শিরোনাম :
Logo শেখ হাসিনা তরুনদের শরীরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ভ্যাকসিন দিয়ে গেছেন: ফারুক ওয়াসিফ Logo বিশ্ব বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটাবে এআই: ডাব্লিউটিও Logo আফগানিস্তানকে টপকে নবম স্থানে বাংলাদেশ Logo বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে Logo ইউএনজিএ-তে যোগ দিতে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা: রোহিঙ্গা, সংস্কার ও গণতন্ত্র ইস্যু প্রাধান্য পাবে এজেন্ডায় Logo কয়রায় মিথ্যা মানববন্ধনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন Logo পলাশবাড়ীতে ভেঙ্গেপড়া ব্রীজ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল। Logo সিরাজগঞ্জে রেলওয়ে প্রকল্প থেকে রেলের শীট ও ভ্যান জব্দ, চুরি আতঙ্কে এলাকাবাসী Logo সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন Logo চাঁদপুরে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম এন জামিউল হিকমা

থামার নয় স্বজন হারানোর এই আহাজারি !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:০৪:২২ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৭
  • ৭৫৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

একদিকে বৃষ্টি হচ্ছে, চলছে মিছিল-শ্লোগান। আর অন্যদিকে ভেসে আসছে বুক ভরা কান্নার শব্দ। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা তাদের প্রিয়জনের ছবি বুকে নিয়ে কান্না করছিলেন। আলী আহমেদ কাসেম ও তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার তাদের ছেলে আফজালের ছবি বুকে নিয়ে রানা প্লাজার সামনে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। তাদের  দুই ছেলে ও এক ছেলের বউ মারা গেছেন এই দুর্ঘটনায়। ছেলে উজ্জ্বল ও তার স্ত্রী খাদিজার লাশ পেয়েছেন। কিন্তু আফজালের লাশ এখনও পাননি।

সালমা বেগম তার ছেলের খোঁজে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে জানালা ভেঙে আসতে পারতো। কিন্তু সে বের হতে পারেনি। সালমার ধারণা, তার ছেলের লাশ এখনও রানা প্লাজার মাটিতেই আছে। নিহতের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রানা প্লাজার পাশের ভবনগুলো দেখিয়ে তিনি বলছিলেন, ওই ভবনগুলো তো ভাঙলো না। এই ভবন কেন ভাঙল?

এরপর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার সুরে সালমা বলতে থাকেন, ‘ছেলেটাকে দুনিয়াতে তো সুখী হতে দিলা না, পরকালে তাকে যেন সুখী করো।

জামালপুর থেকে এসেছেন খোরশেদা বেগম। তার ছেলে ছেলে আল-আমিনকে (শান্ত) দুর্ঘটনার প্রথম দিনই উদ্ধার করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। ছেলের লাশ বাড়িতে পৌঁছালেও কিন্তু তিনি তার ছেলের কর্মস্থল দেখার জন্য রানা প্লাজার সামনে এসেছেন। বললেন, ছেলের লাশ দাফনের পর থেকে বাড়িতে থাকতে মন চায় না। তাই বৃষ্টি মধ্যে ছুটে এসেছি।

খোরশেদা বেগম ছেলের জন্য কাঁদছেন আর দোয়া করছেন। রানা প্লাজা দুঘর্টনায় নিহত স্বজনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা তাহমিনা বেগম। তিনি রানা প্লাজার আটতলার একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন। বললেন, আমি তো বেঁচে আছি। কিন্তু আমার সহকর্মী সবাই মারা গেছেন।

