তারেক রহমান এক অনন্য উচ্চতায়

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১২:০১:০৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
  • ৭০৮ বার পড়া হয়েছে

আইরিশ নাট্যকার স্যামুয়েল বেকেট তাঁর ‘ওয়েটিং ফর গোডো’ নাটকের জন্য আজও কিংবদন্তি। নাটকের প্রধান দুই চরিত্র ভ্লাদিমির ও এস্ট্রাগন নির্জন রাস্তার পাশে একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে অনিশ্চিত অপেক্ষা করছে। যেখানে তাদের সঙ্গী কেউ নেই, কিছু করার নেই, কোথাও যাওয়ার নেই, সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসবে কি না জানে না। অর্থাৎ অস্থিরতা আর অন্তঃসারশূন্য সমাজের চিত্রনাট্যই দৃশ্যমান হয়েছে এখানে।

নাটকের চরিত্রের দুজনের মতোই একদিকে হতাশা, অন্যদিকে অনিশ্চিত জীবনের বাসিন্দা বাংলাদেশের মানুষ। যেন তাদের কেউ নেই, কিছু নেই। স্যামুয়েল বেকেট যুগান্তকারী এই নাটকটি লিখেন ১৯৪৮ সালে। এর কাহিনি বিশ্বের নাটকপ্রিয় মানুষ মাত্রই জানে।

তবে এত বছর পর সম্ভবত বাংলাদেশিরা জেনে গেছে তারা একজনের জন্য ঠিকই অপেক্ষা করছে। যিনি হবেন ক্ষতবিক্ষত দেশটির অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবিক মুক্তির নায়ক। একাত্তরের পর থেকেই বাংলাদেশ অনিশ্চিত যাত্রার সঙ্গী। বেশির ভাগ সময়ই উপহাস আর অনাদরে পার করছে বছর।

সেই তারাই একের পর এক শিকল ছেঁড়া শুরু করে! সবচেয়ে বড় শিকলটা ছিন্নভিন্ন করে একাত্তরে। এরপরও সময়ে সময়ে বিভিন্ন সংকট মোকাবেলা করতে হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট নতুনভাবে আবারও উজ্জীবনীর গান গায় বাঙালি।
সম্মিলিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত বাঙালি। প্রয়োজন নেতৃত্ব।

তাহলে কে এবং কবে সমস্যাগুলো দূর করতে নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। জাতির ভাগ্যে বিভিন্ন সময়ে কয়েকজন নেতার আগমন ঘটলেও কাঙ্ক্ষিত মুক্তি মিলেনি। আদায় হয়নি অধিকার। বরং বারবার চেনা দৈত্য-দানব অচেনা রূপে ছারখার করে গেছে। ফলে বাঙালি চরিত্র ভ্লাদিমির ও এস্ট্রাগন জীবনেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

২. আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে শান্তির দূত ভাবেন। এটাও বলেন, পৃথিবীর অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করলেও আমার নাম কেউ মুখে নিতে চায় না। অর্থাৎ তিনি বিনিময় চান, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেকে ঈশ্বরপ্রেরিত দূত উল্লেখ করে পুনরায় ক্ষমতায় এসেছেন। একবার নয়, দুবার নয়, বারবার জনতাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘কেউ আমাকে মূর্খ বা পাগল ভাবতে পারেন। কিন্তু আমি জানি, আমি ঈশ্বরপ্রেরিত।’ একই পন্থায় শেখ হাসিনাও নিজেকে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যক্তি ভাবা শুরু করেছিলেন। কারণ এটা তাঁর বাবার দেশ, যা ইচ্ছা তা করার অধিকার রাখেন। আবার তিনিই দেশটির সব সমাধানের নেত্রী। আর সংকটের শুরু এখানেই।

