শিরোনাম :
Logo চাঁদপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে বাবা ছেলের মৃত্যু! Logo দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার আয়োজনে নবনির্বাচিত দু’জনকে সংবর্ধনা Logo চাঁদপুর জেলা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক অপু চৌধুরী কৃতজ্ঞতা Logo হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাঙচুরের বিচার দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম Logo পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আলোচনা সভা Logo জমি নিয়ে বিরোধে প্রবাসীর স্ত্রী খুন ; চারজন গ্রেফতার Logo হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ Logo সরিষা চাষে সফল কৃষকদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ Logo কোটাবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল শিক্ষাঙ্গন, বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ Logo অপতথ্য মোকাবিলায় জাতিসংঘকে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

রাষ্ট্রপতি আশাবাদী, বিএনপি খুশি!

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:৩৭:৩৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৭৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পদ্ধতিগত বিষয় ও অনুসন্ধান কমিটি (সার্চ কমিটি) নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছে বিএনপি। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনার পর দলটির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেছেন, এই সংলাপে বিএনপি খুশি হয়েছে, আশাবাদী হয়েছে।

পরে বঙ্গভবন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, অনুসন্ধান কমিটি গঠন ও নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিএনপি যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা নির্বাচন কমিশন গঠনে সহায়ক হবে।

তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির এই সংলাপের সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান যখন তাঁদের ডেকেছিলেন, তখন তাঁরা গিয়েছিলেন, তখন তাঁদের মনমতো হয়নি। সালিস মানি তালগাছটা আমার, এই যদি বিএনপির নীতি হয়, তাহলে আজকের সংলাপ সফল হবে না।’ গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এ বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি যদি গণভবনে যেত, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত।

বিএনপির সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল সবার কাছে আস্থাশীল একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন। এ লক্ষ্যে গত নভেম্বরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন, তার সারাংশ রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি প্রস্তাবের একটি পূর্ণ কপিও রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, অত্যন্ত ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতিও মনে করেন, সংকট নিরসনে আলোচনা দরকার। বিএনপিও আশা করছে, এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন।

দলের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাবের আলোকে অনুসন্ধান কমিটির জন্য ১০ জনের একটি তালিকা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে।কিন্তু দলটি চায় না কোনোভাবে নামগুলো এখনই প্রকাশ হোক। কারণ, বিএনপি মনে করে, নাম প্রকাশ হলে তাঁদের নিয়ে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হবে। গণমাধ্যম তাঁদের নিয়ে লেখালেখি করবে। এতে যাঁদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তাঁরা বিব্রত হতে পারেন। এ জন্য প্রস্তাবিত নামগুলোর বিষয়ে বিএনপি গোপনীয়তা অবলম্বন করছে।

এ বিষয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চান। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে খালেদা জিয়া সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছেন।

বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী, বাছাই কমিটি হবে পাঁচ সদস্যের। এর আহ্বায়ক হবেন অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মক্ষম একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি (জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে)। অন্য সদস্যরা হবেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি, সরকারের অবসরপ্রাপ্ত একজন সচিব (তবে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন, এমন কোনো কর্মকর্তা বাছাই কমিটির সদস্য হতে পারবেন না), বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত একজন অধ্যাপক বা দলনিরপেক্ষ সর্বজনশ্রদ্ধেয় একজন বিশিষ্ট নাগরিক এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় দলনিরপেক্ষÿএকজন জ্যেষ্ঠ নারী।

রাষ্ট্রপতিকে চিঠি: বঙ্গভবনে আলোচনার শেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত চিঠি দেন খালেদা জিয়া। পরে ওই চিঠি এবং নির্বাচন কমিশন গঠনে দলীয় প্রস্তাবের কপি গণমাধ্যমে পাঠায় বিএনপি। চিঠিতে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতিকে বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। … জাতির অভিভাবক হিসেবে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সে উদ্যোগ সফল হবে।’

আর নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো দলীয় প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তাতে সাড়া দিয়ে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডাকায় রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া । তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে বিশেষ করে গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে এবং গত কয়েক বছরে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা দেশে-বিদেশে আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণকে হতাশ, আস্থাহীন ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। বৃহত্তর জাতীয় ও গণতন্ত্রের স্বার্থে এ পরিস্থিতি আর চলতে পারে না।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে বাবা ছেলের মৃত্যু!

