শিরোনাম :
Logo জাবি ছাত্রদলের বর্ধিত কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা Logo দৈনিক কালের কন্ঠের সম্পাদকের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo সাংবাদিককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ! Logo গল্লামারী মৎস্য খামার হস্তান্তরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে খুবি শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠি Logo ইবিতে হিন্দু ধর্ম অবমাননার অভিযোগে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি Logo খুবির আবাসন সংকট ও ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ নিরসনে বাধা গল্লামারী মৎস্য খামার Logo রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কালচারাল সোসাইটির সভাপতি নিতু, সাধারণ সম্পাদক রিদয় Logo ডাঃ আব্দুল হাই ফাউন্ডেশনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: ৯৩ কৃতি শিক্ষার্থীর মাঝে বৃত্তি সনদ ও নগদ সহায়তা প্রদান Logo সিরাজগঞ্জে রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফাটল! প্রশাসনের তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ Logo আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: জবির ফিন্যান্স ১৭তম ব্যাচের সহপাঠীদের বিবৃতি

আলমডাঙ্গায় মেঘ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলছে ধান কাটা

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০৬:৩১:১৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১১ মে ২০২০
  • ৭৭৩ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি: দিনে রোধের আলোয় আলোকিত সোনালী পাঁকা ধানের ক্ষেত। সন্ধ্যা নামলেই আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। রাত হলেই শুরু হয় ঝড় ও বৃষ্টি। এ ঝড়-বৃষ্টি যেনো কৃষকের কষ্টের পাহাড় তৈরি করেছে। আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌর সভায় এবছর মোট ১৩ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছে কৃষকেরা।
গত বছরের তুলনায় এ বছর ধানের ফলন ও দামে ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। তবে, বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রতিদিন ধান কাটা আর বেঁধে ঘরে তোলা কাজ এবছর যেনো কৃষকের বিষ ফোঁড়া হয়ে উঠেছে।
আলমডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, চলতি বছরে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৩ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও ধান ঘরে তোলা নিয়ে সংকটে রয়েছে কৃষকেরা। ধান কাটা ও ঘরে তোলার মৌসুমের শুরু ও শেষের দিকে অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া আশঙ্কা থাকে। এবারও বৈশাখের শুরু থেকেই হালকা মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ভাংবাড়িয়া গ্রামের ধান চাষি আলাউদ্দিন বলেন, দেড় একর জমিতে ধান চাষ করেছি। করোনা ভাইরাসের ভয়ে জমিতে আসতে পারি না। ঠিকমতো পানি সেচ দিতে পারি না। শহর থেকে শুরু করে সব কিছুই বন্ধ রয়েছে। গ্রামের যে দোকান থেকে বাকিতে তেল নিয়ে মেশিন চালায় সেই দোকানই বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। কাছে যে টাকা ছিল তাও শেষ হয়েছে। নগদ টাকা না দিলে তেল দেয় না। এখন কীভাবে জমিতে সেচ দিব। প্রচণ্ড রোদে জমি ফেটে যাচ্ছে। পাম্পে গেলে নগদ টাকা ছাড়া তেল দেয় না।
জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক হাবিব মিয়া বলেন, করোনা ভাইরাস, আকাশে মেঘ দেখে জানে পানি থাকে না। সমিতি থেকে কিস্তি তুলে পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। যখন আকাশে মেঘ হয় তখন জানে পানি থাকে না।
ঘোলদাড়ি পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আবুছদ্দিন জানান, আমি দিনমুজুরি করে সংসার চালাই। করোনা ভাইরাসের কারণে কৃষি কাজ বন্ধ রয়েছে। বৌ-ছেলে মেয়ে নিয়ে মহাবিপদে পড়েছি। এ রকম থাকলে কিভাবে কৃষি কাজ করবো। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় কাজ করতে যাওয়া যাচ্ছে না পুলিশ বাধা দেয়। বৌ ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘরে পড়ে মরার মতো অবস্থা।
এরশাদপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, বৈরি আবহাওয়ার কারণে ধান কাটায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখিন হতে হচ্ছে। দিনে সূর্যের আলো, সন্ধ্যায় কালো মেঘ আর রাত হলেই বৃষ্টি শুরু হচ্ছে। মাঠের ধান পেঁকে ঝড়ে যাবার সম্ভবনা হয়ে গেছে। দ্রুত ধান কাটতে হবে। কিন্তু, ধান কাটলেই বৃষ্টির পানিতে ভিজছে। আবার দিনের সূর্যে শুকানো হলে আবারো রাতের বৃষ্টিতে ভিজছে। এবছর কৃষকের বিষফোঁড়া হয়ে দাড়িয়েছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার জিন্নাত আলি বলেন, এ বছর আলমডাঙ্গায় বোরো মৌসুমে ১৩ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে ধান কাটা শ্রমিকদের ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। তারা এক জেলা থেকে অন্য জেলা যেতে পারবে না। এ দিকে মেঘ বৃষ্টি তো আছেই। সব মিলিয়ে ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিতায় মধ্যে আছি। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের পাশে সব সময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জাবি ছাত্রদলের বর্ধিত কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা

আলমডাঙ্গায় মেঘ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলছে ধান কাটা

আপডেট সময় : ০৬:৩১:১৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১১ মে ২০২০

আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি: দিনে রোধের আলোয় আলোকিত সোনালী পাঁকা ধানের ক্ষেত। সন্ধ্যা নামলেই আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। রাত হলেই শুরু হয় ঝড় ও বৃষ্টি। এ ঝড়-বৃষ্টি যেনো কৃষকের কষ্টের পাহাড় তৈরি করেছে। আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌর সভায় এবছর মোট ১৩ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছে কৃষকেরা।
গত বছরের তুলনায় এ বছর ধানের ফলন ও দামে ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। তবে, বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রতিদিন ধান কাটা আর বেঁধে ঘরে তোলা কাজ এবছর যেনো কৃষকের বিষ ফোঁড়া হয়ে উঠেছে।
আলমডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, চলতি বছরে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৩ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও ধান ঘরে তোলা নিয়ে সংকটে রয়েছে কৃষকেরা। ধান কাটা ও ঘরে তোলার মৌসুমের শুরু ও শেষের দিকে অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া আশঙ্কা থাকে। এবারও বৈশাখের শুরু থেকেই হালকা মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ভাংবাড়িয়া গ্রামের ধান চাষি আলাউদ্দিন বলেন, দেড় একর জমিতে ধান চাষ করেছি। করোনা ভাইরাসের ভয়ে জমিতে আসতে পারি না। ঠিকমতো পানি সেচ দিতে পারি না। শহর থেকে শুরু করে সব কিছুই বন্ধ রয়েছে। গ্রামের যে দোকান থেকে বাকিতে তেল নিয়ে মেশিন চালায় সেই দোকানই বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। কাছে যে টাকা ছিল তাও শেষ হয়েছে। নগদ টাকা না দিলে তেল দেয় না। এখন কীভাবে জমিতে সেচ দিব। প্রচণ্ড রোদে জমি ফেটে যাচ্ছে। পাম্পে গেলে নগদ টাকা ছাড়া তেল দেয় না।
জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক হাবিব মিয়া বলেন, করোনা ভাইরাস, আকাশে মেঘ দেখে জানে পানি থাকে না। সমিতি থেকে কিস্তি তুলে পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। যখন আকাশে মেঘ হয় তখন জানে পানি থাকে না।
ঘোলদাড়ি পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আবুছদ্দিন জানান, আমি দিনমুজুরি করে সংসার চালাই। করোনা ভাইরাসের কারণে কৃষি কাজ বন্ধ রয়েছে। বৌ-ছেলে মেয়ে নিয়ে মহাবিপদে পড়েছি। এ রকম থাকলে কিভাবে কৃষি কাজ করবো। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় কাজ করতে যাওয়া যাচ্ছে না পুলিশ বাধা দেয়। বৌ ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘরে পড়ে মরার মতো অবস্থা।
এরশাদপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, বৈরি আবহাওয়ার কারণে ধান কাটায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখিন হতে হচ্ছে। দিনে সূর্যের আলো, সন্ধ্যায় কালো মেঘ আর রাত হলেই বৃষ্টি শুরু হচ্ছে। মাঠের ধান পেঁকে ঝড়ে যাবার সম্ভবনা হয়ে গেছে। দ্রুত ধান কাটতে হবে। কিন্তু, ধান কাটলেই বৃষ্টির পানিতে ভিজছে। আবার দিনের সূর্যে শুকানো হলে আবারো রাতের বৃষ্টিতে ভিজছে। এবছর কৃষকের বিষফোঁড়া হয়ে দাড়িয়েছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার জিন্নাত আলি বলেন, এ বছর আলমডাঙ্গায় বোরো মৌসুমে ১৩ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে ধান কাটা শ্রমিকদের ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। তারা এক জেলা থেকে অন্য জেলা যেতে পারবে না। এ দিকে মেঘ বৃষ্টি তো আছেই। সব মিলিয়ে ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিতায় মধ্যে আছি। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের পাশে সব সময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।