চুয়াডাঙ্গা:
গোপনে দেশত্যাগকারী আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দোসরদের বিচারের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার মুক্তমঞ্চে এ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনার সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যে ছাত্ররা গুলির মুখে দাঁড়িয়ে তাজা রক্ত দিয়ে এই দেশকে আবারও স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, আবু সাঈদ ও মুগ্ধসহ সকল ছাত্র ও আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। আজকে আমরা এমন একটি সময়ে ছিলাম, যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে শুধু দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ হয়েছে। দেশের মানুষ নির্যাতিত নিপীড়িত হয়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলাসহ প্রশাসনকে শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করেছে। তারা যা করেছে, আমরা তা করতে চাই না। আমরা তা করব না। আমরা চাই না এই সোনার দেশে কেউ মিথ্যা মামলায় জেলে যাক। আমরা চাই, যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে, তাহলে সেই মামলায় তাকে জেলে দেয়া হোক। আমরা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাবো, থানা থেকে ফাঁড়ি পর্যন্ত সবখানে মানুষ যেন তাদের প্রাপ্য সেবা পায়।
আমি বিএনপির নেতা-কর্মীদের বলতে চাই, একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে, আমরা কখনই তাদের অনুরূপ কোনো কাজ করতে চাই না। আপনারা সঠিক তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদেরকে বিভ্রান্ত করবেন না। তারা যেন প্রকৃতপক্ষে দেশের মানুষের সেবায় কাজ করতে পারে, সে জন্য তাদের সহযোগিতা করবেন। সাধারণ মানুষ যেন তাদের ন্যায্য অধিকার পায়, সেই পরিস্থিতি আমরা সৃষ্টি করতে চাই। যারা বিগত দিনে অন্যায় করেছে, আমরা তাদের অন্যায়ের উপযুক্ত বিচার চাই। আইন তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দিক। আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই। সেখানে দেশের প্রতিটি মানুষের বাক স্বাধীনতা থাকবে, ভোটের অধিকার থাকবে। আমরা চাই, দেশের সকল রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে যেন দেশের মানুষ নির্বিঘ্নে সেবা পায়, সেই অধিকার নিশ্চিত হোক।’
বিএনপি নেতা শরীফ বলেন, ‘আপনারা জানেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রীয় ছুটি বাতিল করেছে। আমি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ভাইদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা কোন সাহসে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনার নেত্রী একজন খুনি, যিনি দেশকে লুট করে পালিয়েছে। আমার নেত্রী কখনো লুটপাপ করেনি, চুরি করেনি, অন্যায়-অত্যাচার করেনি, তাকে দেশ ছেড়ে পালাতেও হয়নি। আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে তার বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়। বছরের পর বছর মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। দেশে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছিলো যেখানে শুধুমাত্র স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছরের অরাজকতার এই পরিস্থিতিতে ছাত্রসমাজ সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এর প্রতি তীব্র আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সেখানেও কী দেখলো? বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী-জনতাকে পুলিশ বাহিনীর ওপর চাপ প্রয়োগ করে হত্যা করেছে পলাতক খুনি হাসিনা। নির্বিচারে নারী-শিশুদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী ও বিডিআর ভাইদের হত্যা ছাড়াও ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে রাষ্ট্রের নাগরিক ও সমাজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীকেও ব্যবহার করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নাটের গুরু ছিলেন শেখ হাসিনাসহ তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী। সরকার নিজেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে নিরপরাধ অফিসার ও জোয়ানদের ফাঁসিয়ে শত শত বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার জোয়ানকে চাকরিচ্যুত করেছিল। আজ দেশ আবার স্বাধীন হয়েছে। যে স্বাধীনতা এই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকতে হরণ করেছিল। আমরা এই খুনি হাসিনাসহ তার দোসরদের উপযুক্ত শাস্তি ফাঁসি চাই।’ তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, স্বৈরাচার খুনি শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তার দোসররা এখনো এদেশে ঘাপটি মেরে আছে। তারা এদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাই আমাদের সবাইকে ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে রাজপথে থেকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টনের উপস্থাপনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি এম. জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নজু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিণ্টু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দ্দার, সাংগাঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ডাবু, জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম পিটু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝণ্টু, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব হাকিম মুন্সি, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিন, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মহাবুল হক মাহাবুব, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুক্ত ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন মালিক।
আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবী ফোরামের সদস্য অ্যাড. মানি খন্দকার, জেলা মহিলা দলের সহসভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর শেফালী খাতুন, সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম আর মুকুল, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মহাবুর রহমান, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল আলম সাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরীন পারভীন, আলমডাঙ্গা উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক উম্মে রিফাত সুলতানা, সদর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মতিউর রহমান মিশর, সদস্যসচিব ও পৌর কাউন্সিলর ইমরান মহলদার রিণ্টু, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বিপুল হাসান হ্যাজি, সদস্যসচিব আজিজুর রহমান আজিজুল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এম এম হাসান, আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম, আলমডাঙ্গা পৌর যুবদলের সদস্যসচিব সাইফুল আলম কনক, আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান শুভ, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মাহবুবুর রহমান মাহাবুব, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কৌশিক আহমেদ রানা, সদস্যসচিব মাজেদুল আলম মেহেদীসহ জেলা বিএনপি, জেলা যুবদল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল, জেলা ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। অবস্থান কর্মসূচির শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় ওলামা দলের সদস্য মাওলানা আনোয়ার হোসেন।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল চারটায় বেলগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার দাবি করা হয়। বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দেশ যখন ধ্বংসের শেষপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলো, যখন সাধারণ মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার হারিয়ে ছিলো, ঠিক সেই সময় দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে ছাত্ররা বুলেটের সামনে নিজেদের বুক পেতে দিতে ভয় পায়নি। তাদের তীব্র আন্দোলনে গুলি চালিয়ে শত শত ছাত্র, শিশুসহ সাধারণ মানুষের প্রাণ কেড়েছে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার। ছাত্ররা নিজের প্রাণের বিনিময়েও দেশের মানুষকে এই স্বৈরাচার হাসিনার কবল থেকে রক্ষা করতে পিছুপা হয়নি। তারা নিজের বুকের রক্তের বিনিময়ে এই দেশকে আরও একবার স্বাধীন করেছে। দেশ থেকে পালিয়েছে স্বৈরাচার হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই। এই ছাত্ররা নিজেদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের প্রতিবাদ করতে শিখিয়ে গিয়েছে। কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। আমারা তাদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। আগামী দিনে এই বাংলাদেশকে সুন্দর রূপে গড়ে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। আওয়ামী লীগ যা করেছে, আমরা তা করব না। আমাদের বিএনপির নেতৃবৃন্দ যদি আওয়ামী লীগ যা করেছে, সেটা করে, তাহলে আওয়ামী লীগকে জনগণ যে কারণে প্রত্যাখান করেছে, আমাদেরও তাই হবে। আমরা এই দেশকে ভালোবাসি, দেশের জনগণকে ভালোবাসি। সাধারণ মানুষের অধিকারের জন্যই বিএনপি চিরকাল মাঠে থেকেছে। আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁদের নীতি আদর্শ, তাঁদের পথচলা আমরা অনুসরণ করে চুয়াডাঙ্গা জেলায় শহীদ জিয়ার আদর্শকে বাস্তবায়ন করে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। যেখানে সবাই সমান অধিকার পাবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাই-বোনরা আমাদের মতোই নিরাপদ থাকবে।’ এসময় তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির দাবি জানান।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আক্তার হোসেন জোয়ার্দ্দার, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক নির্বাহী সদস্য এমদাদুল হক ডাবু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন ও আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন শুভ।
বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনের পরিচালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিউজ্জামান, বেলগাছী ইউনিয়ন বিএনপির নেতা সলোক মিয়া, সমি, তপু, বোরাহান, লিটন, তারিকুল, জাহাংঙ্গীর বজলুর রহমান, কিতাব উদ্দিন, বেলগাছী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি প্রান্ত, সাধারণ সম্পাদক নীরব, সহসভাপতি জীবন, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিম, সোহান, জিহাদ, মাহফুজ, রাসেল, জিল্লু জীম প্রমুখ।
দামুড়হুদা:
দামুড়হুদা থানা বিএনপির উদ্যোগে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে গণহত্যাকারী খুনি শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে দামুড়হুদা থানা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খুনি শেখ হাসিনা ছাত্র-ছাত্রী, শিশুসহ জনতার ওপর নির্বিঘ্নে গুলি চালিয়ে গণহত্যা করছে। তার অতিবিলম্বে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। খুনি হাসিনাসহ তার দোসরদের অর্ডারে এত মানুষকে খুন করা হয়েছে। তাড়াতাড়ি তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এই খুনি হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। তার নেতা-কর্মীরা এখন কোথায়। এ খুনি হাসিনার নির্দেশ আর যদি কোনো ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে রাজপথে জবাব দেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হয়ে না।
দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু। উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মণ্টু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক আবুল হাশেম, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান টুনু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালমা জাহান পারুল।
