সোমবার | ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সুন্দরবন কয়রায় কোস্ট গার্ডের দুটি অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার, জিম্মি জেলে মুক্ত ও হরিণের মাংসসহ শিকারি আটক Logo খুবিতে নতুন উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ট্রেনিং অনুষ্ঠিত Logo পলাশবাড়ীতে অফিসের হাটের বেদখল জায়গা উদ্ধারে জোর দাবি: আরইউটিডিপির বরাদ্দে আধুনিক স্থাপনা চায় পৌরবাসী Logo পলাশবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস আজ Logo টেকনাফে গহীন পাহাড় থেকে নারী ও শিশুসহ ৭ জন উদ্ধার, আটক-৩ Logo কয়রায় জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদের নির্বাচনী  গণসংযোগ Logo ইবিতে প্রশাসনের কমিটি থেকে পদত্যাগ বিএনপিপন্থী ৩ শিক্ষকের Logo খালেদা জিয়ার আশু সুস্থতা প্রত্যাশায় কয়রায় বিএনপির দোয়া মাহফিল Logo পলাশবাড়ীতে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ও শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত  Logo পলাশবাড়ীতে ছাত্রলীগ কর্মীর চাইনিজ কুড়ালের আঘাতে জামায়াত নেতা আহত

দেড় যুগেও মেলেনি জমি অধিগ্রহনের টাকা সিরাজগঞ্জ বেতিল স্পার বাধে জমির মালিকদের মানববন্ধন

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ১১:৩৪:১৯ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১০ জুন ২০১৭
  • ৭৭৮ বার পড়া হয়েছে

রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ  সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বেতিল-আজুগড়া স্পার বাধ নির্মানের সময়কাল ১৭ বছর পার হলেও এখনো জমি অধিগ্রহনের টাকা হাতে পায়নি জমির মালিকরা। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে ঘুরেও মিলছেনা কোন সদুত্তর। আর তাই আজ শনিবার সকালে মানববন্ধনের মধ্যে দিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধতে হয়েছেন জমির ওয়ারিশিয়ানরা। তাদের দাবী দ্রুততম সময়ের মধ্যে অধিগ্রহনের টাকা না দিলে সরকার যেন তাদের জমি তাদের বুঝিয়ে দেয়। অন্যথায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তারা আদালতে যাবেন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন, এ বছর ৮০ লক্ষ টাকার বরাদ্দ দেবার ব্যবস্থা তিনি করবেন।

যমুনা নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বেতিল-আজুগড়া ১ কিলোমিটার দীর্ঘ স্পার বাধ নির্মান করে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। নির্মানের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের ক্ষতিপূরন দেয়ার মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে এলাকাবাসী তাদের জমির  উপরে বাধ নির্মানের অনুমতি দেন। পরবর্তীতে প্রায় শতাধিক জমির মালিক তাদের জমির ক্ষতিপূরনের টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দ্বারা নানা হয়রানীর শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়ে ১৭ বছরেও মেলেনি তাদের ক্ষতিপূরনের টাকা। ইতিমধ্যেই ভিটা মাটি হারা ও বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন কয়েকজন জমির মালিক। এজন্য তারা এখন বেড়িবাধের উপর মানববন্ধন আর বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

জমির মালিক হাজী আব্দুল কুদ্দুস জানান, দীর্ঘ সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত কোন টাকা না পেয়ে হতাশ তারা। তার সঙ্গে থাকা কয়েক জন জমির মালিক টাকা ও জমি না পেয়ে শোকে ও চিন্তায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে মরার আগে জরি অধিগ্রহনের টাকা গুলো পেলে একটু সু চিকিৎসা নিয়ে মরতে পারতাম।

আরেক জন জমির মালিক আব্দুল হালিম জানান, অনেক অসহায় পরিবার রয়েছে যারা দেশের স্বার্থে নিজেদের বসতভিটা এই বাধে দিয়ে  অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে মনবতার জীবন যাপন করছে। তাদের অন্তত জমি অধিগ্রহনের টাকা গুলো দিলে একটু জায়গা জমি কিনে বসবাস করতে পারতো। কিন্তু এখন তাও করতে পারছেনা।

