শুক্রবার | ২৮ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সাতক্ষীরা-০২ এ ধানের শীষের জয়ে নতুন অধ্যায়—বিএনপির একতাবদ্ধ ঘোষণা Logo বুটেক্স অ্যালামনাই ইউএসএ-এর আত্মপ্রকাশ: যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের মিলনমেলা ও কমিটি গঠন Logo বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন আগামী ২৭ ডিসেম্বর Logo রাবিতে ইলা মিত্রকে নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির সঙ্গে তুরস্কের রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর Logo নোবিপ্রবিতে গবেষণা, বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের করণীয় শীর্ষক প্রশিক্ষণ Logo রাবি ময়মনসিংহ জেলা সমিতির নতুন কমিটি ঘোষণা Logo “কণিকা”সংগঠনের সচেতনতা সেমিনার ও কুইজ এমইএস কলেজে অনুষ্ঠিত Logo গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী Logo প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থায়ী মর্গ, জীর্ণ-ভবনে ময়নাতদন্ত

সুই না ফুটিয়েই শিশুদের দেওয়া যাবে টিকা !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১১:৫৪:২৪ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০১৭
  • ৭৮৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

আর সুই ফোটানোর যন্ত্রণা হয়তো সইতে হবে না দুধের শিশুদের। জন্মের মুহূর্ত থেকেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিভিন্ন ধরনের টিকা দেওয়ার জন্য বার বার শিশুদের নরম তুলতুলে চামড়ায় ইয়া বড় বড় ইঞ্জেকশনের সুই ফোটানো হয়। যন্ত্রণায় চিৎকার জুড়ে দেয় শিশুটি। সেই ‘জীবন-যন্ত্রণা’ সইবার দিন বোধহয় এ বার শেষ হতে যাচ্ছে শিশুদের। আর ইঞ্জেকশনের ছুঁচ ফুটিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য শিশুদের যন্ত্রণা দিতে হবে না। তাদের মুখের মধ্যেই পুরে দেওয়া যাবে একটা ‘ট্যাবলেট’। যা কাজ করবে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের টিকাগুলির।

এই সদ্য আবিষ্কৃত প্রযুক্তিটির নাম- ‘মিউকোজেট’। বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষকদল এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। যে গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে দুই ভারতীয় বায়োইঞ্জিনিয়ার নীরেন মূর্তি ও মহম্মদ রফির।

বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভারতীয় অধ্যাপক নীরেন মূর্তি তার ই-মেল জবাবে লিখেছেন, ‘‘খরগোশের ওপর আর গবেষণাগারে আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, এই ‘মিউকোজেট’ প্রযুক্তি অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে। ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে মুখের বাক্কাল রিজিওনে জলকামানের মতোই অত্যন্ত উচ্চ চাপে তরল রাসায়নিক পদার্থ ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে। তার সঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে মুখের ভেতরের প্রতিরোধী কোষগুলিকে জাগিয়ে তোলার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থও। যা মুখের ভেতরের বাক্কাল রিজিওনে প্রতিরোধী কোষগুলির মিউকাসের বাধা ডিঙিয়ে ঢুকে যেতে পারবে কোষগুলির মধ্যে। দাঁত তোলার সময় অনেকটা একই কাজ করে থাকেন ডাক্তাররা। যাকে বলা হয়, ‘ওয়াটার পিক’। প্রতিরোধী কোষ বা ইমিউন সেল ছড়িয়ে রয়েছে আমাদের দেহের সর্বত্র। কিন্তু মুখের বাক্কাল রিজিওনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রতিরোধী কোষ।

সহযোগী গবেষক, বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরেক ভারতীয় অধ্যাপক মহম্মদ রফি তার ই-মেল জবাবে লিখেছেন, ‘‘মিউকোজেট আসলে একটা চোঙ। যা লম্বায় ১৫ মিলিমিটার। আর যার ব্যাস ৭ মিলিমিটার। যার দু’টি প্রকোষ্ঠ। যা পানি নিরোধক প্লাস্টিক রেজিন দিয়ে বানানো। বাইরের প্রকোষ্ঠে ২৫০ মিলিলিটার জল থাকে। আর ভেতরের প্রকোষ্ঠটিতে রয়েছে দু’টি ছোট ছোট খুপরি বা চেম্বার। যাদের মাঝে রয়েছে একটি প্লাস্টিকের খুব পাতলা আস্তরণ। আর প্লাস্টিকের সেই পাতলা আস্তরণটা অনেকটা ব্লটিং পেপারের মতো। তার ভেতর খুব ছোট ছোট ছিদ্র রয়েছে। ওই দু’টি ছোট ছোট চেম্বারের একটিতে (ভ্যাকসিন চেম্বার) থাকে বিভিন্ন রোগের টিকার ১০০ মিলিলিটারের একটি দ্রবণ। যার এক দিকে থাকে একটা পিস্টন। আর সেই ছোট চেম্বারের অন্য দিকটায় থাকে ২০০ মাইক্রোমিটার ব্যাসের একটি ডেলিভারি নোজ্‌ল।

অন্যতম প্রধান গবেষক, ভারতীয় অধ্যাপক নীরেন মূর্তি বলছেন, ‘‘আমরা ওই মিউকোজেটের আকার, আকৃতি আরও কমাতে চাইছি। চাইছি, ওই প্রযুক্তিকে এমন ভাবে ব্যবহার করতে, যাতে টিকা দেওয়ার জন্য শিশুদের আর ক্লিনিকে নিয়ে যেতে না হয়। লালিপপ খেতে খুব ভালবাসে শিশুরা। সেই লালিপপের মধ্যেও ঢুকিয়ে দেওয়া যেতে পারে এই মিউকোজেট। যা শিশুরা গিলেও ফেলতে পারবে অনায়াসে। তাতেও তার কোনও ক্ষতি হবে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সাতক্ষীরা-০২ এ ধানের শীষের জয়ে নতুন অধ্যায়—বিএনপির একতাবদ্ধ ঘোষণা

সুই না ফুটিয়েই শিশুদের দেওয়া যাবে টিকা !

