রবিবার | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo ক্যান্সারে মৃত্যু খুবি শিক্ষার্থীর: চিকিৎসার অবশিষ্ট অর্থে ‘রাকিব স্মৃতি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ট্রাস্ট’ গঠন Logo চাঁদপুরে প্রাইভেট হসপিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা Logo শ্রোতাদের ভালোবাসায় সিক্ত তরুণ গীতিকার রাসেল ইব্রাহীমের গান ‘আমার বন্ধুরা খুব দুষ্টু ছিল’ Logo বীরগঞ্জে এক ব্যক্তিকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা Logo মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ Logo মতলব দক্ষিণ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা Logo হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo মিয়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ও বার্মিজ লুঙ্গিসহ ২২ জন পাচারকারী আটক Logo কচুয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৫ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া

হিংসুকের হিংসাই নিজের ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০৬:২০:১৪ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২০
  • ৮২৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

অন্যের ভালো দেখে সহ্য করতে না পারা, অন্যের ভালো দেখে নিজের মধ্যে কষ্ট অনুভব করা, অন্যের ভালো বিষয়টি ধ্বংসের জন্য প্রচেষ্টা শুরু করে দেওয়াকে হিংসা বলে। ইবনে তাইমিয়া (রহ.) তাঁর ফতোয়ার মধ্যে উল্লেখ করেছেন : হিংসা হচ্ছে অন্তরের এমন এক কষ্ট বা ব্যথা যা বিত্তশালীদের স্বাচ্ছন্দ্য দেখার কারণে সৃষ্টি করে। কারও কারও মতে হিংসা হচ্ছে ‘অন্যের কাছ থেকে আল্লাহর নিয়ামত বিলুুপ্ত হওয়ার আকাক্সক্ষা পোষণ।’

হিংসার প্রকারভেদ : আল্লামা নববী (রহ.) মুসলিমের ব্যাখ্যা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, হিংসা দুই প্রকার। ১. প্রকৃত হিংসা। অর্থাৎ যার সঙ্গে হিংসা করা হচ্ছে তার থেকে নিয়ামতটি দূর হয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা। ২. রূপকার্থক হিংসা। এটি প্রকৃত হিংসা নয়। অর্থাৎ যে নিয়ামতটি অন্যের কাছে আছে তা নিজের প্রাপ্তির প্রত্যাশা করা, অন্যেরটি বলবৎ থাকা অবস্থায়। এ প্রকার হিংসার আরেক নাম হলো ‘গিবতা’। এ গিবতা ইসলামে জায়েজ বা বৈধ।

মানুষ কেন হিংসা করে? আল্লামা গাজ্জালি (রহ.) হিংসার সাতটি কারণ উল্লেখ করেছেন : ১. শত্রুতা ২. নিজের ওপর অন্য কেউ সম্মানিত হয়ে যাওয়া ৩. অহংকার ৪. অস্বাভাবিকভাবে কেউ এগিয়ে যাওয়া ৫. নিজের পদ বা মর্যাদা হারিয়ে যাওয়ার ভয় করা ৬. নেতৃত্ব ও সম্মানের লোভ ৭. নিচু বা খারাপ মানসিকতা। (ফিকহি বিশ্বকোষ, কুয়েত)।
হিংসুকের আলামত : ১. অন্যের ভালো অবস্থার কারণে তাকে শত্রু ভাবা ২. তার প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়া ৩. অন্যের কল্যাণের কারণে সব সময় অন্তরে এক ধরনের কষ্ট ও ব্যথা অনুুভব করা ৪. যার প্রতি হিংসা করে তার কাছ থেকে নিয়ামত চলে গেলে আনন্দিত হওয়া। যদিও এতে তার কোনো লাভ কিংবা ক্ষতি না থাকে ৫. সব সময় এ ব্যাপারে সতর্ক ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকে যেন কোনোভাবেই চলে যাওয়া সে নিয়ামত আর ফেরত না আসে

