এন.আই.মিলন, দিনাজপুর প্রতিনিধি- দিনাজপুরের বীরগঞ্জে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ এর আয়োজনে বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলার যৌথ সভায় দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল-কে আবারও অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে।
হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত বীরগঞ্জের অস্থায়ী কার্যালয় (অরুন বাবুর মিল চাতালে) ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকাল ৫ টায় বীরগঞ্জ-কাহারোল হিন্দু নেতাদের যৌথ প্রতিনিধি সভায় হিন্দুদের সাথে বৈষম্য তৈরী এবং স্বেচ্ছারিতা, হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল করার অভিযোগে স্থানীয় সাংসদ মনোরঞ্জন শীল গোপালকে উভয় উপজেলায় অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের বীরগঞ্জ উপজেলার সভাপতি অরুন চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে বীরগঞ্জÑকাহারোল উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পুজা উদযাপন পরিষদের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য কালে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদ বীরগঞ্জ শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক দেবেশ চন্দ্র সরকার বলেন, এমপি গোপাল দুই উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তিনি নিজের অনুসারী কিছু লোকদেরকে নিয়ে দূর্গা পুজা উদযাপন পরিষদ নামক একটি সংগঠন করার চেষ্ঠা করছে। এই নামে বাংলাদেশের কোথাও কোন সংগঠন নেই। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। হিন্দুদের জমি দখল, জামায়াত শিবিরের কয়েকজন নেতার নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে জয়নন্দ ডিগ্রী কলেজে চাকুরি প্রদান করা করেছে। এ বার যদি মনোরঞ্জন শীল গোপালকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদেরকে নিঃশেষ করতে এমপি গোপালই যথেষ্ট হবে।
পুজা উদযাপন পরিষদ বীরগঞ্জ শাখার সাবেক সহ Ñসভাপতি ও হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এক্য পরিষদের সাবেক সাধারন সম্পাদক ঈশ্বর চন্দ্র রায়, এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপালকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বন্দুকের নল দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদেরকে দামিয়ে রাখা যাবে না। আওয়ামী লীগ সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা প্রদান করলেও এমপি গোপাল হিন্দুদের বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করছে। আজ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ও পুজা উদযাপন পরিষদের যৌথ ভাবে প্রতি বছর প্রতিনিধি সভার আয়োজন করে থাকে। এমপি গোপাল তার কিছু অনুসারীদেরকে বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের হিন্দু নেতাদের বাড়ী বাড়ী হুমকি প্রদান করছে যেন কেউ প্রতিনিধি সভায় যোগদান করতে না পারে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদেরকে প্রতিনিধি সভায় যোগদান না করার বাধা প্রদান করায় উপস্থিত হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পুজা উদযাপন পরিষদের ঐক্য মতের ভিত্তিতে আবারও এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল কে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেন।
রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক পিযুষ চন্দ্র রায় বলেন, যুদ্ধাপরাধী বসির হাজীর পরিবারের তিনজনকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জয়নন্দ ডিগ্রী কলেজে চাকুরী প্রদান করে এমপি গোপাল যুদ্ধাপরাধী পরিবারকে পুরস্কার প্রদান করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারে এলাকায়।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কাহারোল শাখার সভাপতি অধ্যাপক প্রভাষ চন্দ্র রায় বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একাধিক উন্নয়ন করেছে অন্য দিকে এমপি গোপাল হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করছে। তিনি যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মনে করতেন তাহলে নির্যাতন করে জমি দখল করতে পারতেন না। তিনি পুলিশ দিয়ে আমাদের প্রতিনিধি সভায় বাধা প্রদান করতে পারতে না। সভা চলাকালীন সময়ে বিদুতের লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারতেন না। তিনি তাচ্ছিল্য করে বলতে পারতে না হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কিসের সংগঠন।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ বীরগঞ্জ শাখার সভাপতি অরুন চন্দ্র দাস বলেন, এমপি গোপাল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাথে নেই, পুজা উদযাপন পরিষদের সাথে নেই, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাথে নেই, আওয়ামী লীগের কোন অঙ্গ সংগনের সাথে নেই, তিনি কাদেরকে সাথে নিয়ে চলাফেরা করেন। তিনি জামায়াতের পার্টি অফিস থেকে মিছিল বের করেন। জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীদের সাথে সখ্যতা তৈরী করে চলাফেরা করেন। তাই আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীক যেন এই বির্তকিত ব্যাক্তি যেন না দেওয়া হয় তার জন্য দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নিকট বাদি জানানো হয়। এছাড়া আরোও অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা বক্তব্য প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৫ই সেপ্টেম্বর বীরগঞ্জÑকাহারোল উপজেলা আওয়ামী যৌথ সভায় এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল কে বির্তকিত মুলক কাজের জন্য অবাঞ্জিত ঘোষনা করা হয়।