রানা প্লাজায় সকাল থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশ গামেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন , টেক্সটাইল গামেন্টস ওর্য়াকার্স ফেডারেশন, জাগো বাংলাদেশ গামেন্টর্স শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ গামেন্টর্স এন্ড ইন্ড্রাষ্টিয়াল ওয়াকার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ তৃণমুল গামেন্টর্স শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, স্বাধীন বাংলা গামেন্টর্স শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন। এসব সংগঠন একসাথে নিহত ১১৩৮ জন শ্রমিকের জন্য ১১৩৮টি ফুল দিয়ে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাপ), গার্মেন্টস-শ্রমিক ফেডারেশন, ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ল্যাম্প পোস্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, অশি ফাউন্ডেশন, শ্রমিক নিরাপত্তা সুরক্ষা ফোরাম, গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম, বাংলাদেশ তৃণমূল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, গার্মেন্ট অ্যান্ড শিল্প-শ্রমিক ফেডারেশন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনা তরুনদের শরীরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ভ্যাকসিন দিয়ে গেছেন: ফারুক ওয়াসিফ

থামার নয় স্বজন হারানোর এই আহাজারি !

আপডেট সময় : ১২:০৪:২২ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

একদিকে বৃষ্টি হচ্ছে, চলছে মিছিল-শ্লোগান। আর অন্যদিকে ভেসে আসছে বুক ভরা কান্নার শব্দ। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা তাদের প্রিয়জনের ছবি বুকে নিয়ে কান্না করছিলেন। আলী আহমেদ কাসেম ও তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার তাদের ছেলে আফজালের ছবি বুকে নিয়ে রানা প্লাজার সামনে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। তাদের  দুই ছেলে ও এক ছেলের বউ মারা গেছেন এই দুর্ঘটনায়। ছেলে উজ্জ্বল ও তার স্ত্রী খাদিজার লাশ পেয়েছেন। কিন্তু আফজালের লাশ এখনও পাননি।

সালমা বেগম তার ছেলের খোঁজে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে জানালা ভেঙে আসতে পারতো। কিন্তু সে বের হতে পারেনি। সালমার ধারণা, তার ছেলের লাশ এখনও রানা প্লাজার মাটিতেই আছে। নিহতের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রানা প্লাজার পাশের ভবনগুলো দেখিয়ে তিনি বলছিলেন, ওই ভবনগুলো তো ভাঙলো না। এই ভবন কেন ভাঙল?

এরপর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার সুরে সালমা বলতে থাকেন, ‘ছেলেটাকে দুনিয়াতে তো সুখী হতে দিলা না, পরকালে তাকে যেন সুখী করো।

জামালপুর থেকে এসেছেন খোরশেদা বেগম। তার ছেলে ছেলে আল-আমিনকে (শান্ত) দুর্ঘটনার প্রথম দিনই উদ্ধার করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। ছেলের লাশ বাড়িতে পৌঁছালেও কিন্তু তিনি তার ছেলের কর্মস্থল দেখার জন্য রানা প্লাজার সামনে এসেছেন। বললেন, ছেলের লাশ দাফনের পর থেকে বাড়িতে থাকতে মন চায় না। তাই বৃষ্টি মধ্যে ছুটে এসেছি।

খোরশেদা বেগম ছেলের জন্য কাঁদছেন আর দোয়া করছেন। রানা প্লাজা দুঘর্টনায় নিহত স্বজনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা তাহমিনা বেগম। তিনি রানা প্লাজার আটতলার একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন। বললেন, আমি তো বেঁচে আছি। কিন্তু আমার সহকর্মী সবাই মারা গেছেন।

রানা প্লাজায় সকাল থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশ গামেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন , টেক্সটাইল গামেন্টস ওর্য়াকার্স ফেডারেশন, জাগো বাংলাদেশ গামেন্টর্স শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ গামেন্টর্স এন্ড ইন্ড্রাষ্টিয়াল ওয়াকার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ তৃণমুল গামেন্টর্স শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, স্বাধীন বাংলা গামেন্টর্স শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন। এসব সংগঠন একসাথে নিহত ১১৩৮ জন শ্রমিকের জন্য ১১৩৮টি ফুল দিয়ে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাপ), গার্মেন্টস-শ্রমিক ফেডারেশন, ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ল্যাম্প পোস্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, অশি ফাউন্ডেশন, শ্রমিক নিরাপত্তা সুরক্ষা ফোরাম, গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম, বাংলাদেশ তৃণমূল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, গার্মেন্ট অ্যান্ড শিল্প-শ্রমিক ফেডারেশন।