শুক্রবার | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo ভারতীয় নাগরিকের গুলিবর্ষণে সিলেট সীমান্তে ২ বাংলাদেশি নিহত Logo সাতক্ষীরায় জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিল Logo সাংবাদিকদের পাশে থাকবে সরকার: ন্যায়বিচারের আশ্বাস Logo প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সুপরিকল্পিত: জাবিসাস Logo হাদি হত্যা ও হামলা-ভাঙচুর; জাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি Logo চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা কার্যালয় চাঁদপুরের যৌথ আয়োজনে চাঁদপুরে মাদক বিরোধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন Logo চাঁদপুরে সর্বোচ্চ একক রেমিট্যান্সে শীর্ষে জনতা ব্যাংক পিএলসি নতুন বাজার কর্পোরেট শাখা Logo বিজয় দিবসে প্যাপিরাস পাঠাগারের আলোচনা সভা ও কবিতাপাঠ Logo বিজয় দিবসে রাঙামাটি পুলিশের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পুলিশ পরিবারকে সংবর্ধনা Logo সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি আব্দুল লতিফের ৪দিন ও তার ছেলের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

হাদি হত্যা ও হামলা-ভাঙচুর; জাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

​ইনকিলাব মঞ্চের আহবায়ক শরীফ ওসমান হাদী হত্যার বিচারের দাবি ও প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার বিকেলে সোয়া পাঁচটার দিকে নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বর এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাটিয়া হাসান।

সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে ওসমান হাদীর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির দাবি করেন। একইসঙ্গে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটে হামলাকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন (অদ্রি-ফাইজান) বিশ্ববিদ্যালয়
সংসদের সভাপতি অদ্রি অংকুর বলেন,”গতকাল রাতে সারা দেশে আমরা যে পরিস্থিতি দেখেছি ওসমান হাদী ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদের পর যা ঘটেছে তাকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিনাশ বা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিনাশ হিসেবে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, বাস্তবে তার কোনোটাই এখানে ঘটেনি। নিশ্চয়ই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা মানে প্রথম আলো ধ্বংস করা, ডেইলি স্টারে হামলা করা বা ছায়ানটে আক্রমণ চালানো নয়। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হলে তিস্তা চুক্তি, ভারতের সঙ্গে অসম বাণিজ্য ও স্বাধীনতার পর হওয়া অসম চুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বা সম্পদকে ভারতীয় দালাল বা আওয়ামী লীগের দোসর বলে আক্রমণ করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। হাদি ভাইয়ের রাজনৈতিক আদর্শও নিশ্চয়ই এমন কিছু সমর্থন করত না।

ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোতে যারা হামলা করেছে, তারা হাদি হত্যার বিচার চায় না উল্লেখ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশ রাষ্ট্র আজ একটি গভীর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ দেশের আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে। সাধারণ নাগরিক তো দূরের কথা, যারা কিছুদিন আগেও একটি গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে সেই জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তাও রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে আমরা চরম আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। কখন জানি গুলি করে আমাদের হত্যা করা হয় এই ভয় আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই ডেইলি স্টার বা প্রথম আলোতে যারা হামলা করেছে, তারা হাদি হত্যার বিচার চায় না, তারা হাদির চেতনাও ধারণ করে না।

তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে হাদী ভাইয়ের রাজনৈতিক ও আদর্শিক বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আমি সম্মান করি। তিনি বিশ্বাস করতেন লড়াই করতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে, সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মাধ্যমে। সেই পথই তিনি আমাদের দেখিয়ে গেছেন। কিন্তু সেই পথ ছেড়ে আজ আমরা ডেইলি স্টারে হামলা করছি কেন? ডেইলি স্টার কি বাংলাদেশের সম্পত্তি নয়? তারা কি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেনি? আজ নুরুল কবিরের ওপর হামলা হয়েছে যিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠ। তার ওপর হামলা মানে হাদি ভাইয়ের চেতনা ও জুলাই চেতনার ওপর আক্রমণ। সুতরাং আমরা সতর্ক থাকতে চাই হাদি ভাইয়ের বিচারের নামে যেন লাশের রাজনীতি কেউ করতে না পারে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতীয় নাগরিকের গুলিবর্ষণে সিলেট সীমান্তে ২ বাংলাদেশি নিহত

হাদি হত্যা ও হামলা-ভাঙচুর; জাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

আপডেট সময় : ১০:৩৬:৩৬ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

​ইনকিলাব মঞ্চের আহবায়ক শরীফ ওসমান হাদী হত্যার বিচারের দাবি ও প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার বিকেলে সোয়া পাঁচটার দিকে নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বর এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাটিয়া হাসান।

সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে ওসমান হাদীর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির দাবি করেন। একইসঙ্গে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটে হামলাকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন (অদ্রি-ফাইজান) বিশ্ববিদ্যালয়
সংসদের সভাপতি অদ্রি অংকুর বলেন,”গতকাল রাতে সারা দেশে আমরা যে পরিস্থিতি দেখেছি ওসমান হাদী ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদের পর যা ঘটেছে তাকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিনাশ বা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিনাশ হিসেবে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, বাস্তবে তার কোনোটাই এখানে ঘটেনি। নিশ্চয়ই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা মানে প্রথম আলো ধ্বংস করা, ডেইলি স্টারে হামলা করা বা ছায়ানটে আক্রমণ চালানো নয়। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হলে তিস্তা চুক্তি, ভারতের সঙ্গে অসম বাণিজ্য ও স্বাধীনতার পর হওয়া অসম চুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বা সম্পদকে ভারতীয় দালাল বা আওয়ামী লীগের দোসর বলে আক্রমণ করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। হাদি ভাইয়ের রাজনৈতিক আদর্শও নিশ্চয়ই এমন কিছু সমর্থন করত না।

ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোতে যারা হামলা করেছে, তারা হাদি হত্যার বিচার চায় না উল্লেখ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশ রাষ্ট্র আজ একটি গভীর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ দেশের আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে। সাধারণ নাগরিক তো দূরের কথা, যারা কিছুদিন আগেও একটি গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে সেই জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তাও রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে আমরা চরম আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। কখন জানি গুলি করে আমাদের হত্যা করা হয় এই ভয় আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই ডেইলি স্টার বা প্রথম আলোতে যারা হামলা করেছে, তারা হাদি হত্যার বিচার চায় না, তারা হাদির চেতনাও ধারণ করে না।

তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে হাদী ভাইয়ের রাজনৈতিক ও আদর্শিক বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আমি সম্মান করি। তিনি বিশ্বাস করতেন লড়াই করতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে, সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মাধ্যমে। সেই পথই তিনি আমাদের দেখিয়ে গেছেন। কিন্তু সেই পথ ছেড়ে আজ আমরা ডেইলি স্টারে হামলা করছি কেন? ডেইলি স্টার কি বাংলাদেশের সম্পত্তি নয়? তারা কি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেনি? আজ নুরুল কবিরের ওপর হামলা হয়েছে যিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠ। তার ওপর হামলা মানে হাদি ভাইয়ের চেতনা ও জুলাই চেতনার ওপর আক্রমণ। সুতরাং আমরা সতর্ক থাকতে চাই হাদি ভাইয়ের বিচারের নামে যেন লাশের রাজনীতি কেউ করতে না পারে।