হিংসুককে চেনার জন্য লোকমান হাকিম (রহ.) স্বীয় পুত্রদের বলেন, হে আমার সন্তানেরা! হিংসুকের লক্ষণ তিনটি। ১. এরা পেছনে গিবত করে ২. সামনাসামনি তোষামোদ করে ৩. বিপদে পড়লে তিরস্কার করে। (আত তাওবিখ, শায়েখ ইসবাহানি)।

হিংসুকের পরিণতি : রসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাক। কেননা হিংসা ভালো অর্জনগুলো এমনভাবে নিঃশেষ করে দেয় যেভাবে আগুন কাঠ ধ্বংস করে দেয়। (ফয়জুল কাদির, আল্লামা মানায়ি।

ইসলামে হিংসা হারাম বা অবৈধ। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা পরস্পর হিংসা করবে না, শত্রুতা করবে না, অন্যের দোষ তালাশ করবে না এবং একজনের কেনাবেচা করার সময় অন্যজন দাম বাড়িয়ে দেবে না। বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে পরস্পর ভাই হয়ে যাও। (মুসলিম)। আল্লাহ হিংসুকের হিংসা থেকে মুক্ত থাকার জন্য কোরআনের মধ্যে দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন এভাবে, হে আল্লাহ! আমি পানা চাই হিংসুকের হিংসা থেকে যখন সে হিংসা করে। (সুরা ফালাক, আয়াত ৫)।

তবে হাদিসে রসুল (সা.) দুটি বিষয়ে হিংসা করাকে জায়েজ বলেছেন। ১. আল্লাহ কাউকে কোরআনের ইলম দান করেছেন, সে দিনরাত তা তিলাওয়াত ও এর ওপর আমল করে। ২. আল্লাহ কাউকে সম্পদ দান করেছেন, সে দিবানিশি সেখান থেকে আল্লাহর পথে দান করতে থাকে। (বুখারি)। অর্থাৎ এ পুণ্যময় কাজ দুটি অন্যের মধ্যে দেখলে নিজে করতে না পেরে নিজের মধ্যে আফসোস সৃষ্টি এবং নিজেও এ দুটি গুণ অর্জনের চেষ্টা করা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ক্যান্সারে মৃত্যু খুবি শিক্ষার্থীর: চিকিৎসার অবশিষ্ট অর্থে ‘রাকিব স্মৃতি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ট্রাস্ট’ গঠন

হিংসুকের হিংসাই নিজের ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট

আপডেট সময় : ০৬:২০:১৪ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২০

নিউজ ডেস্ক:

অন্যের ভালো দেখে সহ্য করতে না পারা, অন্যের ভালো দেখে নিজের মধ্যে কষ্ট অনুভব করা, অন্যের ভালো বিষয়টি ধ্বংসের জন্য প্রচেষ্টা শুরু করে দেওয়াকে হিংসা বলে। ইবনে তাইমিয়া (রহ.) তাঁর ফতোয়ার মধ্যে উল্লেখ করেছেন : হিংসা হচ্ছে অন্তরের এমন এক কষ্ট বা ব্যথা যা বিত্তশালীদের স্বাচ্ছন্দ্য দেখার কারণে সৃষ্টি করে। কারও কারও মতে হিংসা হচ্ছে ‘অন্যের কাছ থেকে আল্লাহর নিয়ামত বিলুুপ্ত হওয়ার আকাক্সক্ষা পোষণ।’

হিংসার প্রকারভেদ : আল্লামা নববী (রহ.) মুসলিমের ব্যাখ্যা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, হিংসা দুই প্রকার। ১. প্রকৃত হিংসা। অর্থাৎ যার সঙ্গে হিংসা করা হচ্ছে তার থেকে নিয়ামতটি দূর হয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা। ২. রূপকার্থক হিংসা। এটি প্রকৃত হিংসা নয়। অর্থাৎ যে নিয়ামতটি অন্যের কাছে আছে তা নিজের প্রাপ্তির প্রত্যাশা করা, অন্যেরটি বলবৎ থাকা অবস্থায়। এ প্রকার হিংসার আরেক নাম হলো ‘গিবতা’। এ গিবতা ইসলামে জায়েজ বা বৈধ।

