সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে গঠিত কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), নির্বাচনব্যবস্থা এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধানরা এই প্রতিবেদন জমা দেবেন। জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে আগামী ৩১ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনকে ১০০-তে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এসব আসনে দলীয় সমঝোতার পরিবর্তে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নারী প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন।
কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, তিন শ আসনের মধ্যে লটারি করে ১০০টি নির্ধারণ করা হবে, যেখানে কেবল নারী প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পরবর্তী দুই সংসদে পর্যায়ক্রমে বাকি দুই শ আসনে নারীদের ভোট হবে। এ পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ‘ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি’।
সংস্কার কমিশনের আরেক সদস্য ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, “এই পদ্ধতির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে তিনটি সংসদ নির্বাচনে নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। অতীতে দলীয় সিদ্ধান্তে সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার সুযোগ থাকলেও প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে সেটি আর থাকছে না।”
১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী সংসদের আসন সংখ্যা তিন শ নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন যোগ করা হয়। এই আসনগুলোও দলীয় সমঝোতার মাধ্যমে বণ্টন করা হতো। তবে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, দলীয় ইচ্ছার পরিবর্তে ভোটের মাধ্যমে নারীদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে নারীর ক্ষমতায়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।