এছাড়াও উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব লিপু আহমেদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের, যুগ্ম আহ্বায়ক রকিবুল হাসান তোতা, সদস্যসচিব জাকির হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, সেলিম উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মাহফুজুর রহমান মিল্টন, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম, হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী, সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আক্তার, জুড়ানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ঈদ্রীস আলী, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, নাটুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি, নতিপোতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক সাঈদ বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দর্শনা:
সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে দর্শনায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। গতকাল বুধবার বিকেল চারটায় পৃথক আয়োজন দর্শনা থানা ও পৌর বিএনপি এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। থানা বিএনপির উদ্যোগে দর্শনা বাসস্ট্যান্ড গোল চত্বরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহমদ আলী, সহসভাপতি আক্তার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক খাইরুল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রশিদ হাবিবুল্লাহ, আজিবার রহমান, আশাবুল হক, রহিম মিলন, মিয়া টোটন মিয়া, ফরজ আলী, মহাব্বত আলী, শরিফুল ইসলাম, যুবদল নেতা মিলন মোল্লা, মহন মিয়া, লিংকন, সরোয়ার প্রমুখ।
এছাড়া দর্শনা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে পৃথকভাবে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দর্শনা থানা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল উদ্দিন লিটনের পরিচালনায় এতে অংশ নেন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নূর আলম সিদ্দিক মজনু ও মদনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শফিউল্লাহ। একই সময় দর্শনা পৌর বিএনপি উদ্যোগে দর্শনা রেল বাজার বটতলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। দর্শনা পৌর বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেটের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, দর্শনা পৌর সমন্বয়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুল আলম খোকন, শরিফ উদ্দিন, মমিনুল ইসলাম, লুৎফর রহমান, শফিউল আলম তোতা প্রমুখ।
জীবননগর:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যা করায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িত সকলের বিচারের দাবিতে জীবননগরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। জীবননগর উপজেলা বিএনপির আয়োজনে গতকাল বুধবার বিকেলে জীবননগর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ঘড়িতে বিকেল ৪টা বাজতেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে জনসমুদ্রে পরিণত হয় জীবননগর বাসস্ট্যান্ড চত্বর। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে দলে দলে আসতে থাকেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। অনতিবিলম্বে শেখ হাসিনাকে দেশে এনে শাস্তির দাবি জানান বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকোন। জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাফ হোসেন, পৌর সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির ইকবাল ঠান্ডু, জীবননগর কেডিকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনোয়ার মাস্টার, উথলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম রেজা, মনোহরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল সর্দার, সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল গনী ডাক্তার, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স্বপন, হাসাদাহ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিয়ার রহমান প্রমুখ। আগত বক্তারা গত ১৫ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনের নানা তথ্য তুলে ধরেন। আজ বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে সমাবেশ সমাপ্ত করেন।
মেহেরপুর:
ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যাকারী ‘খুনি হাসিনা’সহ তার দোসরদের বিচারের দাবিতে মেহেরপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার এই অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ। প্রধান বক্তা ছিলেন মেহেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন। আরও বক্তব্য দেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও আমঝুপি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম।
উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা যুবদলের সভাপতি জাহিদুল হক জাহিদ বিশ্বাস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আজমল হক মিণ্টু, মেহেরপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আকিব জাবেদ সেনজিনসহ বিএনপি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদ অরুন বলেন, অনেক হয়েছে আর আর না। শত শত ছাত্র-জনতা শিশু শহিদের রক্তের বিনিময়ে দ্বিতীয়বারের মতো অর্জিত স্বাধীনতা আর কলঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না। ওই রক্তপিপাসু খুনি হাসিনা ও তার দোসররা ১৫ আগস্ট নামক কাঙালি ভোজের নামে যে আয়োজন করতে চাচ্ছে, সেটা আর বাংলার মাটিতে কখনোই সম্ভব হবে না, সাধারণ ছাত্র-জনতা আর মেনে নেবে না। এরা চরমভাবে প্রতিহত করবে, ইতিমধ্যে সরকার ১৫ আগস্ট এর সাধারণ ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছে। আর কোনো সহিংসতা হতে দেওয়া যাবে না। খুব অচিরে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতা মিলে, এই দেশদ্রোহী খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে ইনশাল্লাহ।’
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা শান্ত থাকুন। কোনো বিশৃঙ্খলা নয়। আইনের আওতায় এনেই তাদের সাজা দেবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’