মানুষ কেন হিংসা করে? আল্লামা গাজ্জালি (রহ.) হিংসার সাতটি কারণ উল্লেখ করেছেন : ১. শত্রুতা ২. নিজের ওপর অন্য কেউ সম্মানিত হয়ে যাওয়া ৩. অহংকার ৪. অস্বাভাবিকভাবে কেউ এগিয়ে যাওয়া ৫. নিজের পদ বা মর্যাদা হারিয়ে যাওয়ার ভয় করা ৬. নেতৃত্ব ও সম্মানের লোভ ৭. নিচু বা খারাপ মানসিকতা। (ফিকহি বিশ্বকোষ, কুয়েত)।
হিংসুকের আলামত : ১. অন্যের ভালো অবস্থার কারণে তাকে শত্রু ভাবা ২. তার প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়া ৩. অন্যের কল্যাণের কারণে সব সময় অন্তরে এক ধরনের কষ্ট ও ব্যথা অনুুভব করা ৪. যার প্রতি হিংসা করে তার কাছ থেকে নিয়ামত চলে গেলে আনন্দিত হওয়া। যদিও এতে তার কোনো লাভ কিংবা ক্ষতি না থাকে ৫. সব সময় এ ব্যাপারে সতর্ক ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকে যেন কোনোভাবেই চলে যাওয়া সে নিয়ামত আর ফেরত না আসে

হিংসুককে চেনার জন্য লোকমান হাকিম (রহ.) স্বীয় পুত্রদের বলেন, হে আমার সন্তানেরা! হিংসুকের লক্ষণ তিনটি। ১. এরা পেছনে গিবত করে ২. সামনাসামনি তোষামোদ করে ৩. বিপদে পড়লে তিরস্কার করে। (আত তাওবিখ, শায়েখ ইসবাহানি)।

হিংসুকের পরিণতি : রসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাক। কেননা হিংসা ভালো অর্জনগুলো এমনভাবে নিঃশেষ করে দেয় যেভাবে আগুন কাঠ ধ্বংস করে দেয়। (ফয়জুল কাদির, আল্লামা মানায়ি।

ইসলামে হিংসা হারাম বা অবৈধ। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা পরস্পর হিংসা করবে না, শত্রুতা করবে না, অন্যের দোষ তালাশ করবে না এবং একজনের কেনাবেচা করার সময় অন্যজন দাম বাড়িয়ে দেবে না। বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে পরস্পর ভাই হয়ে যাও। (মুসলিম)। আল্লাহ হিংসুকের হিংসা থেকে মুক্ত থাকার জন্য কোরআনের মধ্যে দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন এভাবে, হে আল্লাহ! আমি পানা চাই হিংসুকের হিংসা থেকে যখন সে হিংসা করে। (সুরা ফালাক, আয়াত ৫)।

তবে হাদিসে রসুল (সা.) দুটি বিষয়ে হিংসা করাকে জায়েজ বলেছেন। ১. আল্লাহ কাউকে কোরআনের ইলম দান করেছেন, সে দিনরাত তা তিলাওয়াত ও এর ওপর আমল করে। ২. আল্লাহ কাউকে সম্পদ দান করেছেন, সে দিবানিশি সেখান থেকে আল্লাহর পথে দান করতে থাকে। (বুখারি)। অর্থাৎ এ পুণ্যময় কাজ দুটি অন্যের মধ্যে দেখলে নিজে করতে না পেরে নিজের মধ্যে আফসোস সৃষ্টি এবং নিজেও এ দুটি গুণ অর্জনের চেষ্টা করা।