কেউ কেউ ভিন্ন ও ব্যতিক্রম। মাস কয়েক পূর্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের কর্মীদের বলেন, ‘সহকর্মী হিসেবে আপনাদের প্রতি আমার একটি অনুরোধ। আপনাদের নেতা হিসেবে আমার নির্দেশ, আজকের পর থেকে দয়া করে আমার নাম যখন কেউ বলবেন, কেউ আমাকে দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক—এই শব্দগুলো বলবেন না। এটি আমার একটু অনুরোধ, আমার নির্দেশ।’ অথচ ৫ আগস্টের পর তিনি ক্ষমতা দখলের জন্য দলের বিশাল কর্মীবাহিনী দিয়ে কূটচালে রাজনীতির ময়দান ত্রাহি ত্রাহি করে তুলতে পারতেন। রাজনৈতিক প্রাজ্ঞতা, বিজ্ঞতা-অন্তত জনপ্রিয়তা দিয়ে তা করা খুব কঠিন কিছু ছিল না। এখনো সেটা সম্ভব, কিন্তু তা থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করলেন তিনি। ইতিহাস বলে, এই ভূমিকায় অন্য যে কেউ হলে ফলাফল ভিন্ন কিছু হতো।

তারেক রহমান কে? কী তাঁর পরিচয়? যাঁর বাবা বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট, মা তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাই তিনি অন্যদের মতো ভাববেন না, ভাবাটা যৌক্তিকও হবে না। তিনি জানেন, পরিশীলিত ও মার্জিত হতে হয়। এটাই রাজনীতি ও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

৩. পহেলা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ জন্মলগ্ন থেকে বিএনপি সাধারণ মানুষের দল হিসেবে স্বীকৃত ও পরিচিত। নয়তো দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা থাকবে কেন দলটির? নেতাকর্মীরা জেল, জুলুম ও জরিমানার পরও কেন উজ্জীবিত! কারণ দলটির আছে যোগ্য নেতৃত্ব, ভিশন ও মিশনের স্বচ্ছতা। তাহলে মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক দলটির কর্ণধার বিদেশের মাটিতে কেন? উত্তর হলো, এক-এগারো ও তার পরবর্তী সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর তাঁর দেশে ফেরার পথ রুদ্ধ করে। ২০১০ সালের পর পাসপোর্টটিও নবায়ন করেনি দূতাবাস। ২০১৪ সালে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলেও তৎকালীন বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ট্রাভেল পাসপোর্ট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। অথচ বলা হচ্ছে ইংল্যান্ডে পরিবারসহ রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন তারেক, তাহলে তিনি প্রথম কিংবা একমাত্র ব্যক্তি নন। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আবেল এসক্রিবা ফলশ এবং ড্যানিয়েল ক্রেমারিচ এক হিসাব তুলে ধরে বলছেন, ১৯৪৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১৮০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

এই মুহূর্তে তারেক রহমান আলোচনায় কেন? কারণ দেশের মানুষের পাশে থাকার আগ্রহ, ইচ্ছা ও পরিকল্পনা বিভিন্নভাবে ব্যক্ত করছেন। ২০২০ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মদিবসের আলোচনা ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেছিলেন, পরবর্তীতে দিয়েছিলেন রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য রূপরেখার ৩১ দফা, জুলাই আন্দোলনকারী ও বিপদগ্রস্তদের পাশেও সাহসী হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল উত্তরবঙ্গের এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘জাতি বিভাজিত হলে দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা ধর্ম বিবেচনা করব না, বাংলাদেশি হিসেবে বিবেচনা করব এবং সব ধর্মের মানুষের সম্প্রীতির দেশ গড়ে তুলব।’

পূর্বের সরকার দেশের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের জান ও জবানের নিরাপত্তা বিভিন্নভাবে বিঘ্নিত করার পাশাপাশি জাতির সামনে ঘৃণিত ও নিন্দনীয়ভাবে উপস্থাপন করেছে। তাদের কথা ভেবে তারেক রহমান বলেন, সমাজের অনেক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি আছেন, যাঁরা দেশের জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু তাঁরা রেগুলার রাজনীতিতে নেই। তাঁদেরকে সমাজের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ দেবে বিএনপি।

বিভিন্ন সময়ে জাতিকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মাথায় রেখে তারেক রহমান যদি সামনের দিকে অগ্রসর হন, দিশাহারা জাতি ভ্লাদিমির ও এস্ট্রাগন চরিত্র থেকে বের হয়ে একজন সত্যিকার নেতা খুঁজে পেতে পারে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমান এক অনন্য উচ্চতায়

