলাদেশে লিডারশিপ তৈরি করবে। পাশাপাশি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। একই সঙ্গে এটি জাতীয় পর্যায়ের একটি ইনস্টিটিউট হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে দেশে লিডার তৈরি হয়নি, তৈরি হয়েছে কিছু দাস আর নীরব কিছু দর্শক।
আগামীর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি উন্নয়ন করতে চাই তাহলে আগে আমাদের লিডার তৈরি করতে হবে। লিডার হিসেবে যাদের শিক্ষা, দক্ষতা ও জ্ঞান থাকবে। লিডার হিসেবে এই মানসিকতা থাকবে যে কেউ অনুসারী না সবাই সহযোদ্ধা। এই অভ্যত্থানে যারা ছিল তাদের নিয়েই হয়ত এই রাজনৈতিক দল আসবে। তবে যে রাজনৈতিক দলে যাবে তারা নাগরিক কমিটিতে থাকতে পারবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ যদি ওই রাজনৈতিক দলে যেতে চায় তাহলে তাকে তার সব পদ ছেড়ে যেতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার জায়গাতেই থাকবে। আবার যদি কেউ ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে তার বিরুদ্ধে আবারও এখান থেকেই যে কেউ আন্দোলনের ডাক দিতে পারবে।’
একটা সিস্টেম ধ্বংস করতে সময় লাগে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু গড়তে সময় লাগে। আমরা তাৎক্ষণিক রেজাল্ট চাই। আমাদের মগজে মননে দাসত্ব ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশে তদবিরের সংস্কৃতি তৈরি করেছে। এখনো আমার কাছে তদবির আসে। এটি দু-একদিনে শেষ হবে না। সময় লাগবে। আমরা দেখাব যে তদবির ছাড়াও কাজ হয়।’