মঙ্গলবার | ৪ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল

টোটন-অনিক জোয়ার্দ্দারসহ ৬ জনের নামে মামলা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৩:০৫ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৩৪ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার ৯ বছর পর মামলা হয়েছে। ৯ বছর আগে ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট একদল দুর্বৃত্ত চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা কাউন্সিল পাড়ায় সাদিদের বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় ঘটনাটি স্থানীয় পত্রিকায় প্রধান শিরোনামসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রকাশিত হয়। তবে ওই ঘটনায় মামলা করতে দেয়া হয়নি সাদিদকে।

অবশেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি সেই মামলা করলেন। এই মামলায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদ (৪৫) চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা কাউন্সিল পাড়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা শুরু করার সময় থেকেই আওয়ামী লীগের ক্যাডারা চাঁদা দাবি করছিল। ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা শহরে ব্যবসা করতে হলে প্রতি বছরে এক লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে।

মামলার এজাহারে সাদিদ বলেন, ‘ওই দিন আমি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে হাত-পা ধরে মাফ চাই। ওই টাকায় আসামিরা সন্তুষ্ট না হয়ে আরও ৫০ হাজার টাকার দাবি করে আমার উপরে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানা কাউন্সিল পাড়ায় আমার বাড়িতে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের নির্দেশে অনিকের হাতে থাকা পিস্তল উচিয়ে গুলি করতে উদ্যত হয়। গালিব চাইনিজ হাতকুড়াল দিয়া আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার মাথা লক্ষ্য করে স্বজোরে কোপ মারে। গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৩০টি সেলাই লাগে। রেজু খুন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র চাপাতি দিয়ে আমার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে। আঘাতটি আমি ডান হাত দিয়া ঠেকালে ডান হাতে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হই। যাতে ২৫টি সেলাই দিতে হয়। উক্ত আঘাতে আমি মাটিতে পড়ে গেলে শুভ ও লিয়াকত তাদের কাছে থাকা চাইনিজ হাত কুড়াল দিয়ে আমার দুই পায়ে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৫০টির উপর সেলাই লাগে।’

মামলার আসামিরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের ভাই, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাবেক এমপির ভাস্তে ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক (৩৫), গুলশানপাড়ার মৃত সুন্নার ছেলে গালিব (৪০), মসজিদপাড়ার ইদু শেখের ছেলে রেজু, হাসপাতাল পাড়ার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শুভ (৩৫) ও ঈদগাহ পাড়ার দীন মোহাম্মদের ছেলে লিয়াকত (৪২)।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদ বলেন, ‘আমার আঘাত গুরুতর হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চিকিৎসা শেষে থানায় এজাহার দায়ের করতে গেলে ১ নম্বর আসামি রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন তৎকালীন পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার প্রভাবে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহার নিতে অস্বীকার করে এবং আমি সন্ত্রাসীদের হুমকিতে দীর্ঘদিন এজাহার দায়ের করতে পারিনি। বর্তমানে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করলাম।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নোবিপ্রবিতে ফসল উৎপাদন ও বৃদ্ধিতে জলবায়ুর প্রভাব শীর্ষক সেমিনার

টোটন-অনিক জোয়ার্দ্দারসহ ৬ জনের নামে মামলা

আপডেট সময় : ০৭:৩৩:০৫ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার ৯ বছর পর মামলা হয়েছে। ৯ বছর আগে ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট একদল দুর্বৃত্ত চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা কাউন্সিল পাড়ায় সাদিদের বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় ঘটনাটি স্থানীয় পত্রিকায় প্রধান শিরোনামসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রকাশিত হয়। তবে ওই ঘটনায় মামলা করতে দেয়া হয়নি সাদিদকে।

অবশেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি সেই মামলা করলেন। এই মামলায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদ (৪৫) চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা কাউন্সিল পাড়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা শুরু করার সময় থেকেই আওয়ামী লীগের ক্যাডারা চাঁদা দাবি করছিল। ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা শহরে ব্যবসা করতে হলে প্রতি বছরে এক লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে।

মামলার এজাহারে সাদিদ বলেন, ‘ওই দিন আমি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে হাত-পা ধরে মাফ চাই। ওই টাকায় আসামিরা সন্তুষ্ট না হয়ে আরও ৫০ হাজার টাকার দাবি করে আমার উপরে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানা কাউন্সিল পাড়ায় আমার বাড়িতে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের নির্দেশে অনিকের হাতে থাকা পিস্তল উচিয়ে গুলি করতে উদ্যত হয়। গালিব চাইনিজ হাতকুড়াল দিয়া আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার মাথা লক্ষ্য করে স্বজোরে কোপ মারে। গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৩০টি সেলাই লাগে। রেজু খুন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র চাপাতি দিয়ে আমার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে। আঘাতটি আমি ডান হাত দিয়া ঠেকালে ডান হাতে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হই। যাতে ২৫টি সেলাই দিতে হয়। উক্ত আঘাতে আমি মাটিতে পড়ে গেলে শুভ ও লিয়াকত তাদের কাছে থাকা চাইনিজ হাত কুড়াল দিয়ে আমার দুই পায়ে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৫০টির উপর সেলাই লাগে।’

মামলার আসামিরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের ভাই, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাবেক এমপির ভাস্তে ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক (৩৫), গুলশানপাড়ার মৃত সুন্নার ছেলে গালিব (৪০), মসজিদপাড়ার ইদু শেখের ছেলে রেজু, হাসপাতাল পাড়ার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শুভ (৩৫) ও ঈদগাহ পাড়ার দীন মোহাম্মদের ছেলে লিয়াকত (৪২)।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদ বলেন, ‘আমার আঘাত গুরুতর হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চিকিৎসা শেষে থানায় এজাহার দায়ের করতে গেলে ১ নম্বর আসামি রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন তৎকালীন পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার প্রভাবে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহার নিতে অস্বীকার করে এবং আমি সন্ত্রাসীদের হুমকিতে দীর্ঘদিন এজাহার দায়ের করতে পারিনি। বর্তমানে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করলাম।’