আপডেট সময় : ১২:০১:০৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

আইরিশ নাট্যকার স্যামুয়েল বেকেট তাঁর ‘ওয়েটিং ফর গোডো’ নাটকের জন্য আজও কিংবদন্তি। নাটকের প্রধান দুই চরিত্র ভ্লাদিমির ও এস্ট্রাগন নির্জন রাস্তার পাশে একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে অনিশ্চিত অপেক্ষা করছে। যেখানে তাদের সঙ্গী কেউ নেই, কিছু করার নেই, কোথাও যাওয়ার নেই, সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসবে কি না জানে না। অর্থাৎ অস্থিরতা আর অন্তঃসারশূন্য সমাজের চিত্রনাট্যই দৃশ্যমান হয়েছে এখানে।

নাটকের চরিত্রের দুজনের মতোই একদিকে হতাশা, অন্যদিকে অনিশ্চিত জীবনের বাসিন্দা বাংলাদেশের মানুষ। যেন তাদের কেউ নেই, কিছু নেই। স্যামুয়েল বেকেট যুগান্তকারী এই নাটকটি লিখেন ১৯৪৮ সালে। এর কাহিনি বিশ্বের নাটকপ্রিয় মানুষ মাত্রই জানে।

তবে এত বছর পর সম্ভবত বাংলাদেশিরা জেনে গেছে তারা একজনের জন্য ঠিকই অপেক্ষা করছে। যিনি হবেন ক্ষতবিক্ষত দেশটির অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবিক মুক্তির নায়ক। একাত্তরের পর থেকেই বাংলাদেশ অনিশ্চিত যাত্রার সঙ্গী। বেশির ভাগ সময়ই উপহাস আর অনাদরে পার করছে বছর।

সেই তারাই একের পর এক শিকল ছেঁড়া শুরু করে! সবচেয়ে বড় শিকলটা ছিন্নভিন্ন করে একাত্তরে। এরপরও সময়ে সময়ে বিভিন্ন সংকট মোকাবেলা করতে হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট নতুনভাবে আবারও উজ্জীবনীর গান গায় বাঙালি।
সম্মিলিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত বাঙালি। প্রয়োজন নেতৃত্ব।

তাহলে কে এবং কবে সমস্যাগুলো দূর করতে নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। জাতির ভাগ্যে বিভিন্ন সময়ে কয়েকজন নেতার আগমন ঘটলেও কাঙ্ক্ষিত মুক্তি মিলেনি। আদায় হয়নি অধিকার। বরং বারবার চেনা দৈত্য-দানব অচেনা রূপে ছারখার করে গেছে। ফলে বাঙালি চরিত্র ভ্লাদিমির ও এস্ট্রাগন জীবনেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

২. আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে শান্তির দূত ভাবেন। এটাও বলেন, পৃথিবীর অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করলেও আমার নাম কেউ মুখে নিতে চায় না। অর্থাৎ তিনি বিনিময় চান, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেকে ঈশ্বরপ্রেরিত দূত উল্লেখ করে পুনরায় ক্ষমতায় এসেছেন। একবার নয়, দুবার নয়, বারবার জনতাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘কেউ আমাকে মূর্খ বা পাগল ভাবতে পারেন। কিন্তু আমি জানি, আমি ঈশ্বরপ্রেরিত।’ একই পন্থায় শেখ হাসিনাও নিজেকে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যক্তি ভাবা শুরু করেছিলেন। কারণ এটা তাঁর বাবার দেশ, যা ইচ্ছা তা করার অধিকার রাখেন। আবার তিনিই দেশটির সব সমাধানের নেত্রী। আর সংকটের শুরু এখানেই।