জমির মালিক আব্দুল হাকিম জানান, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মুখের কথা বিশ্বাস করে আমরা জায়গা জমি দিয়ে দিয়েছি। এখন এই জমির টাকা চাইতে গেলে তারা আমাদের সাথে দূর ব্যবহার করে এবং মোটা অংকের ঘুষ দাবী করে। আমরা এখন অসহায় অবস্থায় জীবন যাপন করছি। তাই প্রধান মন্ত্রীর কাছে আবেদন হয় আমাদের জমি অধিগ্রহনের টাকা দেন নইলে বাধ কেটে জায়গা ফিরিয়ে দেন।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানালেন, ১৭ বছর আগে এই কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। কেন তখন জমি অধিগ্রহনের টাকা দেয়া হয়নি, তা তিনি জানেন না। তবে এ বছর ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চলতি ২০১৭/১৮ অর্থ বছরে তাদের সিংহ ভাগ টাকা পরিশোধ করা হবে। বাকীটা পরবর্তী অর্থ বছরে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা সরকার খুব দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের জমি অধিগ্রহনের প্রায় ৬ কোটি টাকা সহ ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা করবেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সুন্দরবন কয়রায় কোস্ট গার্ডের দুটি অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার, জিম্মি জেলে মুক্ত ও হরিণের মাংসসহ শিকারি আটক

দেড় যুগেও মেলেনি জমি অধিগ্রহনের টাকা সিরাজগঞ্জ বেতিল স্পার বাধে জমির মালিকদের মানববন্ধন

আপডেট সময় : ১১:৩৪:১৯ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১০ জুন ২০১৭

রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ  সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বেতিল-আজুগড়া স্পার বাধ নির্মানের সময়কাল ১৭ বছর পার হলেও এখনো জমি অধিগ্রহনের টাকা হাতে পায়নি জমির মালিকরা। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে ঘুরেও মিলছেনা কোন সদুত্তর। আর তাই আজ শনিবার সকালে মানববন্ধনের মধ্যে দিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধতে হয়েছেন জমির ওয়ারিশিয়ানরা। তাদের দাবী দ্রুততম সময়ের মধ্যে অধিগ্রহনের টাকা না দিলে সরকার যেন তাদের জমি তাদের বুঝিয়ে দেয়। অন্যথায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তারা আদালতে যাবেন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন, এ বছর ৮০ লক্ষ টাকার বরাদ্দ দেবার ব্যবস্থা তিনি করবেন।

যমুনা নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বেতিল-আজুগড়া ১ কিলোমিটার দীর্ঘ স্পার বাধ নির্মান করে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। নির্মানের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের ক্ষতিপূরন দেয়ার মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে এলাকাবাসী তাদের জমির  উপরে বাধ নির্মানের অনুমতি দেন। পরবর্তীতে প্রায় শতাধিক জমির মালিক তাদের জমির ক্ষতিপূরনের টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দ্বারা নানা হয়রানীর শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়ে ১৭ বছরেও মেলেনি তাদের ক্ষতিপূরনের টাকা। ইতিমধ্যেই ভিটা মাটি হারা ও বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন কয়েকজন জমির মালিক। এজন্য তারা এখন বেড়িবাধের উপর মানববন্ধন আর বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

জমির মালিক হাজী আব্দুল কুদ্দুস জানান, দীর্ঘ সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত কোন টাকা না পেয়ে হতাশ তারা। তার সঙ্গে থাকা কয়েক জন জমির মালিক টাকা ও জমি না পেয়ে শোকে ও চিন্তায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে মরার আগে জরি অধিগ্রহনের টাকা গুলো পেলে একটু সু চিকিৎসা নিয়ে মরতে পারতাম।

আরেক জন জমির মালিক আব্দুল হালিম জানান, অনেক অসহায় পরিবার রয়েছে যারা দেশের স্বার্থে নিজেদের বসতভিটা এই বাধে দিয়ে  অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে মনবতার জীবন যাপন করছে। তাদের অন্তত জমি অধিগ্রহনের টাকা গুলো দিলে একটু জায়গা জমি কিনে বসবাস করতে পারতো। কিন্তু এখন তাও করতে পারছেনা।

জমির মালিক আব্দুল হাকিম জানান, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মুখের কথা বিশ্বাস করে আমরা জায়গা জমি দিয়ে দিয়েছি। এখন এই জমির টাকা চাইতে গেলে তারা আমাদের সাথে দূর ব্যবহার করে এবং মোটা অংকের ঘুষ দাবী করে। আমরা এখন অসহায় অবস্থায় জীবন যাপন করছি। তাই প্রধান মন্ত্রীর কাছে আবেদন হয় আমাদের জমি অধিগ্রহনের টাকা দেন নইলে বাধ কেটে জায়গা ফিরিয়ে দেন।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানালেন, ১৭ বছর আগে এই কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। কেন তখন জমি অধিগ্রহনের টাকা দেয়া হয়নি, তা তিনি জানেন না। তবে এ বছর ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চলতি ২০১৭/১৮ অর্থ বছরে তাদের সিংহ ভাগ টাকা পরিশোধ করা হবে। বাকীটা পরবর্তী অর্থ বছরে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা সরকার খুব দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের জমি অধিগ্রহনের প্রায় ৬ কোটি টাকা সহ ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা করবেন।