দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিরল আবহাওয়ার দৃশ্য তৈরি হয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, একইসঙ্গে তিনটি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন—‘রে’, ‘সেরু’ ও ‘আলফ্রেড’ তাণ্ডব চালাচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
পাঁচ দিনের ব্যবধানে সৃষ্টি হওয়া এই তিনটি সাইক্লোন বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল থেকে প্রায় ৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত প্রশান্ত মহাসাগরের বিশাল অংশে ঘূর্ণায়মান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে একসঙ্গে তিনটি সাইক্লোন বিরল হলেও আগে ঘটেনি তা নয়। ইউনিভার্সিটি অ্যাট অ্যালবানির আবহাওয়াবিদ ব্রায়ান ট্যাং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, ‘এটি অবশ্যই ব্যস্ত সময়, তবে নজিরবিহীন নয়।’
তিনি জানান, এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ‘লুকাস’, ‘আনা’ ও ‘বিনা’ নামে তিনটি সাইক্লোন একইসঙ্গে সক্রিয় ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের বাসিন্দারা ‘আলফ্রেড’-এর গতিপথ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। সোমবার সৃষ্ট হওয়া এই সাইক্লোন ইতোমধ্যে শক্তিশালী হয়ে ক্যাটাগরি ৩ মাত্রায় পৌঁছেছে। করাল সাগরে এটি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইয়ে দিচ্ছে। তবে এটি উপকূলে আঘাত হানবে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, শুক্রবার ফিজির উত্তরে সৃষ্ট ‘রে’ প্রবল ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বহু ফলের গাছ উপড়ে ফেলেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
মঙ্গলবার সাইক্লোনে রূপ নেওয়া ‘সেরু’ ভানুয়াতুর কাছাকাছি পৌঁছালেও মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম বলে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকটের ফলে মহাসাগরগুলোর তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে, যা ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের জন্য জ্বালানির কাজ করছে। ২০২৪ সালে বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছে।
গবেষণা বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা সরাসরি ঝড়ের সংখ্যা না বাড়ালেও শক্তিশালী ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়াচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ঝড়গুলো স্থলে পৌঁছে ধীরগতিতে চলমান থাকায় ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রাও বাড়ছে।