কেউ কেউ ভিন্ন ও ব্যতিক্রম। মাস কয়েক পূর্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের কর্মীদের বলেন, ‘সহকর্মী হিসেবে আপনাদের প্রতি আমার একটি অনুরোধ। আপনাদের নেতা হিসেবে আমার নির্দেশ, আজকের পর থেকে দয়া করে আমার নাম যখন কেউ বলবেন, কেউ আমাকে দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক—এই শব্দগুলো বলবেন না। এটি আমার একটু অনুরোধ, আমার নির্দেশ।’ অথচ ৫ আগস্টের পর তিনি ক্ষমতা দখলের জন্য দলের বিশাল কর্মীবাহিনী দিয়ে কূটচালে রাজনীতির ময়দান ত্রাহি ত্রাহি করে তুলতে পারতেন। রাজনৈতিক প্রাজ্ঞতা, বিজ্ঞতা-অন্তত জনপ্রিয়তা দিয়ে তা করা খুব কঠিন কিছু ছিল না। এখনো সেটা সম্ভব, কিন্তু তা থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করলেন তিনি। ইতিহাস বলে, এই ভূমিকায় অন্য যে কেউ হলে ফলাফল ভিন্ন কিছু হতো।

তারেক রহমান কে? কী তাঁর পরিচয়? যাঁর বাবা বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট, মা তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাই তিনি অন্যদের মতো ভাববেন না, ভাবাটা যৌক্তিকও হবে না। তিনি জানেন, পরিশীলিত ও মার্জিত হতে হয়। এটাই রাজনীতি ও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

৩. পহেলা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ জন্মলগ্ন থেকে বিএনপি সাধারণ মানুষের দল হিসেবে স্বীকৃত ও পরিচিত। নয়তো দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা থাকবে কেন দলটির? নেতাকর্মীরা জেল, জুলুম ও জরিমানার পরও কেন উজ্জীবিত! কারণ দলটির আছে যোগ্য নেতৃত্ব, ভিশন ও মিশনের স্বচ্ছতা। তাহলে মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক দলটির কর্ণধার বিদেশের মাটিতে কেন? উত্তর হলো, এক-এগারো ও তার পরবর্তী সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর তাঁর দেশে ফেরার পথ রুদ্ধ করে। ২০১০ সালের পর পাসপোর্টটিও নবায়ন করেনি দূতাবাস। ২০১৪ সালে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলেও তৎকালীন বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ট্রাভেল পাসপোর্ট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। অথচ বলা হচ্ছে ইংল্যান্ডে পরিবারসহ রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন তারেক, তাহলে তিনি প্রথম কিংবা একমাত্র ব্যক্তি নন। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আবেল এসক্রিবা ফলশ এবং ড্যানিয়েল ক্রেমারিচ এক হিসাব তুলে ধরে বলছেন, ১৯৪৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১৮০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

এই মুহূর্তে তারেক রহমান আলোচনায় কেন? কারণ দেশের মানুষের পাশে থাকার আগ্রহ, ইচ্ছা ও পরিকল্পনা বিভিন্নভাবে ব্যক্ত করছেন। ২০২০ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মদিবসের আলোচনা ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেছিলেন, পরবর্তীতে দিয়েছিলেন রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য রূপরেখার ৩১ দফা, জুলাই আন্দোলনকারী ও বিপদগ্রস্তদের পাশেও সাহসী হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল উত্তরবঙ্গের এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘জাতি বিভাজিত হলে দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা ধর্ম বিবেচনা করব না, বাংলাদেশি হিসেবে বিবেচনা করব এবং সব ধর্মের মানুষের সম্প্রীতির দেশ গড়ে তুলব।’

পূর্বের সরকার দেশের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের জান ও জবানের নিরাপত্তা বিভিন্নভাবে বিঘ্নিত করার পাশাপাশি জাতির সামনে ঘৃণিত ও নিন্দনীয়ভাবে উপস্থাপন করেছে। তাদের কথা ভেবে তারেক রহমান বলেন, সমাজের অনেক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি আছেন, যাঁরা দেশের জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু তাঁরা রেগুলার রাজনীতিতে নেই। তাঁদেরকে সমাজের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ দেবে বিএনপি।

বিভিন্ন সময়ে জাতিকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মাথায় রেখে তারেক রহমান যদি সামনের দিকে অগ্রসর হন, দিশাহারা জাতি ভ্লাদিমির ও এস্ট্রাগন চরিত্র থেকে বের হয়ে একজন সত্যিকার নেতা খুঁজে পেতে পারে।