নিউজ ডেস্ক:
মালয়েশিয়ায় অব্যাহত সাঁড়াশি অভিযানে গত দুই দিনে বাংলাদেশিসহ দুই শতাধিক অবৈধ শ্রমিককে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। কুয়ালালামপুর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব শ্রমিককে আটক করা হয়।
৩০ জুন মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই সাঁড়াশি অভিযানে শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ৭০০ অবৈধ শ্রমিক আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮০০ অধিক বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন। তবে ১ থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ৭০৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিক আটক হয়েছে বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে।
দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মুস্তাফার আলী বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি অবৈধ শ্রমিকদের নিবন্ধন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তারা ৪০টি ভুয়া ই-কার্ডের সন্ধান পেয়েছেন। তথাকথিত যেসব এজেন্ট ভুয়া ই-কার্ড ইস্যু করার উদ্যোগ নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা একজন বাংলাদেশিকে আটক করেছি। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৮টি ভুয়া ই-কার্ড।
মুস্তাফার আলী আরো বলেন, ভুয়া ই-কার্ড দেখতে হয়তো একই রকম। কিন্তু এতে যে কুইক রেসপন্স কোড (কিউআর) আছে তা নকল করা সম্ভব নয়। এছাড়া আঙুলের ছাপ, আসল-নকল পদ্ধতি ইমিগ্রেশনে রয়েছে। দেশটির জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ঘোষণা করার পর সর্বশেষ ২৬ হাজার ৯৫৭ নিয়োগকর্তার মাধ্যমে প্রায় আড়াই লাখ অবৈধ কর্মী ই-কার্ডের আবেদন করেন। এক লাখ ৪০ হাজার ৭৪৬ জনের ই-কার্ড করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ২৩ শতাংশ। ইমিগ্রেশন বিভাগ ৬ লাখ ই-কার্ড করার আশা করেছিল। লক্ষ্য পূরণে ১ জুলাই থেকে নিয়োগকর্তা ও অবৈধ কর্মীদের গ্রেফতার এবং শাস্তির জন্য কাজ শুরু করেছে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
তিনি আরো বলেন, অবৈধ কর্মীদের জন্য নতুন করে ‘থ্রি প্লাস ওয়ান’ পদ্ধতিতে দেশে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। এ পদ্ধতিতে যেকোনো অবৈধ বিদেশি শ্রমিক ৪০০ রিঙ্গিত জরিমানা এবং কুয়ালালামপুর-ঢাকা বিমানের টিকিট নিয়ে পুত্রাজায়ার ইমিগ্রেশনে গেলেই দেশে ফেরার জন্য সুযোগ দেয়া হবে। তবে ফ্রি প্লাস ওয়ান পদ্ধতি কত দিন থাকবে তা জানা যায়নি।
এ অবস্থায় আতঙ্কিত না হয়ে বৈধ হওয়ার সুযোগ নিতে হাইকমিশনে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ অভিযানে শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে ইমেজ সঙ্কটেও পড়ছে প্রবাসীরা।