শুক্রবার | ২৮ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী Logo প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থায়ী মর্গ, জীর্ণ-ভবনে ময়নাতদন্ত Logo চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে তারুণ্যের আলো সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প Logo ফের ভূমিকম্প Logo কচুয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে ৩০টি প্রদর্শনী Logo কুবির বাংলা বিভাগের বাংলা নাটক বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন Logo মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত Logo মাগুরার শ্রীপুরে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৫ এর উদ্বোধন Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ প্রদর্শনী Logo আমরা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছি: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী বাবু খান

ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসে লাইনম্যানের কাজ করে গ্যাটিজ:১১ হাজার ভোল্ট শর্টে গ্যাটিজ শাহিন এখন মৃত্যু পথে

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:০৩ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৬ মে ২০১৭
  • ৮০৫ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ  দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) লাইন ম্যানের সমস্ত কাজ গুলো সারা হয় গ্যাটিজ দিয়ে। ঠিক এমনই অবস্থায় লাইন ম্যানের কাজ করতে গিয়ে গ্যাটিজ শাহিন মোল্লা এখন মৃত্যু পথ যাত্রী। এঘটনার দায়ভার গ্রহন করতে ঝিনাইদহ বিদ্যুত বিতরন অধিদপ্তরের কেউই রাজি নন। এ অবস্থায় কে দেখবে শাহীনকে? দেখার যেন কেউই নেই। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে কাতর কন্ঠে ঘটনার বিস্তারিত বিবরন দিলেন শাহীন।

শাহীনের বর্ননা অনুযায়ী জানাগেছে, ৩রা এপ্রিল বুধবার দুপুর সাড়ে বারটার দিকে ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের (ওজোপাডিকো) লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ গ্যাটিজ শাহীনকে বলেন, বিষয়খালী বোর্ড ঘরের সামনে ট্রান্সফরমারের নেগেটিভ বুস কেটে গেছে লাগাতে হবে। লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ নিজের কাজ নিজে না করে গ্যাটিজ শাহীনকে তুলেদেন ১১ হাজার ভোল্টের ট্রান্সফরমারের নেগেটিভ বুসের তার লাগাতে।

ট্রান্সফরমারের নেগেটিভ বুসের কাজ করা অবস্থায় ঝিনাইদহ শহরের হামদহের সাবষ্টেশনের এসবিএ হাফিজ হঠাৎ করে লাইনের সুইজ অন করে দিলে শাহীন ১১ হাজার ভোল্টের তারে জড়িয়ে ঝুলতে থাকে। এমতবস্থায় খাম্বায় লাগানো বাঁশের মই দিয়ে নিচ থেকে মজিবর ও পরিতোষ ধাক্কা মেরে শাহীনকে মাটিতে ফেলে দেয়।  শাহীনের হাত, পা, উরু, বুকের পাশে চামড়া সহ মাংশ উঠে যায়। পরে লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ শাহীনকে উদ্ধার করে পিকাপে তুলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সে সার্জারী ওয়ার্ডের ৯নং বেডে কেঁদে কেঁদে সাংবাদিকদের কাছে তার করুন কষ্টের কথা বর্ননা করেন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার রাশেদ আল মামুন তাকে চিকিৎসা দেন। ক্রমে ক্রমে অবস্থার অবনতী হলে ৪ঠা এপ্রিল ঢাকা বার্ন ইউনিটে তাকে রেফার্ড করা হয়। এখন সে ঢাকা বার্ন ইউনিটের ৫ম তলায় ১০৩ নং রুমের ১০ নং বেডে একই অবস্থায় আছেন বলে জানীয়েছেন শাহীন। এঘটনায় শাহীনের মা ও বোন রানু বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) লাইনম্যানেরা নিজের কাজ নিজে না করে গ্যাটিজ দিয়ে জটিল কাজগুলো করানোর জন্য বারংবার এধরনের মারাত্বক দুর্ঘটনা ঘটছে। লাইনম্যানের কাজ গ্যাটিজ দিয়ে করানো অবশ্যই অপরাধ, আর আমার ভাই শাহীনের দুর্ঘটনার জন্য দায়ী লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ। আমি লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষের সর্বচ্চ শাস্তি দাবী করছি।

এব্যাপারে লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষের সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে গেলে, মজিবর ফোন রিসিভ করেননি। আর পরিতোষ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলামনা, আমি কিচ্ছুই জানিনা। শাহীনের সার্কেলের ইঞ্জিনিয়ার নির্মলবাবু সাংবাদিকদের পরামর্শদেন এ সংবাদটি প্রকাশ না করতে। তিনি আরো বলেন, অফিসে আসেন চা খেতে খেতে কথা হবে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) কর্মচারীরা জানিয়েছেন, বাইরের গ্যাটিজ দিয়ে গাড়ি চলানো ও লাইন সংযোগ সহ বিভিন্ন প্রকারের জটিল বৈদ্যুতিক কাজ কর্ম তাদেরকে দিয়ে করানো হয়। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন গ্যাটিজদের মধ্যে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় নেবুতলার মজনু মারা গেছে। সারা জীবনের মত পঙ্গু হয়ে গেছে খাজুরার মির্জা, পবহাটির খলিল, আরাপপুরের খোরশেদ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী

ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসে লাইনম্যানের কাজ করে গ্যাটিজ:১১ হাজার ভোল্ট শর্টে গ্যাটিজ শাহিন এখন মৃত্যু পথে

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:০৩ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৬ মে ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ  দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) লাইন ম্যানের সমস্ত কাজ গুলো সারা হয় গ্যাটিজ দিয়ে। ঠিক এমনই অবস্থায় লাইন ম্যানের কাজ করতে গিয়ে গ্যাটিজ শাহিন মোল্লা এখন মৃত্যু পথ যাত্রী। এঘটনার দায়ভার গ্রহন করতে ঝিনাইদহ বিদ্যুত বিতরন অধিদপ্তরের কেউই রাজি নন। এ অবস্থায় কে দেখবে শাহীনকে? দেখার যেন কেউই নেই। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে কাতর কন্ঠে ঘটনার বিস্তারিত বিবরন দিলেন শাহীন।

শাহীনের বর্ননা অনুযায়ী জানাগেছে, ৩রা এপ্রিল বুধবার দুপুর সাড়ে বারটার দিকে ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের (ওজোপাডিকো) লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ গ্যাটিজ শাহীনকে বলেন, বিষয়খালী বোর্ড ঘরের সামনে ট্রান্সফরমারের নেগেটিভ বুস কেটে গেছে লাগাতে হবে। লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ নিজের কাজ নিজে না করে গ্যাটিজ শাহীনকে তুলেদেন ১১ হাজার ভোল্টের ট্রান্সফরমারের নেগেটিভ বুসের তার লাগাতে।

ট্রান্সফরমারের নেগেটিভ বুসের কাজ করা অবস্থায় ঝিনাইদহ শহরের হামদহের সাবষ্টেশনের এসবিএ হাফিজ হঠাৎ করে লাইনের সুইজ অন করে দিলে শাহীন ১১ হাজার ভোল্টের তারে জড়িয়ে ঝুলতে থাকে। এমতবস্থায় খাম্বায় লাগানো বাঁশের মই দিয়ে নিচ থেকে মজিবর ও পরিতোষ ধাক্কা মেরে শাহীনকে মাটিতে ফেলে দেয়।  শাহীনের হাত, পা, উরু, বুকের পাশে চামড়া সহ মাংশ উঠে যায়। পরে লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ শাহীনকে উদ্ধার করে পিকাপে তুলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সে সার্জারী ওয়ার্ডের ৯নং বেডে কেঁদে কেঁদে সাংবাদিকদের কাছে তার করুন কষ্টের কথা বর্ননা করেন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার রাশেদ আল মামুন তাকে চিকিৎসা দেন। ক্রমে ক্রমে অবস্থার অবনতী হলে ৪ঠা এপ্রিল ঢাকা বার্ন ইউনিটে তাকে রেফার্ড করা হয়। এখন সে ঢাকা বার্ন ইউনিটের ৫ম তলায় ১০৩ নং রুমের ১০ নং বেডে একই অবস্থায় আছেন বলে জানীয়েছেন শাহীন। এঘটনায় শাহীনের মা ও বোন রানু বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) লাইনম্যানেরা নিজের কাজ নিজে না করে গ্যাটিজ দিয়ে জটিল কাজগুলো করানোর জন্য বারংবার এধরনের মারাত্বক দুর্ঘটনা ঘটছে। লাইনম্যানের কাজ গ্যাটিজ দিয়ে করানো অবশ্যই অপরাধ, আর আমার ভাই শাহীনের দুর্ঘটনার জন্য দায়ী লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষ। আমি লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষের সর্বচ্চ শাস্তি দাবী করছি।

এব্যাপারে লাইনম্যান মজিবর ও পরিতোষের সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে গেলে, মজিবর ফোন রিসিভ করেননি। আর পরিতোষ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলামনা, আমি কিচ্ছুই জানিনা। শাহীনের সার্কেলের ইঞ্জিনিয়ার নির্মলবাবু সাংবাদিকদের পরামর্শদেন এ সংবাদটি প্রকাশ না করতে। তিনি আরো বলেন, অফিসে আসেন চা খেতে খেতে কথা হবে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) কর্মচারীরা জানিয়েছেন, বাইরের গ্যাটিজ দিয়ে গাড়ি চলানো ও লাইন সংযোগ সহ বিভিন্ন প্রকারের জটিল বৈদ্যুতিক কাজ কর্ম তাদেরকে দিয়ে করানো হয়। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ বিদ্যুত অফিসের(ওজোপাডিকো) কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন গ্যাটিজদের মধ্যে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় নেবুতলার মজনু মারা গেছে। সারা জীবনের মত পঙ্গু হয়ে গেছে খাজুরার মির্জা, পবহাটির খলিল, আরাপপুরের খোরশেদ।