তিনি গতকাল রাতে মিরপুরের গ্রান্ড প্রিন্স বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কাফরুল জোন আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অর্জিত বিজয় সংরক্ষণ এবং নতুন বাংলাদেশের পুনর্গঠনে ব্যবসায়ীদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান।
উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহ আলম তুহিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, আব্দুল মতিন খান ও ডা. আহসান হাবিব, ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য দেন কনসালটেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মুস্তাফিজুর রহমান, বনানী ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর আলম, ইঞ্জিনিয়ার লিঃ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রফিকুল ইসলাম, শ্যামল বাংলার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক হাসান, রোজ ভ্যালির ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম, স্বর্ণ ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম, আকবর হোসেন ও জালাল আহমেদ প্রমূখ।
তিনি বলেন, হালালভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য রিজিক উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম। রাসূল (সা.)নিজেও ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন। যাঁরা সৎভাবে ব্যবসা করেন, ইসলামের দৃষ্টিতে তাঁদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ হয়েছে, ‘সৎ ও আমানতদার ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সত্যবাদী ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১২০৯), অপর হাদিসে বলা হয়েছে, ‘কিয়ামতের দিন ব্যবসায়ীদের ফাসিক বা গুনাহগাররূপে উঠানো হবে; কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, নির্ভুলভাবে কাজ করে এবং সততা ধারণ করে তারা এর ব্যতিক্রম। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১২১০) ব্যবসায় বরকত লাভের আরেকটি করণীয় হলো, উদারচিত্ত হওয়া। ব্যবসা-বাণিজ্যে উদারচিত্ত হলে বেশি সফলতা পাওয়া যায়। রাসুুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিক্রয়কালে উদারচিত্ত, ক্রয়কালেও উদারচিত্ত এবং পাওনা আদায়ের তাগাদায়ও উদারচিত্ত, আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি দয়া করেন। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২০৩) তাই ব্যবসা-বাণিজ্যে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করতে চাইলে কুরআন-সুন্নাহর নিদের্শনা মেনে ব্যবসা করতে হবে। তিনি আল্লাহর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি নিয়ে এবং দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধ থেকে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনা করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরাই আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। কিন্তু বিগত স্বৈরশাসকের আমলে ব্যবসায়িরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেননি। সরকারি দল ও তার অঙ্গ সংগঠনের চাঁদাবাজী, দখলবাজী ও অবৈধ প্রভাব দেশের ব্যবসায়ি সমাজকে রীতিমত বিপর্যস্ত করে তোলে। কালো টাকা ও অবৈধ অর্থের প্রভাবে দেশের ব্যবসায়ি সেক্টরে রীতিমত নৈরাজ্য দেখা দেয়। কিন্তু ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয় ও জালিম সরকারের পতনের পর সৎভাবে ব্যবসা করার সকল প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। এবার আর পিছুটান নয় বরং ক্ষুধা, দারিদ্র, অপশাসন ও দুঃশাসন মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পালা। এক্ষেত্রে দেশের ব্যবসায়ি সমাজকে উদার ও দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির পূণর্গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাদের রাখতে হবে ঐতিহাসিক ভূমিকা। তিনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষায় ব্যবসায়িদের অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
মোহাম্মদপুর জোনে সদস্য(রুকন) সম্মেলন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মোহাম্মদপুর জোনের উদ্যোগে রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও মোহাম্মদপুর জোনের পরিচালক জিয়াউল হাসানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
সম্মেলনে মহাগ্রন্থ আল কুরআন থেকে দারস পেশ করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড. আবুল ইহসান। উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মপুর পূর্ব থানা আমীর ডা. মশিউর রহমান, শেরে বাংলানগর উত্তর থানা আমীর আব্দুল আউয়াল আজম, মোহাম্মদপুর মধ্য থানা আমীর মশিউর রহমান, মোহাম্মদপুর উত্তর থানা আমীর মনিরুজ্জামান শামীম, মোহাম্মদপুর পূর্ব থানা সেক্রেটারি আনিসুর রহমান, শেরে বাংলানগর উত্তর থানা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম ও মোহাম্মদপুর মধ্য থানা সেক্রেটারি এমরান আলী প্রমূখ।