জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকায় এবার বিদ্যুৎ চুরির দায়ে ধরা খেলেন এমবিবিএস চিকিৎসক ডাঃ শেখ আমিনুল ইসলাম ও সাবেক কশিনার ওবাইদুর রহমান। তাদের বাসা থেকে রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত মিটার জব্দ করা হয়েছে। এই অনৈতিক কাজের জন্য তাদের জরিমানা করা হবে বলে জানান, ঝিনাইদহ ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন (ওজোপাডিকো) কোম্পানীর নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম। ঝিনাইদহ ওজোপাডিকোর সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শহরের আরাপপুর শেখপাড়া এলাকায় চিকিৎসক শেখ আমিনুল ইসলাম ও ঝিনাইদহ পৌরসভার কাউন্সিলর ওবাইদুর রহমানের বাসায় দুইটি ইজিবাইক চার্জ দেওয়ার কারখানা ছিল। সেখানে নিয়ম অনুযায়ী ৩০টি ইজিবাইক চার্জ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তারা বিধি বহির্ভুত ভাবে বেশি ইজিবাইক চার্জ দিত। এই কাজ করতে তারা রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে মিটার অফ অন করতো।
সোমবার সন্ধ্যায় গোপন সুত্রে খবর পেয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা করখানা দুটিতে অভিযান চালিয়ে রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত মিটার জব্দ করেন। এ সময় সহকারী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী ও লাইনম্যান আতিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন (ওজোপাডিকো) কোম্পানীর নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ চুরির এই অভিনব কৌশল আমাদের মাথায় আসে না। তিনি বলেন একজন সরকারী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি এ ধরণের অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত হবে তা ভাবা যায় না।
অভিনব পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ চুরির দায়ে ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জেল জরিমানার ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানান। তবে ২০ ঘন্টা পার হলেও চিকিৎসক ডাঃ শেখ আমিনুল ইসলাম ও সাবেক কশিনার ওবাইদুর রহমান তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি নি বলে নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান। ঝিনাইদহ বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সুত্র জানায়, প্রতিটি ইজিবাইক আট ঘন্টা চার্জ দিতে প্রতিদিন দুইশ টাকা হিসেবে মাসে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়। সে মোতাবেক ২৪ ঘন্টায় ১৮০ টি ইজিবাইক চার্জ বাবদ নেওয়া হয় ৩৬ হাজার টাকা।
এ ভাবে প্রতি বছর ওবাইদুর ও ডাঃ আমিনুল এক কোটি ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। ঝিনাইদহ বিদ্যুৎ বিভিোগর অসাধু কর্মচারীরাও এই বিদ্যুৎ চুরির ঘটনার সাথে জড়িত বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে মাসের পর মাস কারসাজির মাধ্যমে বিল কমিয়ে গেলেও তারা থেকেছেন ধরা ছোয়ার বাইরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জুড়েই চলছে এ অবৈধ ব্যাবসা।
ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ৫০টিরও বেশি স্থানে ইজিবাইক চার্জ দেওয়া হচ্ছে। কথিত আছে এ সব চার্জিং কারখানায় লাখ লাখ টাকার বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা সংবাদ মাধ্যমে এমন খবর জানতে পেরেই অভিযান শুরু করেছি। আশা করা যায় অচিরেই বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ করা সম্ভব হবে।