বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অনেকে অনেক কিছু করছে। যেমন ইনকাম ট্যাক্স অফিসে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একজন আন্দোলন করছেন। আজ চেয়ারম্যানকে সরাবেন, তাকে সরাবেন… কই আমি তো সিনিয়ার যুগ্ম মহাসচিব আমি তো জানি না। এভাবে সুবিধাবাদী একটি চক্র নানাভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ব্যাপরে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
রিজভী বলেন, ‘শিমুল বাহিনী, শাহিন চাকলাদার বাহিনীর মতো বাহিনী বাংলাদেশের জেলায় জেলায় গঠন করা হয়েছিল মাফিয়া গডফাদার হিসেবে। হাসিনার থেকে সুবিধা নেওয়া লোকেরা প্রশাসনে ঘাঁপটি মেরে আছে।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্টজনদের দিয়ে বাংলাদেশকে ডাকাতদের গ্রাম বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রজনতা সেটি করতে দেয়নি। প্রতিহত করেছে। বাংলাদেশে এ ধরনের কাজ করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর শেখ হাসিনা তার সাজানো বাহিনী দিয়ে তার পথের কাটা দূর করার জন্য এবং চিরদিনের জন্য রানী হয়ে থাকার জন্য বিরোধী দলকে দমন করেছেন। তার শিকার হিয়েছি বিরোধী দলসহ সবাই। শেখ হাসিনার টার্গেট ছিল গণতন্ত্রের পক্ষে কেউ কোনো কথা বলতে গেলে, তাকে বর্বোচিত আক্রমণ সইতে হবে। এই ভাগ্যের লিখন নির্ধারণ করতেন শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে রথ যাত্রার জন্য অপেক্ষা করতাম। সব সম্প্রদায় অপেক্ষা করতো।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে একটা মুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আমরা প্রত্যাশা করি, সামনে ভালো রাজনীতি হবে, সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে। আমরা সেই পরিস্থিতির মধ্যে ফিরে যেতে চায় না, যেখানে সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর অধিকার জনগণের কাছে ছিল না। সেই অধিকার শেখ হাসিনা কেড়ে নিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দোসর হাবিবুল আউয়ালই এখন বলছে, দুই টার্মের নির্বাচন ছিল ডামি নির্বাচন। আমরা তো এটা আগেই বলেছি। এই নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে। অনেককে ক্রসফায়ারে দেওয়া হয়েছে। ডামি নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য অসংখ্য নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অন্ধ হয়ে গেছেন দুইশ থেকে তিনশর মতো নেতাকর্মী।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে হাবিবুল আউয়াল বলছেন, ডামি নির্বাচন হয়েছে। আপনি তো শিক্ষিত লোক ছিলেন, সচিব ছিলেন; আপনার সেদিন বিবেকে বাধেনি- আপনার ভুল কাজটি করার জন্য চেইন রিক্যাকশনে জনগণ ও দেশের কতো ক্ষতি হবে। এই ভোটারবিহিনী ডামি নির্বাচন একটা অবৈধ নির্বাচন। তাহলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেটি ছিল, সেটি অবৈধ পার্লামেন্ট, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী, অবেধ রাষ্ট্রপতি এবং তাদের হাত দিয়ে যারা নিয়োগ হয়েছিলেন— সচিব বলুন আর বিভিন্ন করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলুন, তারা প্রত্যেকে অবেধ এবং তাদের নিয়োগকৃত বিচারকরাও অবৈধ ছিলেন এবং তাদের দেওয়া রায়গুলোও ছিল অবৈধ। তাহলে একটা অবৈধ দুঃশাসন ও আইনের মধ্যে আমাদের জীবন যাপন করতে হয়েছে।’
যাদের বিচার হওয়ার কথা, যাদের চরম দণ্ড হওয়ার কথা; তারাই রাজ্যের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়ে গেলেন বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।