মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস। জয় পেয়েছেন চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প। জয় নিশ্চিত হওয়ার পরই আনন্দে মাতোয়ারা ট্রাম্প সমর্থকরা।
অন্যদিকে অনেকটা আড়ালে চলে গেছেন কমলার নির্বাচনী কর্মী, সমর্থক ও দলের নেতারা। এ পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
ওবামা তার দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছিলেন। কমলার ভোট ব্যাংক নিশ্চিতে নানাভাবে মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। কিন্তু শেষমেশ হারই মেনে নিতে হচ্ছে তাদের। এসব নিয়ে বৃহস্পতিবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেন ওবামা। স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো—
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এবং নির্বাচনের দিন ধরে লাখ লাখ আমেরিকান তাদের ভোট দিয়েছে; শুধু রাষ্ট্রপতির জন্য নয়, প্রতিটি স্তরের নেতা নির্বাচনের জন্য। এখন ফলাফল আসছে এবং আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং সিনেটর ভ্যান্সকে তাদের বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই।
এটি স্পষ্টতই যে, এমন ফলাফল আমরা আশা করিনি। বিভিন্ন বিষয়ে রিপাবলিকানদের সঙ্গে আমাদের গভীর মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্রে বাস করা মানে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় জয়ী হবে না; তা স্বীকার করা এবং ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর মেনে নিতে ইচ্ছুক হওয়া।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস ও গভর্নর ওয়ালজ বিজয় আনতে না পরায় মিশেল এবং আমি গর্বিত হতে পারিনি। কিন্তু দুজন অসাধারণ সরকারি সেবক। যারা অসাধারণ প্রচারণা চালিয়েছিলেন। আমরা সর্বদা কৃতজ্ঞ থাকব আমাদের কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে; যারা তাদের হৃদয় ও আত্মা কমলাকে নির্বাচিত করার জন্য সত্যিকারের বিশ্বাস করেছিলেন।
আমি প্রচারণার সময় বলেছিলাম, আমেরিকা গত কয়েক বছরে অনেক কিছু অতিক্রম করেছে। যার মধ্যে একটি ঐতিহাসিক মহামারি এবং মূল্যবৃদ্ধি অন্যতম। এ ছাড়া বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তন, অনেক লোকের অনুভূতি, সমসাময়িক পরিস্থিতিগুলো বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক ক্ষমতাবানদের জন্য মাথাব্যথা তৈরি করেছে। তবে গত রাতে আমরা দেখিয়েছি যে, আমেরিকা এসবে আক্রান্ত নয়।
সুসংবাদটি হলো, এই সমস্যাগুলো সমাধানযোগ্য। যদি আমরা একে অপরের কথা শুনি এবং যদি আমরা মূল সাংবিধানিক নীতি এবং গণতান্ত্রিক নিয়মগুলো মেনে চলি; যা এই দেশকে মহান করেছে।
আমাদের মতো বড় এবং বৈচিত্র্যময় একটি দেশে আমরা সবসময় সবকিছুর দিকে চোখ রাখত পারব না। কিন্তু অগ্রগতির জন্য আমাদের ভালো বিশ্বাস এবং করুণা প্রসারিত করতে হবে। এমনকি যাদের সঙ্গে আমরা গভীরভাবে একমত নই তাদের প্রতিও। এভাবেই আমরা এতদূর এসেছি এবং এভাবেই আমরা এমন একটি দেশ তৈরি করতে থাকব যা আরো ন্যায্য, আরো ন্যায়সঙ্গত, আরো বৈষম্যমুক্ত এবং আরো স্বাধীন হবে।