রাষ্ট্রপতি আশাবাদী, বিএনপি খুশি!

আপডেট সময় : ১২:৩৭:৩৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পদ্ধতিগত বিষয় ও অনুসন্ধান কমিটি (সার্চ কমিটি) নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছে বিএনপি। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনার পর দলটির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেছেন, এই সংলাপে বিএনপি খুশি হয়েছে, আশাবাদী হয়েছে।

পরে বঙ্গভবন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, অনুসন্ধান কমিটি গঠন ও নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিএনপি যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা নির্বাচন কমিশন গঠনে সহায়ক হবে।

তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির এই সংলাপের সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান যখন তাঁদের ডেকেছিলেন, তখন তাঁরা গিয়েছিলেন, তখন তাঁদের মনমতো হয়নি। সালিস মানি তালগাছটা আমার, এই যদি বিএনপির নীতি হয়, তাহলে আজকের সংলাপ সফল হবে না।’ গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এ বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি যদি গণভবনে যেত, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত।

বিএনপির সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল সবার কাছে আস্থাশীল একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন। এ লক্ষ্যে গত নভেম্বরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন, তার সারাংশ রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি প্রস্তাবের একটি পূর্ণ কপিও রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, অত্যন্ত ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতিও মনে করেন, সংকট নিরসনে আলোচনা দরকার। বিএনপিও আশা করছে, এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন।

দলের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাবের আলোকে অনুসন্ধান কমিটির জন্য ১০ জনের একটি তালিকা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে।কিন্তু দলটি চায় না কোনোভাবে নামগুলো এখনই প্রকাশ হোক। কারণ, বিএনপি মনে করে, নাম প্রকাশ হলে তাঁদের নিয়ে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হবে। গণমাধ্যম তাঁদের নিয়ে লেখালেখি করবে। এতে যাঁদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তাঁরা বিব্রত হতে পারেন। এ জন্য প্রস্তাবিত নামগুলোর বিষয়ে বিএনপি গোপনীয়তা অবলম্বন করছে।

এ বিষয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চান। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে খালেদা জিয়া সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছেন।

বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী, বাছাই কমিটি হবে পাঁচ সদস্যের। এর আহ্বায়ক হবেন অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মক্ষম একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি (জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে)। অন্য সদস্যরা হবেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি, সরকারের অবসরপ্রাপ্ত একজন সচিব (তবে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন, এমন কোনো কর্মকর্তা বাছাই কমিটির সদস্য হতে পারবেন না), বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত একজন অধ্যাপক বা দলনিরপেক্ষ সর্বজনশ্রদ্ধেয় একজন বিশিষ্ট নাগরিক এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় দলনিরপেক্ষÿএকজন জ্যেষ্ঠ নারী।

রাষ্ট্রপতিকে চিঠি: বঙ্গভবনে আলোচনার শেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত চিঠি দেন খালেদা জিয়া। পরে ওই চিঠি এবং নির্বাচন কমিশন গঠনে দলীয় প্রস্তাবের কপি গণমাধ্যমে পাঠায় বিএনপি। চিঠিতে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতিকে বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। … জাতির অভিভাবক হিসেবে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সে উদ্যোগ সফল হবে।’

আর নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো দলীয় প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তাতে সাড়া দিয়ে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডাকায় রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া । তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে বিশেষ করে গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে এবং গত কয়েক বছরে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা দেশে-বিদেশে আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণকে হতাশ, আস্থাহীন ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। বৃহত্তর জাতীয় ও গণতন্ত্রের স্বার্থে এ পরিস্থিতি আর চলতে পারে না।’