আপডেট সময় : ১১:৫৪:২৪ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

আর সুই ফোটানোর যন্ত্রণা হয়তো সইতে হবে না দুধের শিশুদের। জন্মের মুহূর্ত থেকেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিভিন্ন ধরনের টিকা দেওয়ার জন্য বার বার শিশুদের নরম তুলতুলে চামড়ায় ইয়া বড় বড় ইঞ্জেকশনের সুই ফোটানো হয়। যন্ত্রণায় চিৎকার জুড়ে দেয় শিশুটি। সেই ‘জীবন-যন্ত্রণা’ সইবার দিন বোধহয় এ বার শেষ হতে যাচ্ছে শিশুদের। আর ইঞ্জেকশনের ছুঁচ ফুটিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য শিশুদের যন্ত্রণা দিতে হবে না। তাদের মুখের মধ্যেই পুরে দেওয়া যাবে একটা ‘ট্যাবলেট’। যা কাজ করবে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের টিকাগুলির।

এই সদ্য আবিষ্কৃত প্রযুক্তিটির নাম- ‘মিউকোজেট’। বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষকদল এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। যে গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে দুই ভারতীয় বায়োইঞ্জিনিয়ার নীরেন মূর্তি ও মহম্মদ রফির।

বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভারতীয় অধ্যাপক নীরেন মূর্তি তার ই-মেল জবাবে লিখেছেন, ‘‘খরগোশের ওপর আর গবেষণাগারে আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, এই ‘মিউকোজেট’ প্রযুক্তি অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে। ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে মুখের বাক্কাল রিজিওনে জলকামানের মতোই অত্যন্ত উচ্চ চাপে তরল রাসায়নিক পদার্থ ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে। তার সঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে মুখের ভেতরের প্রতিরোধী কোষগুলিকে জাগিয়ে তোলার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থও। যা মুখের ভেতরের বাক্কাল রিজিওনে প্রতিরোধী কোষগুলির মিউকাসের বাধা ডিঙিয়ে ঢুকে যেতে পারবে কোষগুলির মধ্যে। দাঁত তোলার সময় অনেকটা একই কাজ করে থাকেন ডাক্তাররা। যাকে বলা হয়, ‘ওয়াটার পিক’। প্রতিরোধী কোষ বা ইমিউন সেল ছড়িয়ে রয়েছে আমাদের দেহের সর্বত্র। কিন্তু মুখের বাক্কাল রিজিওনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রতিরোধী কোষ।

সহযোগী গবেষক, বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরেক ভারতীয় অধ্যাপক মহম্মদ রফি তার ই-মেল জবাবে লিখেছেন, ‘‘মিউকোজেট আসলে একটা চোঙ। যা লম্বায় ১৫ মিলিমিটার। আর যার ব্যাস ৭ মিলিমিটার। যার দু’টি প্রকোষ্ঠ। যা পানি নিরোধক প্লাস্টিক রেজিন দিয়ে বানানো। বাইরের প্রকোষ্ঠে ২৫০ মিলিলিটার জল থাকে। আর ভেতরের প্রকোষ্ঠটিতে রয়েছে দু’টি ছোট ছোট খুপরি বা চেম্বার। যাদের মাঝে রয়েছে একটি প্লাস্টিকের খুব পাতলা আস্তরণ। আর প্লাস্টিকের সেই পাতলা আস্তরণটা অনেকটা ব্লটিং পেপারের মতো। তার ভেতর খুব ছোট ছোট ছিদ্র রয়েছে। ওই দু’টি ছোট ছোট চেম্বারের একটিতে (ভ্যাকসিন চেম্বার) থাকে বিভিন্ন রোগের টিকার ১০০ মিলিলিটারের একটি দ্রবণ। যার এক দিকে থাকে একটা পিস্টন। আর সেই ছোট চেম্বারের অন্য দিকটায় থাকে ২০০ মাইক্রোমিটার ব্যাসের একটি ডেলিভারি নোজ্‌ল।

অন্যতম প্রধান গবেষক, ভারতীয় অধ্যাপক নীরেন মূর্তি বলছেন, ‘‘আমরা ওই মিউকোজেটের আকার, আকৃতি আরও কমাতে চাইছি। চাইছি, ওই প্রযুক্তিকে এমন ভাবে ব্যবহার করতে, যাতে টিকা দেওয়ার জন্য শিশুদের আর ক্লিনিকে নিয়ে যেতে না হয়। লালিপপ খেতে খুব ভালবাসে শিশুরা। সেই লালিপপের মধ্যেও ঢুকিয়ে দেওয়া যেতে পারে এই মিউকোজেট। যা শিশুরা গিলেও ফেলতে পারবে অনায়াসে। তাতেও তার কোনও ক্ষতি হবে না।